2.6 C
Toronto
শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

বুঝবার চেষ্টা করতে হয় জুতার সাইজটা কেমন

বুঝবার চেষ্টা করতে হয় জুতার সাইজটা কেমন
শর্ষের মধ্যে ভূত থাকলে যেমন তাকে তাড়ানো যায় না

মাঝে মাঝে আমি অন্যের অবস্থান থেকে বুঝার চেষ্টা করি তার মানসিকতা কেমন হতে পারে। আমি যদি ধার্মিক হতাম তবে আমি ধর্ম-কর্ম যারা করেন তাদের প্রতি আলাদা একটা টান বা সহানুভূতি অনুভব করতাম।

আমি যদি নাস্তিক হতাম তাহলে আমি যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন না, ধর্ম-কর্ম করেন না তাদের প্রতি তীব্র আকর্ষন বোধ করতাম, তাদের প্রতিই আমার সব সময় পক্ষপাতিত্ব থাকতো।

- Advertisement -

তাই যারা ধর্ম-কর্ম করেন তাদের পক্ষে ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের প্রতি বিরুদ্ধচারন করা সম্ভব নয়। এটি যে কোন ধর্মের অনুসারীদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তাই দেখা যায় বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ধর্ম ভীরু হওয়ায় তারা আলেম ওলামায়ে হেফেজ কিংবা ধর্মের ব্যাখ্যাকারীদের বিরুদ্ধে যেতে পারে না। এমন কি তাদের দ্বারা কোন অন্যায় হয়ে থাকলেও বেশির ভাগ মানুষ তাদের পক্ষেই থাকে।

এর কারন বহুবিধ।

বেশির ভাগ মানুষ মনে করে এদের বিরুদ্ধে কিছু বললে গুনাহ হবে, পরকালে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে,পরকালের সুখ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হবে, পরকালে কঠিন শাস্তি পেতে হবে। এমন সব মনস্তাত্ত্বিক কারনই বেশির ভাগ মানুষের মনোজগতে কাজ করে থাকে।

আরেকটি কারন হচ্ছে, প্রত্যাহিক জীবনে ধর্ম চর্চার কারনে এই সব ব্যক্তিদের ধর্ম ভিত্তিক কথা-বার্তা,আলাপ-আলোচনা তাদের ভালো লাগে। মৃত্যুর পরের জীবনের ভীতিও তাদেরকে এই সব ধর্মীয় ব্যক্তিদের প্রতি দুর্বল করে রাখে। তাই এই ধরনের ধর্ম ভীরু মানুষের পক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা, কিছু করা অনেক সময় সম্ভব হয় না।

একজন দেশনেতা/নেত্রী যদি ধার্মিক হন, তিনি যদি নিয়মিত ধর্ম চর্চা করেন, তার পক্ষেও তেমনি এই সব ধর্মীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব নয়। তিনিও সাধারণ ধর্ম ভীরু মানুষের মতই চিন্তা করেন এবং আচরন করেন। এইজন্যই দেখা যায় মৌলবাদ চরমভাবে বিস্তার লাভ করার পরেও রাষ্ট্র ব্যবস্থা গ্রহন করার ক্ষেত্রে নমনীয় অবস্থানে থাকে, তারা হার্ড লাইনে যেতে পারে না। কারন,রাষ্ট্রব্যবস্থার নেতৃস্থানীয়রা ধর্ম ভীরু, ক্ষেত্র বিশেষে মৌলবাদীও।

শর্ষের মধ্যে ভূত থাকলে যেমন তাকে তাড়ানো যায় না তেমনি রাষ্ট্রব্যবস্থা কিংবা সরকারের শীর্ষে ধর্ম ভীরু কেউ থাকলে তার পক্ষেও ধর্মীয় ব্যক্তিদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না।

তাই মাঝে মাঝে অন্যের জুতার মধ্যে পা দিয়ে বুঝবার চেষ্টা করতে হয় জুতার সাইজটা কেমন।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles