9.4 C
Toronto
শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

যে বাঁশিতে বাতাস কাঁদে

যে বাঁশিতে বাতাস কাঁদে
ফাইল ছবি

পিকারিং শহরে ব্লু স্কাই সুপারশপে মাসে দু-তিনবার বাজার করতে যাই। টরন্টো শহর থেকে প্রায় পঁচিশ কিলোমিটার দূরে। মার্কেটটা চাইনিজদের হলেও বিশাল মাংসের সেকশনটা চালায় আফগানরা। খুব চালু কাউন্টার। এখানে আসলে নিজের বাজারের সাথে আমার ইউনিভার্সিটির বান্ধবী নাজমা’র হাজবেন্ড নজরুল ভাইকেও সাথে নিয়ে আসি। নাজমার ছোট্ট ক্যাটারিং বিজনেস আছে, তাই প্রচুর বাজার করা লাগে। নজরুল গাট্টি ধরে বাজার করে নিয়ে যায়।

তারা মাস ছয়েক হলো বাংলাদেশ থেকে ইমিগ্রান্ট হয়ে টরন্টোতে এসেই পড়েছে বিপদে। নাজমার বাবার হঠাৎ লাঙ ক্যান্সার ধরা পড়ে। শেষ স্টেজ; ডাক্তার বলেই দিয়েছে আর ছয় থেকে আট মাস হয়তো বাঁচবেন। উনি এমনিতেই বার্ধক্যজনিত কারণে বিছানাগত, তাই কিমোথেরাপি সহ্য করবার মতো অবস্থায় নাই। তবুও পানির মতো টাকা বের হয়ে যাচ্ছে। নাজমা ক্যাটারিং থেকে যেটুকু আয় করে, তার পুরোটাই দেশে পাঠিয়ে দেয়। আর নজরুলকে এখনও সামলাতে হয় বিরাট একান্নবর্তী পরিবার। মাথার ওপর বিশাল দায়িত্বের বোঝা।

- Advertisement -

এখানে আসার প্রধান কারণ মাংস বেশ সস্তা। ওরা টাউন সার্ভিসে চলাচল করে, এতদূর বাজার করতে আসা তাদের পোষায় না। আজ নজরুল ভাইয়ের অনেক কাজ, বাসায় ফিরতে দুপুর হবে। তারা দুজন খুব আত্মসম্মানধারী। আমাকে যদি বলে ‘ব্লু স্কাই’ দোকান থেকে এক ডলারের ধনিয়া পাতা নিয়ে আসতে, তখন ওই ডলারটা আমাকে নিতেই হয়। আমার বাসা থেকে আধা কিলোমিটারের মধ্যেই থাকে তারা। যদি তাদের কাছ থেকে এসব টুকটাক ডলার না নেই, তাহলে আমাকে কোনদিন আর কিছু আনতে বলবে না। আমিও মেনে নিয়েছি, কারণ তাদের অবস্থা চিরকাল একরকম থাকবে না। তারা এক বছরের মাথায় গাড়িও কিনে ফেলবে। নজরুল ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমা করছে। তার ভবিষ্যৎ যে খুব ভালো তা চোখ বুজে বলে দেয়া যায়।

এরা দুজনই ছোটকাল থেকে অনেক কষ্টে মানুষ হয়েছে।

শুনেছি এমনও সময় গেছে পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন ফি পর্যন্ত ছিল না। প্রতিটা টাকার মূল্য তারা বুঝে। তাদের জীবন সংগ্রামের কথা শুনে শিহরিত হই। এজন্যই তাদের খুব পছন্দ আর রেস্পেক্ট করি। ক্লাস এইট থেকে নজরুল টিউশনি করে। তারা এখানকার স্থানীয়দের থেকে কিছুটা দূরে থাকে। আমিও প্রথম টরন্টো এসে দেখেছি বহু বছর এদেশে থেকেও অনেকে সঠিক ধারণা পোষণ করে না। তারা বলে এদেশে নাকি বড়লোকরাই শুধু আসে। কথাটা একশো পার্সেন্ট ভুল। পয়সাওয়ালারাও আসে, তবে তাদের সংখ্যা দশ পার্সেন্টের বেশি না। বেশিরভাগ আসে আমার মতো ভাগ্যান্বেষী সৈনিক; ভাগ্য ফেরাতে। বাপের হোটেলে মানুষ হওয়া পাবলিকের সাথে আমিও মিশতে পারি না; তারাও অভাবগ্রস্ত বা দরিদ্র মানুষের সেন্টিমেন্ট বুঝতে পারে না, অবিবেচকের মতো আচরণ করে ফেলে। এমন কি যদি কখনো অভাবে পড়ে, তখনও যেভাবেই হোক টাকা জোগাড় করবে; ধার করে হলেও ঘি খাবে।

নাজমা আর নজরুল সম্পূর্ণ আলাদা, বাস্তববাদী।

আজ এ সুপারশপে ভালো ডিল যাচ্ছে। তিন টাকা করে গরুর গোশতের পাউন্ড। টরন্টোতে আর কোথাও এতো সস্তায় মাংস পাওয়া যায় না। ছোটোখাটো দোকানগুলোতে পাঁচ টাকার কমে নাই, তার উপর সিক্সটি পার্সেন্ট হাড় দিবে। আর এখানে হাড়ের পরিমান বিশ পার্সেন্টের বেশি না। মুরগির রান নাইন্টি নাইন সেন্টস করে আজ। তবে দুই টাকা পাউন্ডের কিমা থাকলেও আমি আরেকটু ভালোটা; চার টাকারটা নিলাম। যা টরন্টোতে কল্পনাও করা যায় না। হাজার হলেও আজ মিলিওনার মেহমান আসবে। এখানে পনেরো দিনের বাজার একবারে করলে আমার নিজের অন্ততঃ পঞ্চাশ ডলার সেইভ হয়। আর নাজমার ক্যাটারিং বিজনেসে প্রতি বাজারে অন্ততঃ দেড়শো ডলার সেইভ হয়। সে শুধু বাবার চিকিৎসার খরচ চালাতেই ক্যাটারিং বিজনেসটা শুরু করেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।

নাজমার হাতে বিশ ডলার জমলেও সেটা পাঠিয়ে দেয় বাংলাদেশে। তার বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়েই তারা টরন্টো এসেছে। নজরুলকে তার বাবা নিজের ছেলের মতো ভালোবাসে। এখানে থাকে বেইজমেন্টের ছোট্ট এক রুমের বাসায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র দ্বিধা নাই। একদিন এক পরিচিত মানুষ বলেই ফেলল, “ভাই আপনারা বাচ্চা নিয়ে বেইজমেন্ট থাকেন কেন?”। পরে আমি সেই ভদ্রলোককে ভদ্রভাবে বলেছিলাম, ভাই আপনি উনাদের জীবনসংগ্রাম সম্পর্কে কতটুকু জানেন? আমিও প্রথমে কানাডায় এসে বেশ কয়েকবছর এর চাইতেও ছোট বেইজমেন্ট থেকেছি। এখনো থাকতে কোনো দ্বিধা করবো না।

কিছু মানুষ খুব অবিবেচক, তারা সবকিছু নিজেদের দিয়ে বিচার করে।

যাই হোক, আজ নাজমার ছেলের জন্মদিন, পাঁচ বছরে পড়বে। মেয়েটার বয়স আট। দুপুরে নাজমা দাওয়াত করেছে তার এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়কে। আমি দুপুর বারোটার মধ্যে বাজার করে তাদের বাসায় দিয়ে আসি। তাদের বিশাল বাজারের বিল এসেছে তিনশো বিরানব্বই ডলার পঁচাত্তর সেন্টস। ক্যাটারিং এর জন্য বিশাল দুটা ডিপ ফ্রিজ আছে তাদের। নজরুল রিসিপ্টটা নিয়ে আমার হাতে টাকা দিয়ে বলল, পঁচিশ সেন্টস বেশি আছে; সরি খুচরা নাই। আমি হেসে বললাম, নেক্সক্ট টাইম পঁচিশ সেন্টস কম দিয়েন।

আমি খুব এলার্ট, “লাগবে না, দিতে হবে না” এসব কথা যদি ভুলেও উচ্চারণ করি, সে আর জীবনেও আমাকে বাজার আনতে বলবে না। আজকের এ সামান্য রসিকতা নিয়েও চিন্তায় পড়ে গেলাম। অভাবগ্রস্ত মানুষেরা খুব সেনসেটিভ হয়।

সে কাজ থেকে এসে খুব ক্লান্ত। এ অবস্থায় দুজন রান্না আরম্ভ করে দিয়েছে। মাংস সাফ করে, কেটে ধুয়ে প্যাকেট করে সেগুলোর উপর পার্মানেন্ট মার্কার দিয়ে নাম লিখে রাখলো। আর আজকেরগুলো বাইরে রাখা। কিমা দিয়ে কাবাব, খাসির রেজালা আর গরু ভুনা। পোলাওয়ের চাল দিয়ে মুগডালের খিচুড়ি।

হঠাৎ তাদের ছেলেটা পড়ে গিয়ে দাঁত ভেঙে ফেলল। ব্লিডিং ভালোই হচ্ছিল। আমরা ছুটলাম হসপিটালে। ইমার্জেন্সিতে প্রায় তিন ঘন্টা বসে থাকার পর ডাক্তার দুটা সেলাই, ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দিলো। সিরিয়াস কিছু না। তখন মুখ ফুলে ঢোল হয়ে গেলেও এখন অনেকটা নরমাল। বাগানে দিব্যি দৌড়াদৌড়ি করে বেড়াতে লাগলো। নব্বই ডলারের এন্টিবায়োটিক কিনতে হলো ওভার দ্যা কাউন্টার থেকে। সাথে টাইলেনল ব্যাথার ওষুধ।
যে ফোনে মেহমান নার্গিস ভাবীর নাম্বার ছিল, সেটা আমরা তাড়াহুড়া করে হসপিটালে যাবার সময় বাসায় ফেলে গিয়েছিলাম। এখন বাজে সোয়া তিনটা। দাওয়াত বাতিল করতে নার্গিস ভাবীর নাম্বার খুঁজতেই উনার গাড়ি এসে বাসার সামনে দাঁড়ালো। এদিকে রান্না একদম স্টপ হয়ে আছে। কারোর মুড নেই। নার্গিস ভাবি এসে পরিস্থিতি দেখে বলল, একদম চিন্তা করবেন না। একসিডেন্ট হতেই পারে। আল্লাহ যে ছেলেটাকে সুস্থ করে দিয়েছে এতেই আমরা খুশি। উনার আনা এক গাদা চকলেট পেয়ে বাচ্চারা খুব খুশি।
.
ভাবীর ছেলেটা খিদের জ্বালায় বলল, আম্মু আমি হাঙরি। নার্গিস ভাবি বলল, ভাবি কিছু যদি মনে না করেন, আমরা আজ উঠবো
– যা আছে খেয়ে যাবেন, হোক বাসি তরকারি
– না ভাবি, বাইরে খেয়ে নেবো। এ নিয়ে একদম ভাববেন না। ছেলেটার দিকে নজর দিন
– ও ভালো আছে। তাহলে চলেন আজকে আমরা সবাই বাইরেই খাই?

নাজমার প্রস্তাবে নার্গিস ভাবি দ্বিমত করেন নাই। করার কথাও না। একটা সহজ সমাধান।
নাজমা আমাকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে বলল, হাক্কা চাইনিজ খেতে কেমন খরচ লাগবে নয় জনের?
আমি হিসাব করে বললাম, নরমাল খাবারে মোটামুটি শ’দুয়েক ডলার তো লাগবেই। আর কিছুটা ভালো খেতে হলে তিনশো ডলার অন্ততঃ। নাজমা কি মনে করে বলল, চল যাই।

আমি তাদের নিয়ে হাক্কা চাইনিজে গেলাম। নজরুল আমাকে অনুরোধ করলো অর্ডারটা যেন আমিই দেই, তাদের অভিজ্ঞতা নাই। আমি মেন্যু বই হাতে করে তাদের আর্থিক অবস্থার কথা চিন্তা করে লাঞ্চের প্ল্যান করে ফেললাম। ওদিকে ভাবীর বড় মেয়েটা বলে উঠলো, আমি লবস্টার! ছোটটাও তাল মিলিয়ে বলে উঠলো আমিও!
একটা লবস্টার ষাট ডলার।

নার্গিস ভাবির চিংড়িতে এলার্জি। উনি চাইলেন ল্যাম্ব রিব আর নান। পাক্কা পঁয়ত্রিশ ডলার পার প্লেট। সাথে স্যুপ, ওআন্তন, চিংড়ী বল, রাইস তো আছেই। আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। এ গুরু দায়িত্ব কেন যে আমার উপর পড়লো। কোনমতই আর চারশো ডলারের কমে মেন্যু সেট করতে পারলাম না। যেখানে বাজেট বলেছিলাম দুশো। তার ওপর ডেজার্ট এখনো অর্ডার করি নাই। নাজমা বলল, রিপন আমি কিন্তু চিকেন বিরিয়ানি! তার সাথে তাল মিলিয়ে আমি আর নজরুলও চিকেন বিরিয়ানির দিকে হাত বাড়ালাম। এর চাইতে সস্তা আর কিছু পেলাম না মেন্যুতে।
ওদিকে হঠাৎ বাংলাদেশ থেকে টেক্সট মেসেজ আসলো আমার ফোনে- “নাজমার বাবাকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে”।
আমাদের আড্ডা জমে উঠলো।

খাবার আসতে কমপক্ষে বিশ মিনিট দেরি আছে। নার্গিস ভাবি বললেন- আপা, আমার ছোট দেবর আসতেছে আমেরিকা থেকে; বিকাল তিনটায় ল্যান্ড করেছে। সাড়ে চারটার দিকে বাসায় ঢুকবে। আমরা একটু আগে আগে উঠবো।
নাজমা বলল, তাহলে সরাসরি এখানেই আসতে বলেন; আধা ঘন্টাও লাগবে না। নার্গিস ভাবি উনার দেবরকে এখানে আসতে বলে ফোন নামিয়ে রেখে বলল, আপনার ওপর প্রেশার বেড়ে গেলো।
উনার দেবর তার নতুন বৌ নিয়ে আসছে। সদ্য বিবাহিত।

খাবার সার্ভে করে দিয়েছে। সবাই বেশ আনন্দে গল্প করছে, খাবার উপভোগ করছে। পনেরো মিনিট পর আবার মেসেজ- নাজমার বাবা এইমাত্র মারা গেছেন! হায় আল্লাহ! আমি তাদের বুঝতে না দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হবার অপেক্ষায় থাকি। এর মধ্যে মৃত্যুর খবর দেবার প্রশ্নই আসে না। আমি দ্রুত খাওয়া শেষ করে পাশের ব্যাংকে যাবার নাম করে বাইরে বের হয়ে আসি।

রেস্টুরেন্টের পেছনে গার্বেজ বিনের আড়ালে দাঁড়িয়ে ট্রাভেল এজেন্সিতে ফোন লাগালাম। আজ বা কাল; বাংলাদেশের কোনো ফ্লাইটে টিকেট নাই। অনেক খুঁজে আগামী পরশুদিনের ফ্লাইটে বুকিং দিয়ে ফেললাম ওদের চারজনের। পিক সিজনে প্লেনের ভাড়া আকাশচুম্বী। ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করে দিলাম। বুকিং ওপেন রাখলাম আজ রাত পর্যন্ত, পরিচিত এজেন্ট বলে অনুরোধ রাখলো। দুই বাচ্চা অনেক ছোট বিধায় সাত হাজার ডলারে হয়ে গেলো। বিরাট এমাউন্ট হলেও এদের তো আর এখন মাসে মাসে বাবার জন্য টাকা পাঠাতে হবে না..
মা বাবা মারা গেলে দূরে থাকা সন্তানরা জানে সবার পরে। আগে জানানো হয় বন্ধু বা আত্মীয়দের, তাদের মধ্যে থেকে একজনের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয় খবরটা সন্তানের কাছে পৌঁছানোর জন্য। একদম সহজ হতে পারছি না। মনে হচ্ছে এ গার্বেজ বিনের আড়ালেই বাকি দিনটা কাটিয়ে দেই। কেউ যেন খুঁজে না পায়। পাশের লাইলাক ফুলের ঝোপ থেকে অপূর্ব সুবাস এসে মগজে বিঁধছে। মনে হচ্ছে যেন মরা বাড়িতে আগরবাতি জ্বালানো হয়েছে।

আমি ওয়াশরুমে ঢুকে চোখে-মুখে পানি দিয়ে যতটা সম্ভব সহজ থাকার চেষ্টা করি। বিল আসলো ছয়শত সাতাশ ডলার। বাচ্চারা ইচ্ছেমতো ডেজার্ট নিয়েছিল। নজরুলের ডেবিট কার্ডের ওভার ড্রাফটের লিমিটও ক্রস করে গেছে। আমি পে করে দিলাম। জানি, নজরুল ভাই যেভাবেই হোক কালকের মধ্যে টাকা জোগাড় করে আমাকে ই-ট্রান্সফার করে দেবে।
কিন্তু নাজমা নিশ্চয়ই ভাবছে, এই ছয়শো ডলার তার বাবার চিকিৎসার জন্য কত মূল্যবান!
সমস্যা চিরকাল থাকে না।

আমি তাদের বাসায় পৌঁছে দিয়ে ভেতরে গিয়ে বসি।

চোখের সামনে মেট্রো নিউজপেপারটা মেলে ধরে পড়ার ভাণ করতে থাকি। নাজমা চা বানাচ্ছে। আর নজরুল আরেকটা পার্ট টাইম যবে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যা বলার এখনই বলতে হবে। আমি সাহস সঞ্চয় তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে বসে নজরুলকে ডাক দিয়ে পেসেঞ্জার সিটে বসিয়ে তার দিকে কিছুক্ষন চেয়ে থেকে বললাম, একটা দুঃসংবাদ ছিল।

নজরুল আমার দিকে চেয়ে থেকে বলল, আব্বা মারা গেছেন?
– হু
– কখন?
– একটু আগে। আপনাদের প্লেনের টিকিট হয়ে গেছে, যদি দেশে যেতে চান পরশু ফ্লাইট। টিকেট আপনার ইমেইলে পাঠিয়ে দিয়েছি। না যেতে পারলে আজকে রাত দশটার মধ্যে জানাবেন প্লিজ।

নজরুল কিছু না বলে গাড়ি থেকে নেমে বাসার দিকে হাঁটা দিলো। আমি বসে থাকি।
বাসার দিকে রওনা দেই। তীব্র খারাপ সংবাদ শোনার পর মানুষ যা করে, সে মুহূর্ত আমি সহ্য করতে পারি না। পালিয়ে বেড়াই। আমাদের মতো ইমিগ্র্যান্টদের এই এক কষ্ট। বারো হাজার কিলোমিটার দূরে সবাইকে কোনো না কোনো আশংকা মাথায় নিয়ে দিনযাপন করতে হয়।
এই বুঝি কোনো দুঃসংবাদ..

অটোয়া, কানাডা

- Advertisement -
পূর্ববর্তী খবর
পরবর্তী খবর

Related Articles

Latest Articles