10.3 C
Toronto
রবিবার, মে ৫, ২০২৪

৯০ শতাংশ স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য

৯০ শতাংশ স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য
প্রতীকী ছবি

অনিয়ন্ত্রিত জীবন ও খাদ্যাভাসের কারণে দেশে মারাত্মকভাবে বাড়ছে স্ট্রোকের রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে ব্লাডপ্রেসার ও ডায়াবেটিস রোগীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে নিয়মতান্ত্রিক জীবনে ৯০ শতাংশ স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

তারা বলেন, পুরো বিশ্বে যত মানুষ মারা যায় তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা যায় অসংক্রামক রোগে। এর মধ্যে সবার শীর্ষে হৃদরোগ ও স্ট্রোক (পক্ষাঘাত)। যেটাকে আগ্নেয়গিরির সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। বিশ্বে প্রতি তিন মিনিট ১৭ সেকেন্ডে একজন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে স্ট্রোকে। এজন্য সবকিছুর আগে প্রতিরোধে জোর দিতে হবে।

- Advertisement -

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর উত্তরার হাই কেয়ার নিউরো স্পেশালাইজড হাসপাতালের ‘ফ্রি স্ট্রোক ক্লিনিক’ অনুষ্ঠানে চিকিৎসকরা এসব কথা বলেন। স্ট্রোকের রোগীদের বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসাসহ সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশেষ ক্যাম্প করছে প্রতিষ্ঠানটি।

অনুষ্ঠানে স্ট্রোকের ওপর মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন জাতীয় নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার নিউরোসার্জন ডা. শাহনেওয়াজ। মূল আলোচনা করেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম।

ডা. শাহনেওয়াজ বলেন, স্ট্রোক মূলত মস্তিষ্কের সমস্যাজনিত রোগ। সঠিক তথ্য না জানায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে হৃদরোগী মনে করা হয়। এতে সময়ক্ষেপণ হওয়ায় রোগীর জীবন বিপন্ন হয়। এ থেকে বাঁচতে হলে সবার আগে জানতে হবে। কারণ এর চিকিৎসার সঙ্গে সময় জড়িত। সঠিক সময়ে চিকিৎসা দেওয়া গেলে অধিকাংশ রোগীর বেঁচে ফেরা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি পরিবারেই এখন ব্লাডপ্রেসার ও ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছে। স্ট্রোকের রোগীর প্রায় ৫০ শতাংশের ডায়াবেটিস ও ব্লাডপ্রেসার রয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত ওজন, দুশ্চিন্তা, খাদ্যাভাস ও জাঙ্কফুড এ রোগের বড় কারণ। তবে নিয়মতান্ত্রিক জীবযাপনে ৯০ শতাংশ স্ট্রোকই প্রতিরোধ সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, স্ট্রোকের ৯৭ শতাংশ রোগীর রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া চোখে কম দেখা, একপাশ ঝুলে যাওয়া, মুখবাঁকা এবং কথা বলায় জড়তা দেখা দেয়। আক্রান্ত হওয়ার সাড়ে ৪ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা নিলে পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্ভব। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে সুস্থ হলেও আগের অবস্থায় ফেরানো যায় না।

ঢামেকের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শফিফুল ইসলাম বলেন, বিশে^ মৃত্যুর দ্বিতীয় আর বিকলাঙ্গের প্রধান কারণ স্ট্রোক। চিকিৎসার চেয়ে এটি প্রতিরোধ সবচেয়ে উত্তম ব্যবস্থা। ব্যক্তি চাইলে ৯০ শতাংশই প্রতিরোধ করতে পারে। সম্প্রতি বাংলাদেশে স্ট্রোকের রোগীর হার অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে তরুণ-যুবকরা আক্রান্ত হচ্ছে। এর প্রধান কারণ, কায়িক পরিশ্রম নেই। এখন শহরাঞ্চলে খেলাধুলার মাঠ কমেছে, খাদ্যাভ্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। আক্রান্তদের ২৩ শতাংশ জাঙ্কফুডে অভ্যস্ত। সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রতি আসক্তি। এতে করে স্থুলতা বাড়ছে। ফলে মারাত্মকভাবে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে দরকার সবচেয়ে বেশি সচেতনতা। সাধারণ মানুষ ডাক্তারি ভাষা বোঝে না, কিন্তু কারণ ও প্রতিরোধের উপায়গুলো যদি সঠিকভাবে তুলে ধরা যায়, মানুষ তা বুঝতে পারলে এই ব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে। এজন্য আমরা ক্যাম্প করছি, বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরামর্শ দিচ্ছি।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles