কানাডার প্রধান বিচারপতি রিচার্ড ওয়াগনার ও বিচারপতি রাসেল ব্রাউন সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ে বলেন, মিউনিসিপ্যাল নির্বাচন সাংবিধানিক ভিত্তিহীন সামান্যই সংবিধিবদ্ধ প্ল্যাটফরম। এ কারণেই প্রদেশ চাইলে বড় সড় হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী আইনে পরিবর্তন আনতে পারে। তাছাড়া এর ফলে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের মত প্রকাশ মৌলিকভাবে যে বিঘ্নিত হয়েছে, সিটি কর্তৃপক্ষ সেটা প্রমাণেও ব্যর্থ হয়েছে। গত মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনের সময় টরন্টো সিটি কাউন্সিলের আকার অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয় যে আইনে তা বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপরই এ মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
সুপ্রিম কোর্ট অব কানাডার ৫ জন বিচারপতি আইনটি বহাল রাখার পক্ষে মত দেন। এর বিপক্ষে মত দেন ৪ জন বিচারপতি। সংখ্যাগরিষ্ঠ এ মতামতের ভিত্তিতে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, প্রিমিয়ার ডগ ফোর্ড আইনটিতে যে পরিবর্তন এনেছেন তাতে প্রার্থী ও ভোটার কারোরই মুক্ত মতামত প্রকাশের অধিকার লঙ্ঘিত হয়নি।
২০১৮ সালে মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনের প্রচারণা চলার সময় অন্টারিও আইনটি পাস করে। তাতে টরন্টো সিটি কাউন্সিলের আসন সংখ্যা ৪৭টি থেকে ২৫টিতে নামিয়ে আনা হয়। সে সময়কার টরন্টো সিটি কাউন্সিলর ও পরাজিত মেয়র প্রার্থী ফোর্ড এর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, এর ফলে কাউন্সিলের পরিচালন কার্যক্রম গতিশীল হবে এবং ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার বেঁচে যাবে। সমালোচকরার সে সময় এ উদ্যোগকে স্বেচ্ছাচারি ও অগণতান্ত্রিক বলে নিন্দা জানান।
মামলা শুনে সুপ্রিম কোর্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, ২০১৮ সালের অক্টোবরে ভোটের আগে নতুন ব্যবস্থাটির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মতো যথেষ্ট সময় ছিল। রায়ে তারা বলেন, মিউনিসিপ্যাল প্রার্থী ও সমর্থকরা নতুন ওয়ার্ড কাঠামো সম্পর্কে জানাতে ও স্বাধীনভাবে মতামত তুলে ধরতে ৬৯ দিন সময় পেয়েছিলেন, অধিকাংশ জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনের তুলনায় যা বেশি। প্রার্থীরা প্রচারণা ও কাউন্সিলের আকৃতি বা ওয়ার্ডের সীমানা নিয়ে বিতর্ক চালিয়ে গেছেন। তারা নিজেরা না চাইলে এ ধরনের কর্মকা- থেকে তাদেরকে বিরত রাখতে পারতো না আইনটি। অনেক মিউনিসিপ্যাল প্রার্থী সফলভাবে প্রচারণা চালান এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ তহবিল সংগ্রহ ও ভোটার আকৃষ্ট করতে সক্ষম হন। মত প্রকাশের অধিকার লঙ্ঘিত হলে তাদের পক্ষে এটা করা সম্ভব ছিল না।
ভিন্নমত পোষণকারী বিচারপতিরা প্রশ্ন তুলেছেন আইনটির সময় নিয়ে। ভিন্নমত পোষণকারী বিচারকদের পক্ষে বিচারপতি রোজালি আবেলা লিখেছেন, নির্বাচনের মাঝ বরাবর এসে আইনটি পাস করায় ২০১৮ সালের মিউনিসিপ্যাল নির্বাচন অস্থিতিশীল হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় সমস্যা নিয়ে ওয়ার্ডগুলোর প্রার্থী ও ভোটাররা অর্থবহ আলোচনা করতে ও একে অপরকে তা অবহিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন।