5.8 C
Toronto
শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪

এরিন ওটুল তছনছ করে দিতে পারেন ট্রুডোর শিবির

এরিন ওটুল তছনছ করে দিতে পারেন ট্রুডোর শিবির

কানাডার জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে ২০ সেপ্টেম্বর। এই নির্বাচনে দুবারের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির নেতা এরিন ওটুল। জরিপ বলছে, হঠাৎ জ্বলে ওঠা এই নেতা তছনছ করে দিতে পারেন ট্রুডোর শিবির।

- Advertisement -

ট্রুডোর দল লিবারেল পার্টি অব কানাডার জনপ্রিয়তা এখন ৩২ শতাংশ এবং কনজারভেটিভদের ৩১ শতাংশ।

বিবিসি ও রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, কানাডিয়ানদের কাছে কিছু দিন আগেও তেমন পরিচিত ছিলেন না এরিন ওটুল। শান্ত স্বভাবের এই ব্যক্তি যে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোকে ভোটে হারাতে পারেন, এক মাস আগেও এই সম্ভাবনা ছিল হাস্যকর।

কিন্তু দিন যত গড়াচ্ছে, কানাডিয়ানদের কাছে ওটুলের জনপ্রিয়তা ততই বেড়ে যাচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণায় ওটুলের অনেক উদ্যোগের কথা কানাডিয়ানদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে, এটা বলতেই হয়। এর আগে ট্রুডো যখন ২০ সেপ্টেম্বরে নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন, তখন জনমত জরিপে তিনি বিপুলভাবে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু দুই সপ্তাহেরও কম সময় যেতে না যেতেই দেখা যাচ্ছে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চলে আসতে পারেন ওটুল।

১৫ আগস্ট আগাম নির্বাচনের ডাক দিয়েছিলেন ট্রুডো। তিনি চেয়েছিলেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসবেন। তবে এবারের নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে জনমত জরিপে উঠে এসেছে।

করোনা মহামারির মধ্যে ওই সময়ে নির্বাচনের বিরোধিতা করেন এরিন ওটুল। তিনি চাননি করোনার মধ্যে ভোট গ্রহণের ফলে কানাডিয়ানরা ক্ষতির সম্মুখীন হোক।

ওই সময় তিনি বলেছিলেন, কানাডায় করোনার চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়েছে। তাই এখন নির্বাচনের সময় নয়। ভোটের জন্য আমাদের নিরাপদ সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

এখন কানাডিয়ানরা বিভিন্ন কারণে জাস্টিন ট্রুডোকে পছন্দ করতে চাচ্ছেন না। এর একটি কারণ, করোনা মহামারি মোকাবিলায় ট্রুডো সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেও সফলতা দেখাতে পারেনি। এ ছাড়া তার আগাম নির্বাচনের ডাক কানাডিয়ানরা ভালোভাবে নেননি।

একজন কনজারভেটিভ নেতা বলেন, দেশের মঙ্গলের জন্য ট্রুডো এখন ভালো কিছু করছেন না। কানাডিয়ান এয়ার ফোর্সে ১২ বছর চাকরিজীবন পার করেছেন ওটুল। তারপর করপোরেট আইনে এক দশক। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি রাজনীতির বাইরে এই পেশাগত অভিজ্ঞতার ওপর জোর দিয়েছেন।

এরই মধ্যে সুশৃঙ্খল নির্বাচনী প্রচারণা সফলভাবেই করতে পেরেছেন ওটুল। তিনি বেশিরভাগ প্রচারণায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন। করোনা বিস্তার ঠেকাতেই তিনি এমনটি করেছেন বলে জানিয়েছেন।

আগের এক জরিপে দেখা গিয়েছিল, অন্তত ৪০ শতাংশ কানাডিয়ান ওটুল সম্পর্কে যথেষ্ঠ জানেন না। এই জরিপের বিষয়ে কনজারভেটিভ নেতা জেমি এলার্টন বলেন, আমি মনে করি, এরিন ওটুল সম্পর্কে না জানাটা কানাডিয়ানদের জন্য একটা ভুল ছিল।

তবে ভোটারদের কাছে যেতে আগের কনজারভেটিভ নেতাদের তুলনায় কিছুটা মধ্যমপন্থা অবলম্বন করেছেন ওটুল। এছাড়া তিনি ৩৫৫ দিনের প্রচারাভিযানে নিজেকে কানাডিয়ানদের কাছে পরিচয় করিয়েছেন অন্য পদ্ধতিতে।

সাধারণ জীবনে অভ্যস্ত ওটুল সম্পর্কে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউবিসি) রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ইমেরিটাস অধ্যাপক রিচার্ড জনসন বলেন, কিছুটা সাধারণ জীবনই হলো ‘তার গুণ’।

আলবার্তা এবং সাসকাচোয়ান প্রদেশের মতো কনজারভেটিভের শক্ত ঘাঁটির বাইরে তাদের সমর্থন বিস্তৃত করার লক্ষ্যে আরও বেশি কেন্দ্রীভূত এবং প্রগতিশীল ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তার দলের তাঁবু প্রসারিত করার দিকেও তার প্রচারণা মনোনিবেশ করেছেন।

স্বাস্থ্যসেবা, অর্থনীতি ও ব্যক্তি স্বাধীনতার বিষয়গুলো ট্রুডোর চেয়ে বেশি প্রচারাভিযানে আনতে পেরেছেন ওটুল। এছাড়া কানাডার শ্রমিকদের মুনাফা দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি, যা স্বল্প আয়ের কানাডিয়ানদের সাহায্য করেবে।

চলতি সপ্তাহে ওটুল বলেন, ‘আমার নেতৃত্বের প্রথম দিন থেকে অগ্রাধিকার ছিল একটি রক্ষণশীল আন্দোলন গড়ে তোলা, যেখানে প্রত্যেক কানাডিয়ান ঘরে বসে সেটা অনুভব করতে পারে। আমরা আর তোমার বাবার কনজারভেটিভ পার্টি নই। ’

তবে জরিপ যাই হোক না কেন, ভোটারদের রায়ই বলে দেবে আগামী দিনে কে হচ্ছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles