14.8 C
Toronto
বুধবার, মে ১, ২০২৪

ঝড়ে বক পড়ে আর ফকিরের কেরামতি বাড়ে

ঝড়ে বক পড়ে আর ফকিরের কেরামতি বাড়ে

একটা কথা পরিস্কার করে বলতে হয় সেটা হলো বাংলাদেশের সমাজে যারা জ্ঞানী আলেম উলামা, পীর মাশায়েখ রয়েছেন তাদেরকে আমি এবং আমাদের পরিবার যথেষ্ট সম্মান করি।

- Advertisement -

ছোটবেলা থেকেই আমাদের বাসায় মাগুরার দারিয়াপুর পীর সাহেব এবং তার পরিবারের অনেকেই ঢাকা মাগুরা আসা যাওয়ার পথে যাত্রা বিরতি করতেন বা এক বা দু দিন অবস্হান করতেন। দারিয়াপুর পীর সাহেব হুজুরের বাড়ীতে বার্ষিক ওরশে অনেকবার গিয়েছি। সিলেটে হযরত শাহ জালাল এবং হযরত শাহ পরাণের মাজার জিয়ারত করেছি এবং বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারে এইসব ওলি আওলিয়াদের অনেক অবদান রয়েছে। আটরশির হুজুর বেঁচে থাকতে অনেকবার গিয়েছি এবং উনার ইন্তেকালের পরও এক দুবার গিয়েছি। আটরশির যত সমালোচনাই হোক না কেন আমার কাছে ভাল লেগেছে ফজরের নামাজের আগে এবং পরে সুমধুর কন্ঠে জিকির। ফুরফুরা শরীফের অনেক নাম শুনেছি এবং দারিয়াপুর হুজুর ফুরফুরা শরীফের অনুসারী বলে অনেক নাম ডাক শুনেছি। মেদিনীপুর হুজুরদের কথা অনেক শুনেছি কখনো যাওয়া হয় নি, তবে ইচ্ছে আছে একবার আজমীর শরীফ ও মেদিনীপুর ঘুরে আসার।

কিন্তু কখনো শুনি নি যে কোন পীরের মুরিদদের কেউ কেউ এভাবে আল্লাহ ছাড়া অন্যকে বা কোন জায়গাকে সেজদা করে। একটি দরবার শরীফে দেখেছি সেখানকার কোন কোন খাদেম মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন, কবর জিয়ারতের পর কবরের দিকে পেছন ফিরে না যাওয়ার হুকুম জারী করছেন ইত্যাদি। এগুলোর কোন কিছুই পীর সাহেব হুজুর বলে দিয়েছেন বলে আমি বিশ্বাস করি না। অনেক খাদেম রয়েছেন যারা টাকা কামানোর জন্যে অনেক সরল প্রাণ মুরিদ, ভক্ত বা জাকেরদের সরলতা ও বিপদের সুযোগ নিয়েছেন। অনেক অভিযোগ জমা হবার পর অনেক খাদেমকে দরবার থেকে বিদায় করে দেয়া হয়েছে। দারিয়াপুর হুজুরের সাথে দেখা হলে যখন পা ছুয়ে সালাম করতাম তখন তিনি আমার মাথা সোজা করে ধরে রাখতেন যাতে আমার মাথা তাঁর পা’য়ের দিকে ঝুঁকে না পড়ে। এছাড়া বাংলাদেশের মানুষের পীর ফকিরদের প্রতি বেশী ঝোঁক থাকার অন্যতম কারণ হলো সেখানে এক সময় ঝড় জলোচ্ছাস, অন্যায় অবিচার, অনাহার, দুর্ভিক্ষ এমনভাবে লেগে থাকতো যে মানুষ কোন অলৌকিক ক্ষমতা দ্বারা এসব থেকে মুক্তি পাবার আশা করতো। ফলে দেশে একটা প্রবাদ আছে, ঝড়ে বক পড়ে আর ফকিরের কেরামতি বাড়ে। অশিক্ষার হার ছিল এক সময় অনেক।

কিন্তু এখনতো অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ডিজিটাল টেকনোলজির এই যুগে মানুষ ইচ্ছে করলেই কোথায় কি হচ্ছে তা দেখতে পায়, ফকিরের কেরামতির জন্যে অপেক্ষা করতে হয় না। আল্লাহর নবী মোহাম্মদ (সাঃ) এর চেয়ে বড় সাফায়াতকারী আর কে হবেন আখেরাতে? অথচ তাঁর রওজা শরীফে গিয়ে দেখলাম সেখানে এক মিনিটও দাঁড়ানোর সুযোগ নেই।

দ্রুত দোয়া কলেমা পড়ে সরে যেতে হবে এবং অন্যকে কবরটি দেখার সুযোগ করে দিতে হবে। সাহাবীদের যে কবরস্হান জান্নাতুল বাকী সেটা পুরোটাই মাটির কবর। কার কবর কোনটা কেউ বলতে পারবে না। এর বড় কারণ হলো সেটা যদি মানুষ জানতো তাহলে হয়তো কবর পুঁজা শুরু হয়ে যেত। আমি ছোট বড় ধনী দরিদ্র সকল মানুষকেই ভালবাসি। কিন্তু দয়া করে লিমিট ক্রস করবেন না। একেবারে শেষ লিমিট হলো আল্লাহর কোন শরীক নাই এটা বিশ্বাস করা, তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে লিমিট ক্রস করবেন না। আর দ্বিতীয়টি হলো আল্লাহ ছাড়া কাউকে সিজদা করে লিমিট ক্রস করবেন না। আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে মাথা নত করবেন না।

- Advertisement -
পূর্ববর্তী খবর
পরবর্তী খবর

Related Articles

Latest Articles