12.6 C
Toronto
রবিবার, মে ১৯, ২০২৪

বিলম্বিত শারদ শুভেচ্ছা

বিলম্বিত শারদ শুভেচ্ছা

বিলম্বিত শারদ শুভেচ্ছা
সাময়িকীর প্রচ্ছদ

সর্বপ্রথম ২০০৩ সালে টরন্টোতে মান সম্মত চার রঙা অফসেটে ছাপা দূর্গাপুজায় ‘চিন্ময়ী’ নামে সাময়িকী করি আমারা। আমি ও রনি ডি রোজারীওর ‘ইনডিজাইন’ নামের ডিজাইন ও প্রিন্টিং আমাদের ফার্ম থেকে। ডেনফোর্থ বাংলা টাউনে তখনো কেউ গ্রাফিক ডিজাইন এবং প্রিন্টিং ফার্ম গড়ে তোলেনি। বাংলাদেশী হিন্দু সম্প্রদায়ের নিজস্ব কনো মন্দিরও তখন ছিলনা। বার্চমাউন্ট রোডে এক শ্রীলঙ্কান মন্দিরে সপ্তমী থেকে দশমী স্পেস রেন্ট করে জমজমাট দূর্গা পূজার আয়োজন করতেন বাংলাদেশ কানাডা হিন্দু কালচারল সোসাইটি টরন্টো। ফটোকপি করা দুর্বল কয়েক পৃষ্ঠার সাদাকালো পূজো সংকলন বেরুতো।

- Advertisement -

সোসাইটির তরুণদের নেতাদের মধ্যেই প্রথম ইচছা জাগে ঢাকা-কলকাতার মত চার রঙা অফসেটে ছাপা একটি সুন্দর সাময়িকী সবার হাতে পূজো উপলক্ষ্যে উপহার দেয়ার। এই সূত্র ধরে তাদের তরুণ নেতাকর্মিদের যারা সৃজনশীল যেমন ময়াবী চোখ আর অপূর্ব মানুষ অঞ্জন দত্ত, নিষ্পাপ শিশুসুলভ মুখের দেবব্রত দে তমাল আর বড়-বড় কাজ একা সামলানো তেজী ঘোড়ার কর্মঠ শিবু সবাই টরন্টোর বাংলা টাউন ডেনফোর্থ রোডে ‘ইনডিজাইন’ অফিসে আমার ও রনি ডি রোজারিওর কাছে আসেন। তাদের এক পূজোর সংকলন চাই যা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ডিজাইন ও প্রিন্টং এর পুরো দায়িত্ব আমাদের দুইজনের ওপর দিয়ে তারা টাকা সংগ্রহ জোরে সোরে শুরু করেন। অঞ্জন দত্ত সংকলনের নাম দিলেন -চিন্ময়ী। আমি ও রনি প্রাণপণ করে কাজে ঝাপ দিলম। প্রায় ১০০পৃষ্ঠার নতুন রূপে আবির্ভাব ‘চিন্ময়ী’ কাজ শুরু করে দিলাম। পেইজ মেকাপ,ইন সাইড ইলাস্ট্রেশন এমন কি প্রতিটি বিজ্ঞাপন ডিজাইন পর্যন্ত নতুন করে করি। চার রঙা অফসেটে ছাপা হবে প্রচ্ছদ। ইন্টারনেট থেকে চুরি করে ডাউনলোড করে মাদূর্গামুখ নিয়ে করা কাভার ডিজাইন ভালো হবেনা!

তখন ইন্টারনেটে খুব লো রেজুলেশনর ছবি পাওয়া যেত,যা দিয়ে চার রঙা অফসেট ছাপা মোটেই ভালো হবার নয়! রনি বল্লো- বস এটি আপনি নিজ হাতেই এঁকে ফেলেন মা দূর্গাও প্রসন্ন হবেন। রনি তখনো এবং এখনো আমার প্রিয়জন তার কথা এবং সঙ্গে অঞ্মাল,শিবুরাও বল্লো তাই বড় পেপারে এক্রিলিক রঙে একে ফেল্লাম আমর স্টাইলে মা দূর্গার মুখ। প্রেসের প্রফেশানল বড় স্কেনারে স্কেন করে প্রচ্ছদটি শেষ পর্যন্ত দারুণ ভাবে ছাপা হলো। ‘চিন্ময়ী’ সেই সময় টরন্টো ঘরে ঘরে প্রশংসিত হলো।এমন কি ঢাকা থেকেও প্রশংসা বৃষ্টি শুরু হলো। আসলে দেশের সবাই প্রবাসে ছাপা কাজ যে খুব দুর্বল বারবার দেখে একটা বদ্ধধরণা করে রেখে ছিলেন, সেটিও ভাঙ্ল। সেই যুগের ধারণা ভেঙ্গে ‘চিন্ময়ী’ এক নতুন ধারা তৈরী করলো ছিলো। যা আজও অব্যাহত। এখন বাংলাদেশ কানাডা হিন্দু কালচারাল সোসাইটি টরন্টো স্বমহিমায় নিজস্ব বিশল মন্দির গড়ে তুলেছেন।সঙ্গে অন্যনামে আরো কয়েকটি মন্দির হয়ছে।

সবাই এখন অবধারিত ভাবে এক ভলো বাজেট রাখেন টরন্টোতে চার রঙা স্বাস্থবান পূজা সংকলনের প্রকাশের জন্যে। আমি কিংবা রনি ডিরোজারিও তার স্ত্রী টিনা ডি রোজারিওকে নিয়ে হিন্দু কালচারল সোসাইটি,ধর্মাশ্রম অথবা দূর্গাবাড়ি যে কোনো মন্দিরে পূজোতে গেলে হাতে প্রসাদের সাথে বর্ণিল ঝকঝকে পূজোর সংকলন তুলে দিয়ে বলেন-দাদা,আমাদেরটাই সবার চেয়ে সুন্দর হয়েছে। তারা নতুন প্রজন্ম কি ভাবে জানবেন যে রনি ডি রোজারিও এবং এই অধম রাতকে রাত অফিসে জেগে কি পরিশ্রমই না করে টরন্টোতে বাংলাদেশী শারদীয় দূর্গা পূজায় রঙিন অফসেটে ছাপা ভালো ডিজাইন ও প্রিন্টের সংকলনের আমরাই প্রথম গোড়াপত্তন করে ছিলাম। তবে আন্তরিকতার সঙ্গে আমি ও রনি কাজ করে ছিলাম তবে টাকার বিনিময়ে আর অঞ্জন দত্ত, দেবব্রত দে তমল আর শিবুরা করে ছিলেন এক নতুন ধারা প্রবর্তণ করতে,যা তারা করে দেখিয়েছেন। তবে
প্রত্যেক মন্দিরের যারা নতুন প্রজন্ম জড়িত হচ্ছেন তাদের স্মরণ করা উচিত এই তিনজনে দূরদৃষ্টি ও কারেজ!

স্কারবোরো, কানাডা

- Advertisement -
পূর্ববর্তী খবর
পরবর্তী খবর

Related Articles

Latest Articles