2.4 C
Toronto
শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

মশলা-দুধ চা রেসিপি

মশলা-দুধ চা রেসিপি
ফাইল ছবি

ইফতারের পর একটু রেস্ট নিয়ে, আয়েশ করে যখন গরম ধোঁয়া ওঠা, সিলেটের দুটি-কচি পাতার চায়ের সুবাস নাসিকারন্ধ্রে খেলতে খেলতে পাক খেয়ে প্রবেশ করে.. থাক ভাই, অনেকেই রোজা আছেন; বেশি কিছু আর না বলি। তবে এই একটা জিনিস, যেটা সারাজীবন বানিয়েও কেউ তৃপ্ত হয় না; মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শিখতে থাকে ভাত রান্নার মতো। যা-ই হোক, খাজুরে আলাপ বাদ দিয়ে সরাসরি চলে যাই রেসিপিতে। অনেক রেসিপিই ভাবছিলাম দিবো, কিন্তু রোজা-রমজানের মাস। তাই আশা করি চায়ের ছবি দিলে স্মার্ট পাঠকদের রোজা নষ্ট হবে না।

উপকরণ:[দুইজনের]
১. গুঁড়ো চা দেড়/দুই চা চামচ
২. দুধ ১ কাপ
৩. পানি ১ কাপ
৪. চিনি ২ চা চামচ
৫. আদা টুকরা ১ ইঞ্চি, কুচি করে নেয়া
৬. তেজপাতা ছোট্ট এক টুকরো
৭. এলাচ ২ টা।

- Advertisement -

প্রণালী
সংক্ষেপে চায়ের পদ্ধতি বলার আগে অনুমতি নিয়ে প্রকারভেদ একটু দেই?
ক: রং চা। স্বাস্থ্যকর। উপভাগ আছে- লেবু চা, আদা চা, মাল্টা চা ইত্যাদি।
খ: দুধ চা। এরও প্রকারভেদ আছে- মালাই চা, সরের চা, মটকা চা ইত্যাদি।
গ: গ্রিন চা। সবচাইতে স্বাস্থ্যকর।

ভাই-ভাবীগণ, একটা কথা না বললেই নয়। চা বানাবেন সিরিয়াস হয়ে। দয়া করে টিভিতে সিরিয়াল দেখতে বসে এ মহৎ কাজে হাত দেবেন না। চা পবিত্র জিনিস। পানি বেশি শুকিয়ে গেলে হাজার দুধ-পানি দিয়ে গ্যাটিস মেরেও আর লাভ হয় না। তাই টিভি আর মোবাইল বন্ধ করে নেবেন। আর দাওয়াতে গিয়ে গলা পর্যন্ত অজগরের মতো খেয়ে, সোফায় ভুঁড়ি এলিয়ে উল্লুকের মতো ভাবির কাছে চা চাইবেন না। ভাবিরা সারাদিন রান্না করে খুব টায়ার্ড থাকে।

আচ্ছা, একটা কথা; ছাপড়া দোকানে ক্যামনে যে সরাসরি গরম পানি চায়ের গুঁড়ার ওপর, লম্বা কাপড়ের ছাঁকনিতে ঢেলে পারফেক্ট লিকার আনে! এরা হলো আসল জিনিয়াস!

যাই হোক, প্রসঙ্গে আসি। কারণ অনেকেই ব্যস্ত। তাছাড়া ইফতারির পর মানুষের ধৈর্য্য অনেক কমে আসে।
প্রথমে এলুমিনিয়াম হাঁড়িতে এক কাপ পানি, এক কাপ দুধ নিন। মিডিয়াম হিটে হাল্কা ফুটে উঠলেই ছেঁচা এলাচ, আদা আর তেজপাতা ছেড়ে দিয়ে তিন মিনিট গরম করুন। পানি টগবগ করে ফুটানোর দরকার নাই। এবার দেড় থেকে দুই চা চামচ চা ছেড়ে দিয়ে ঢেকে দিন। তিন মিনিট পর দুই চামচ চিনি মিশিয়ে নামিয়ে ছেঁকে ফেলে পরিবেশন করুন সুস্বাদু দুধ-মশলা চা।

বিঃ দ্রঃ দুধ যত ননীযুক্ত, ততো ভালো চা পাবেন।

FAQ: Frequently Asked Questions
প্রশ্ন-১: জানেন ভাইয়া, আমি না, জীবনেও চা বানিয়ে খাইনি। আপনাকে অনেক কিউট-কিউট, এত্ত-এত্ত থ্যাংকস দিলাম..
উত্তর: You are welcome সুইটি!
প্রশ্ন-২: ভাই, চায়ে আর কী কী মশলা দেওয়া যায়?
উত্তর: হলুদ গুঁড়া বাদে লবঙ্গ, আস্ত জিরা, গোলমরিচ, রাঁধুনী সবকিছু দেওয়া যায়।
প্রশ্ন-৩: আংকেল, আমি একা মানুষ, তাই টি ব্যাগ কিনি। টি ব্যাগ দিয়ে হবে?
উত্তর: হবে, দুইটা টি ব্যাগ দিবি এক কাপ চায়ে।
প্রশ্ন-৪: ভাই কোন চা ভালো?
উত্তর: যেকোনো ভালো কোম্পানির চা-ই ভালো।
প্রশ্ন-৫: দুলাভাই, Orange Pokoe আর Yellow Lebel চা আসলে কী?
উত্তর: তেমন পার্থক্য নাই। অরেঞ্জ পকি হলো খুব ভালো কুয়ালিটির চা, গাছের একদম কচি পাতা থেকে বানানো হয়, দারুন ফ্লেভার পাওয়া যায়, স্বাদে তিতা হয় না। আর ইয়েলো লেবেল চা-ও খুব ভালো কুয়ালিটির, তবে তাতে পলিফেনল নামক এক ধরণের অর্গানিক কম্পাউন্ড বেশি থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ করে হজমের জন্য ভালো।
প্রশ্ন-৬: ভাই, আমি চা খাই না, শুধু কফি খাই
উত্তর: তুই যা খুশি খা, তাতে আমার কী?
প্রশ্ন-৭: চায়ের বিশেষ গুণ কী গো ভাইস্তে?
উত্তর: ও চাচা, চায়ে এন্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। চা খাইলে ইমিউন সিস্টেম ভালো থাকে, ক্ষত শুকায় তাড়াতাড়ি, হার্ট ভালো থাকে, মেজাজ হয় ফুরফুরে। চাচির সাথে ঝগড়া হলে এক কাপ চা বানায়ে হাতে দিয়ে দেইখেন, রাগ কর্পূরের মতো উড়ে যাবে..
প্রশ্ন-৮: ভাই, আর কীভাবে চা বানানো যায়?
উত্তর: অনেকভাবেই যায়, পরের পোস্টগুলা দেখবেন।
প্রশ্ন-৯: ভাইয়া, দিনে কয় কাপ করে চা খাওয়া ভালো?
উত্তর:৪-৫ কাপ খাওয়া যায়। তবে খুব বেশি খাবা না, হজমে গন্ডগোল, খুদা মন্দ হতে পারে।
প্রশ্ন- ১০: দোস্ত তোর মনে আছে, সেই যে সন্ধ্যাবেলায় আমরা বন্ধুরা চার রাস্তার মোড়ে হারেজ আলীর দুধ চা খাইতাম? কেমন ফ্লেভার ছিল?
উত্তর: উফফ.. আর বলিস না রে..
প্রশ্ন-১১: মামা, চা খাওয়ার উত্তম সময় কখন?
উত্তর : সকাল এগারোটায় আর আড্ডায়। বাঙালিদের আড্ডায় চা ছাড়া অচল। আর রেইল স্টেশন, ফেরি, বাজারে, পথে-ঘাটে, মেলায়; সব জায়গায় খাওয়া যায়।
প্রশ্ন-১২: চাচ্চু, চা খেলে নাকি গায়ের রঙ কালো হয়?
উত্তর : ধুর.. এইসব আজেবাজে কথা কোথায় পাইছিস?
প্রশ্ন -১৩: কীসের সাথে চা খাওয়া উত্তম?
উত্তর : গরম সিংগাড়ার সাথে বেস্ট। তবে টোস্ট চুবিয়ে, বন পাউরুটি বা রুটি/পরোটা দিয়েও ভাল্লাগে। আর সবচাইতে বেস্ট হলো.. থাক ভাই.. রোজা রমজানের দিন।.. আচ্ছা না হয় বলেই ফেলি.. পরে মন খচ খচ করবে। কিন্তু কেউ যদি নাখোশ হয়? মেনে নিবে না যে? বেস্ট হলো.. থাক ভাই, রিস্ক নিয়ে লাভ নাই। নাকি বলব? না বললে আবার পরে মন খারাপ লাগবে।
তারচেয়ে না হয় বাদ দি.. সবাই তো একভাবে সবকিছু মেনে নেয় না।
অবশ্য বলে ফেললেই মিটে যেত..

অটোয়া, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles