10.2 C
Toronto
মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪

আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে যেভাবে বিরোধ শুরু হয় সোহেল চৌধুরীর

আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে যেভাবে বিরোধ শুরু হয় সোহেল চৌধুরীর - the Bengali Times

সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসতে থাকে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

- Advertisement -

র‌্যাবের দাবি, সোহেল হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আশিষ ও আজিজ মোহাম্মদ ভাই।

কী কারণে চিত্রনায়ক সোহেলকে খুন করে আজিজ মোহাম্মদ ভাই গং?

জানা গেছে, রাজধানীর বনানী জামে মসজিদের সামনে পূর্ব পাশেই আবেদীন টাওয়ারের সপ্তম তলায় অবস্থিত ট্রাম্পস ক্লাব।

ওই ক্লাবে নাচ-গানসহ অসামাজিক কার্যক্রম চলত। ক্লাবের অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে স্থানীয় মুসল্লিদের পক্ষে অবস্থান নেন সোহেল চৌধুরী।

আর এতেই ক্লাবের যৌথমালিক আশীষ রায় ও বান্টি ইসলামের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন সোহেল। নির্বিঘ্নে ক্লাব চালাতে সোহেলকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা আঁটেন আশিষ, বান্টি ইসলাম ও আজিজ মোহাম্মদ ভাই।

সোহেল হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়নের তারা দায়িত্ব দেন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনকে।

সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী জবানবন্দিতে এমনটাই ঘটেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মির্জা মাহাফুজ ১৬১ ধারার আদালত ও পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়েছিলেন।

জবানবন্দিতে তিনি পুলিশকে বলেছিলেন, ১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই রাতে বনানীর ট্রাম্প ক্লাবে গান বন্ধ করতে বলেছিলেন সোহেল ও তার বন্ধুরা। গান বন্ধ করা নিয়ে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেলের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সোহেল চৌধুরী আজিজের ওপর ক্ষেপে যান।

তখন সোহেলের বন্ধু কালা নাসির আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে গুলি করতে যান। এ সময় ক্লাবের বাথরুমে ঢুকে আত্মরক্ষা করেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই।

এর জেরেই ট্রাম্প ক্লাবের সামনে ভাড়াটে লোক দিয়ে হত্যা করা হয় সোহেল চৌধুরীকে।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, অসামাজিক কর্মকাণ্ড ও গান-বাজনা বন্ধ করতে উদ্যত হন সোহেল চৌধুরী। এক পর্যায়ে মসজিদ কমিটির লোকজন নিয়ে ক্লাব বন্ধ করার চেষ্টা করেন, তবে ব্যর্থ হন। এ নিয়ে ২৪ জুলাই আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর ঝামেলা হয়।

সেদিন ১০টার দিকে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ক্লাবে যান মির্জা মাহাফুজ। তখন ক্লাবে আসেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। আজিজ মোহাম্মদ তার স্ত্রীকে গান গাইতে বলেন। অন্যদিকে সোহেল চৌধুরী ও তার কয়েক বন্ধু গান থামাতে বলেন। একপর্যায়ে সোহেল চৌধুরী ও তার দলের লোকজন মাহাফুজের টেবিলের সামনে আসেন।

তখন তারা আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের পাশে বসা এক নারীকে উঠে আসতে বলেন। ওই নারী না উঠলে সোহেল চৌধুরী আরও ক্ষিপ্ত হয়ে মারতে যান।

মামলার আরেক সাক্ষী গোলাম মোহাম্মদ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে বিচারককে বলেছিলেন, খুন হওয়ার আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর ঝগড়া হয়। এ ছাড়া বান্টি ইসলামের সঙ্গে সোহেলের তিনবার ঝগড়া হয়। আশীষ রায় চৌধুরীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়।

আশীষ চৌধুরী ক্লাব থেকে বের করে দেন সোহেলকে। ভবিষ্যতে সোহেলকে ক্লাবে না আসার জন্য হুমকিও দেন তিনি।

সোহেল চৌধুরীর মা নূরজাহান বেগম আদালতকে বলেছে, তাদের বাসার উল্টো দিকেই ট্রাম্প ক্লাব। ১৭ ডিসেম্বর হত্যাকাণ্ডের দিন রাত দুইটায় সোহেল বাসায় ফেরেন। পরে সোহেল আবার ক্লাবে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকে দুটি গুলি করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

নূরজাহান বেগমের দাবি, সোহেল খুন হওয়ার ১৫ থেকে ২০ দিন আগে টেলিফোনে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও বান্টি ইসলামের লোকজন হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, সোহেলের মৃত্যুর দিন ঘনিয়ে আসছে।

সূত্র : যুগান্তর

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles