শাহরিয়ার নাজিম জয় সম্প্রতি তার মা’য়ের একটা সাক্ষাৎকার প্রচার করেছেন। মানুষের রুচি, ভাইরাল ইত্যাদি নিয়ে কথা বলতে গেলে এক পর্যায়ে উদাহরণ দিয়ে জয়ের মা জয়কে বলেন, এই যেমন তুমি যখন বই লেখ, সেখানে তেমন কেউ লাইক দেয় না কিন্তু তোমার চটুল ভিডিও, সাক্ষাৎকার এসবে মানুষের প্রবল আগ্রহ।
আজকাল দেখি অনেকেই নিজের প্রোফাইলে এমনভাবে পোষ্ট করছেন যাতে কে কয়টা লাইক দিল তা সরাসরি না দেখা যায়। অনেকেই ভাবছেন, লাইক কমেন্টের সংখ্যা কম হলে মান ইজ্জত চলে যাবে। এটা যে শুধু নেতা ফেতারা করছেন তা নয়। সাধারণ মানুষরাও করছেন। অর্থাৎ সকলেই নিজেকে তথাকথিত জনপ্রিয় দেখতে চান। হোক সেটা ভাল কাজ করে, ভাল কথা বলে অথবা জঘন্য কাজকাম করে হলেও, নিকৃষ্ট কথাবার্তা বলে হলেও জনপ্রিয়তা চাইই চাই। অর্থাৎ হাজার হাজার লাইক কমেন্ট চাই। এর অন্যতম মুল কারণ হলো ফেসবুক এবং ইউটিউব এসব লাইক কমেন্ট, শেয়ারের সংখ্যার ভিত্তিতে ডলার দেয়। এই ডলারের লোভে এরা এসব করছে। আরো অসংখ্য কারণ রয়েছে।
ফলে সমাজটা নষ্ট করার পেছনে ফেসবুক ও ইউটিউবের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। তবে মুল অবদান রাজনীতির।
এতসব কাহিনীর মধ্যেও অনেকে গা বাঁচিয়ে চলেন। কে লাইক দিল বা না দিল এসবের পাত্তা দেন না। ফেসবুকের উস্কানি সত্তেও প্রফেশনাল মোড অন করেন না। ফালতু কন্টেন্ট ইউটিউবে লোড করেন না। ভুঁয়া এনজিও খুলে সরকারের অনুদানের জন্যে দরখাস্ত করেন না। তাদের কাজ তারা করে যান। তাদেরকে স্যালুট। তারা সমাজটাকে সোজা করে রাখার চেষ্টা করেন, নিরাপদ রাখেন আর আমি আপনি সেই নিরাপদ সমাজের ছাঁয়াতলে আরামে অন্যায় অপরাধ করে চলি। আসুন আরো একটু চিন্তা করি, যে সমাজটাকে আমরা নষ্ট করি সেই নষ্টের ফল কিন্তু আমরা কেউই পছন্দ করি না। কাজেই যারা কষ্ট করে ভাল কাজ করেন, ভাল কথা বলেন, তাদেরকে অন্ততঃ এপ্রিসিয়েট যেন করি, কৃতজ্ঞতা বোধটুকু আমাদের যেন হারিয়ে না যায়।