বাংলাদেশে চার ধাপে উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। তবে এবার উপজেলা নির্বাচনের বিধিমালায় বেশ কিছু সংশোধনী এনেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যার মধ্যে দুটো গণবিরোধী এবং দুটো ভাল জিনিষ।
গণবিরোধী দুটো বিষয় হলোঃ
১। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো পদে একাধিক প্রার্থী সমান ভোট পেলে আবার ভোট করার বিধান ছিল। এখানে এবার সংশোধনী আনা হয়েছে। একাধিক প্রার্থী সমান ভোট পেলে ফলাফল নির্ধারণ করা হবে লটারিতে। এটা গন বিরোধী পদক্ষেপ। জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচন কখনো লটারীতে নির্ধারণ হতে পারে না।
২। এতদিন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের জামানত হিসেবে ১০ হাজার টাকা জমা দিতে হতো। এবার দিতে হবে ১ লাখ টাকা। ভাইস চেয়ারম্যান পদে দিতে হবে ৭৫ হাজার টাকা। এটা লুটেরা ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকাওয়ালাদের নির্বাচন করতে উৎসাহিত করবে। পক্ষান্তরে সৎভাবে জীবন যাপন করা যেমন স্কুল শিক্ষক কিংবা স্বল্প বেতনে কাজ করা এনজিও কর্মী, মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত ইত্যাদি ব্যক্তিবর্গকে উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়া থেকে বন্চিত বা নিরুৎসাহিত করবে। ফলে ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজ উপজেলা চেয়ারম্যানদের দ্বারা দেশের অধিকাংশ উপজেলা পরিষদ পরিচালিত হবে বলে আশংকা করা যায়।
তবে অনলাইনে মনোনয়ন জমা দেয়া এবং প্রার্থীর জামানত রক্ষায় প্রদত্ত ভোটের প্রায় সাড়ে ১২ শতাংশ ভোটের পরিবর্তে ১৫ শতাংশে বর্ধিত করার বিষয়গুলো ভাল পদক্ষেপ বলে মনে করি।
দেশপ্রেমিক যে কোন নাগরিকের উচিত গণবিরোধী পদক্ষেপগুলোর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের স্মরণাপন্ন হওয়া এবং নির্বাচনে সর্বোচ্চ দশ লক্ষ টাকা খরচের বাধ্যবাধকতা আইন ও আইনের প্রয়োগ দ্বারা নিশ্চিত করা।
উল্লেখ্য সম্প্রতি একজন এমপি প্রকাশ্যে বলেছেন তিনি তার নির্বাচনে খরচকৃত এক কোটি ছাব্বিশ লাখ টাকা যেভাবে হোক তুলে নিবেন এবং তারপর তিনি ভাল হয়ে যাবেন। এ ঘটনা থেকে প্রমাণ হয় কোটি টাকা খরচ করে যারা নির্বাচন করবেন, নির্বাচিত হলে তারা নিশ্চিত দুর্নীতির মাধ্যমে সেই টাকা তুলে নিবেন। কেউ একজন সেটা প্রকাশ্যে বলে ফেলেছেন, অনেকেই বলবেন না!