14.8 C
Toronto
শনিবার, মে ৪, ২০২৪

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়বে লাখো বছরের পুরনো ভাইরাস

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়বে লাখো বছরের পুরনো ভাইরাস

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়ী হওয়াটা খুবই কষ্টকর। তবে এমন যদি জানা যায়, মিলিয়ন বছর ধরে মানুষের ডিএনএ’র ভিতরে লুকিয়ে থাকা প্রাচীন ভাইরাসের দেহাবশেষ শরীরকে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে, তাহলে কেমন হয়? এমন হলে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিশ্চয়ই আশার সঞ্চার হয়। সেই আশার খবরই পাওয়া গেছে এক গবেষণায়।

- Advertisement -

‘ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউট’র এক গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যান্সারের কোষ যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, এই পুরনো ভাইরাসগুলো তখন তার বিরুদ্ধে কাজ করতে শুরু করে। গবেষণায় দেখা যায়, এই পুরনো ভাইরাসগুলো দেহের ‘ইমিউন সিস্টেম’কে ক্যান্সারের কোষগুলোতে আক্রমণ করতে সহায়তা করে।

বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষক দলটি এখন ক্যান্সারের ভ্যাকসিন তৈরির জন্য নতুন এই গবেষণাকে কাজে লাগাতে চাযন, যা ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে।

গবেষকরা ফুসফুসের ক্যান্সারের জীবিত কোষ এবং টিউমারের চারপাশে থাকা বি-কোষ নামক ইমিউন সিস্টেমের একটি অংশের মধ্যে একটি সংযোগ লক্ষ্য করেন। বি-কোষ আমাদের শরীরের অংশ যা অ্যান্টিবডি তৈরি করে এবং কোভিডের মতো সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের ভূমিকার রয়েছে। পরীক্ষায় দেখা যায়, বি-কোষ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে।

ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউটের সহযোগী গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক জুলিয়ান ডাউনওয়ার্ড বলেছেন, এটি প্রমাণিত হয়েছে যে অ্যান্টিবডিগুলো ‘এন্ডোজেনাস রেট্রোভাইরাস’ নামক এই প্রাচীন ভাইরাসকে চিহ্নিত করতে পেরেছে। রেট্রোভাইরাস আমাদের দেহের ভিতরে তাদের জেনেটিক গুণাবলীর একটি অনুলিপি তৈরি করার কৌশল অবলম্বন করে।

আমাদের দেহের ৮ শতাংশেরও বেশি ডিএনএ-তে এই জাতীয় ভাইরাসের উৎস রয়েছে। এর মধ্যে কিছু রেট্রোভাইরাস কয়েক লক্ষ বছর আগে আমাদের জেনেটিক কোডের সাথে মিশে গিয়েছে। অন্যান্য রেট্রোভাইরাস হয়ত কয়েক হাজার বছর আগে আমাদের ডিএনএ-তে প্রবেশ করেছে।

গবেষণায় বলা হয়, এটি ক্যান্সার কোষের ভিতরে আধিপত্য বিস্তার করে। বিশেষ করে যখন এটি অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পায়। এই প্রাচীন ভাইরাসগুলো ক্যান্সারের কোষকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে না পারলেও তাদের টুকরো করে দিতে পারে যাতে করে ইমিউন সিস্টেমের জন্য ক্যান্সারের কোষগুলোকে মেরে ফেলা সহজ হয়ে যায়।

বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের রেট্রোভাইরাল ইমিউনোলজির প্রধান অধ্যাপক জর্জ ক্যাসিওটিস বলেছেন, এটি একটি অ্যালার্ম সিস্টেম হিসেবে কাজ করে।

গবেষকরা এখন ইমিউন সিস্টেম কীভাবে এই ‘এনডোজেনাস রেট্রোভাইরাসকে’ দেহের মধ্যে খুঁজে বের করবে, সেজন্য ভ্যাকসিন তৈরি করতে চায়। অধ্যাপক ক্যাসিওটিস বলেছেন, আমরা যদি তা করতে পারি, তাহলে থেরাপিউটিক ভ্যাকসিনের বদলে প্রতিরোধমূলক ভ্যাকসিন আনা সম্ভব।

ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে থেকে ডা. ক্লেয়ার ব্রমলি বলেছেন, আমাদের সবারই প্রাচীন ভাইরাল ডিএনএ রয়েছে, যা আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে এসেছে।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles