11.9 C
Toronto
মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪

মানুষের দাঁত গজানোর ওষুধ তৈরি

মানুষের দাঁত গজানোর ওষুধ তৈরি

মানুষের নতুন দাঁত গজাতে এবং জন্মগত কারণে যাদের পুরো এক পাটি দাঁত নেই, তাদের ক্ষেত্রে এই ওষুধটি সাহায্য করবে বলে মনে করছেন জাপানি গবেষকরা। যেমন- ২ থেকে ৬ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে যাদের ‘আনোডোনটিয়া’ (জন্মগত কারণে সম্পূর্ণরূপে কোনো দাঁত না থাকা) রয়েছে, তাদের দাঁত গজাতে সাহায্য করবে এই ওষুধ।

- Advertisement -

শিগগিরই ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল তথা পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। ওষুধটি আসলেই কার্যকর কিনা সেটা নিশ্চিত হতেই এই পরীক্ষা করা হবে। এটা বিশ্বের প্রথম কোনো ওষুধ; যা মানুষের নতুন দাঁত গজাতে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ওষুধের মাধ্যমে নতুন দাঁত গজানোর পদ্ধতি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই গবেষণা করছেন জাপানের একদল গবেষক। অবশেষে সম্প্রতি একটি ওষুধ তৈরি করতে সক্ষম হন তারা। যা এরই মধ্যে প্রাণীর ওপর সফল পরীক্ষা চালানো হয়েছে।

জাপান টাইমসের প্রতিবেদন মতে, যুগান্তকরী ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হবে আগামী বছরের (২০২৪) জুলাইয়ে। এখন থেকে পাঁচ বছর আগেই ওষুধটি ইদুরের ওপর প্রয়োগ করা হয়। সেই পরীক্ষায় নতুন দাঁত গজাতে সফল হয় ওষুধটি।

আরও পড়ুন :: কিডনির বিষাক্ত পদার্থ দূর করে যে পানীয়, কমায় বাতের ব্যথা​ও

ওষুধটি ২০৩০ সালের মধ্যে জনসাধারণের ব্যবহারের উপযুক্ত করে তোলার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে গবেষক দল। এ কাজে তারা সফল হলে দন্তচিকিৎসার ক্ষেত্রে এক নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে এবং এটি একটি ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

মানুষের নতুন দাঁত গজাতে এবং জন্মগত কারণে যাদের পুরো এক পাটি দাঁত নেই, তাদের ক্ষেত্রে এই ওষুধটি সাহায্য করবে বলে মনে করছেন গবেষকরা। যেমন ২ থেকে ৬ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে যাদের ‘আনোডোনটিয়া’ (জন্মগত কারণে সম্পূর্ণরূপে কোনো দাঁত না থাকা) রয়েছে, তাদের দাঁত গজাতে সাহায্য করবে এই ওষুধ।

জাপানের ওসাকায় মেডিকেল রিসার্চ ইনস্টিটিউট কিটানো হাসপাতালের দন্ত চিকিৎসা ও ওরাল সার্জারি বিভাগের প্রধান কাটসু তাকাহাশি প্রধান গবেষক হিসেবে নতুন ওষুধটি নিয়ে কাজ করছেন।

তিনি বলেন, ‘নতুন দাঁত গজানোর এই আইডিয়াটা প্রত্যেকে দন্তচিকিতৎকের স্বপ্ন থাকে। আমি স্নাতকের শিক্ষার্থী থাকাবস্থায় এটা নিয়ে কাজ শুরু করি। এমন একটা ওষুধ যে উদ্ভাবন করা যাবে সে ব্যাপারে আমি খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম’।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এমন দিন দেখার আশায় আছি যখন কৃত্রিম দাঁত বাঁধানো এবং ইমপ্ল্যান্টের পাশাপাশি নতুন দাঁত গজানোর ওষুধও মানুষ ব্যবহার করবে’।

প্রতিবেদন মতে, ১৯৯১ সালে জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ে আণবিক জীববিজ্ঞান নিয়ে পড়ার সময় তাকাহাশি তার স্বপ্নপূরণে কাজ শুরু করেন। নতুন করে দাঁত গজানোর ওষুধ তৈরির জন্য গঠন করেন গবেষণা দল।

ইঁদুরের দাঁত গজানোর সঙ্গে কোন জিন সম্পর্কিত তা অন্বেষণে যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের গবেষণা করতে দেখে তাকাহাশির দল ইউএসএজি-১ প্রোটিনকে টার্গেট করে একটি অ্যান্টিবডি তৈরির উদ্যোগ নেন যা বাড়তি দাঁত গজানো ত্বরান্বিত করে।

২০১৮ সালে গবেষণাগারে পরীক্ষায় এর প্রমাণও পাওয়া যায়। পরীক্ষায় দেখা যায়, স্বাভাবিক সংখ্যক দাঁত রয়েছে এমন একটি ইঁদুরকে এই অ্যান্টিবডি-ভিত্তিক ওষুধ দেওয়ার পর এটির নতুন দাঁত গজিয়েছে।

গবেষণার এসব ফলাফল পাওয়ার পর তাকাহাশির দল তাদের গবেষণা অব্যাহত রাখে। তারা নির্দিষ্ট কিছু জিনকে টার্গেট করে যেগুলো দাঁতের বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। ২০০৫ সালে কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সঙ্গে মিলে তারা একটি জিন শনাক্ত করেন, যেটা ইউএসএজি-১ প্রোটিন উৎপাদনের জন্য দায়ী- যা দাঁত গজানোর সংখ্যা সীমাবদ্ধ করে ফেলে।

তবে দাঁত মুখের কোথায়, কি আকারে এবং কয়টি গজাবে- সেসব নিয়ন্ত্রণ একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ এর আগে গবেষণাটি প্রাণী মডেলের ওপর পরিচালিত হয়েছে, মানুষের ওপর প্রয়োগে কি ঘটবে তা এখনও অনিশ্চিত বলে মতামত ব্যক্ত করেন আমেরিকান ডেন্টাল এসোসিয়েশনের ডা. এরিন কেনেডি।

গবেষণাটি সফল হলে আরো যেসব সমস্যার কারণে মানুষের দাঁত পড়ে যায় (যেমন-গাম ডিজিজ) সেগুলোর সমাধান করতেও হয়তো নতুন এক ওষুধটি ব্যবহৃত হতে পারে।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles