6.1 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

মমতার বিজয়

মমতার বিজয়
মমতা ব্যানার্জী

কথাটা আমার মনেও এসেছে। ওপার বাংলায় যারা সেকুলার মমতার বিজয়ে খুশী আর ধর্মীয় মৌলবাদী রাজনীতির পুরোধা নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপির পরাজয়ে উৎফুল্ল তারা কি এপার বাংলা তথা বাংলাদেশেও একই রকম সেকুলার রাজনীতির বিজয় দেখতে চান? কেউ কেউ আরো এক ধাপ এগিয়ে প্রশ্ন করছেন তারা কি বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যেতে রাজী আছেন?

আমি যতদুর জানি বর্তমান সরকার অনেক আগেই দেশে ৭২ এর সংবিধান ফেরত এনেছে। কিন্তু তার আগে আমি প্রশ্ন করি ভারতে কি ৭২ এর সংবিধান দরকার হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর ধর্মীয় বৈষম্যমুলক শাসন কায়েম করতে? এইযে ভারতে পরপর দুই টার্মে মোদী সাহেব ভারতের দীর্ঘদিনের সেকুলার চরিত্র বদলে দিয়ে সরকারী ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় ধর্মীয় মৌলবাদী রাজনীতির বিষবৃক্ষ বপন করেই চলেছে সেক্ষেত্রে সবার আগে কোন আলোচনাটি আপনার কাছে অগ্রাধিকার পায়?

- Advertisement -

আজ যদি পশ্চিম বঙ্গেও বিজেপি জয়ী হতো, সেক্ষেত্রেও কোন বিষয়টি আলোচনার প্রধান পাঠ হতো বলে মনে করেন?

এই যে আসামে বিজেপি সরকারের করা ধর্মীয় বৈষম্যমুলক জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) নিয়ে বিস্তর প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পরও ভারতের এই রাজ্যের জনগণের রায় পেল ওই দলটিই তাতেই বা কোন প্রধান বিষয়টি আপনার নজর কাড়ে?

কে সেকুলারিজম চায় আর কে পরিস্কার ঘোষনা দিয়ে মৌলবাদী রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি কায়েম করতে চায় সেই বিষয়টা নাকি জনগণের অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোটে যেই ক্ষমতায় আসবে তাকেই সবাইকে মেনে নিতে বাধ্য হতে হবে সংবিধানের এই মৌলিক বিষয়টা?

আমি আপনাকে প্রশ্ন করি, খেলার প্রথম শর্ত কি? বাংলাদেশে যদি কোন অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভারতের নরেন্দ্র মোদির মত কোন ধর্মীয় মৌলবাদী দল ক্ষমতায় আসে (আল্লাহ না করুন) আপনি কি সেটা মেনে নিতে রাজী আছেন? ভারতের জনগন কি বলেছে যে নরেন্দ্র মোদির বিজয় আমরা মানি না? কাজেই কে ৭২ এর সংবিধানে ফিরে যেতে চায় আর কে চায় না সেই কৈফিয়ত নেবার আগে নির্বাচনে জনগণের অবাধ রায় যে দলের বা যে মতবাদের পক্ষেই যাক না কেন সেটা মেনে নেবার মানসিকতা আপনার আছে কিনা সেই প্রশ্ন নিজেকে আগে করুন। আর নির্বাচনটাই অবাধ ও নিরপেক্ষ হোক সেটা চান কিনা তা আরো আগে বিবেচনা করুন।

মনে রাখা দরকার ভারতের কেন্দ্রে বা রাজ্য আসামে মৌলবাদী বিজেপি সরকারই হোক আর পশ্চিমবঙ্গে সেকুলার তৃণমুল কংগ্রেসই হোক সকলেই কিন্তু জনগণের অবাধ ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছে যে নির্বাচন নিয়ে কোন দলই কোন প্রশ্ন তোলে নাই। আরো মনে রাখা দরকার চার দশক ক্ষমতায় থাকার পরও কংগ্রেস কিংবা সিপিএম সিপিআই নামক বাম মোর্চা যতই নিজেদেরকে আদর্শবাদী আর সেকুলারই মনে করুক না কেন পশ্চিম বঙ্গে তাদের অলমোষ্ট বিলুপ্তির পেছনেও কিন্তু জনগণের অবাধ রায়ই মুলত দায়ী যে রায় নিয়ে কারো মনে কোন ক্ষোভ বা প্রশ্ন পর্যন্ত নেই।

টরন্টো

৫ মে ২০২১

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles