16.5 C
Toronto
বুধবার, মে ৮, ২০২৪

এক বছরের মধ্যে নাতি-নাতনি দাবি, অন্যথায় পাঁচ কোটি

এক বছরের মধ্যে নাতি-নাতনি দাবি, অন্যথায় পাঁচ কোটি - the Bengali Times
ছবি সংগৃহীত

বিয়ে হওয়ার ছয় বছর পরও নাতি-নাতনির জন্ম না দেওয়ায় ভারতের এক দম্পতি তাঁদের একমাত্র ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। অস্বাভাবিক ও ব্যতিক্রম এই মামলাটি নিয়ে ভারতজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

মামলা করা দম্পতি সঞ্জীব (৬১) ও সাধনা প্রসাদ (৫৭) বলেছেন, তাঁরা তাঁদের সঞ্চয় দিয়ে তাঁদের ছেলেকে লালন-পালন করেছেন। ছেলেকে পাইলট হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য এবং বিয়ের পর ছেলে ও পুত্রবধূর মধুচন্দ্রিমার জন্য ব্যাপক আকারে অর্থ খরচ করেছেন।

- Advertisement -

এখন তাদের (ছেলে ও পুত্রবধূ) ফেরত দেওয়ার সময়। এক বছরের মধ্যে তারা হয় একটি নাতি-নাতনি দেবে, না হয় পাঁচ কোটি রুপি ফেরত দেবে।

বিবিসি হিন্দির সঙ্গে কথা বলার সময় সাধনা প্রসাদ বলেন, তাঁর ছেলে ও পুত্রবধূ সন্তান নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে। এর জন্য তাঁদের ‘সমাজের কাছ থেকে কটূক্তি’ শুনতে হচ্ছে। এটিকে তিনি ‘মানসিক নিষ্ঠুরতা’ বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের আদালতে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু যখনই আমরা নাতি-নাতনির বিষয়টি উত্থাপন করি, তারা এড়িয়ে যায়। তাদের সন্তান জন্ম না দেওয়ার সিদ্ধান্তের অর্থ হলো, আমাদের পরিবারের নাম শেষ হয়ে যাওয়া। ’

সঞ্জীব বলেন, ‘আমরা খুব অসুখী। আমরা অবসর জীবন কাটাচ্ছি। আমরা দাদা-দাদি হতে চাই। এমনকি আমরা তাদের সন্তানদের দেখাশোনা করতে ইচ্ছুক। নাতি-নাতনিরা মানুষের জীবনে আনন্দ নিয়ে আসে, কিন্তু আমরা তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। ’

হতাশ হয়ে পড়া মা-বাবার নাতি-নাতনি না দেওয়ার জন্য সন্তানদের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার ঘটনাটি সম্ভবত ভারতে এই প্রথম। ভারতীয় সমাজে অনেকেই বলে থাকে, এখানে সন্তান ধারণ করা কখনোই শুধু দম্পতির সিদ্ধান্ত নয়। মা-বাবা এবং শ্বশুর-শাশুড়ি থেকে নিকটবর্তী এবং দূরবর্তী আত্মীয়সহ বৃহত্তর সমাজ এই বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ, বক্তব্য বা চাপ দিয়ে থাকে।

নৃবিজ্ঞানী অধ্যাপক এ আর ভাসাভি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘ভারতে বিয়ে শুধু একটি দম্পতির মধ্যে নয়, পরিবারের মধ্যে হয়। ’ প্রসাদ দম্পতি যা করেছেন তার ‘সাংস্কৃতিক যুক্তি’ হলো ‘নাতি-নাতনি আশা করাটা একটি প্রথাসিদ্ধ আচরণ’।

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বৃদ্ধ বয়সে মা-বাবার যত্ন নেওয়া সন্তানের ‘নৈতিক দায়িত্ব এবং আইনগত বাধ্যবাধকতা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তবে মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, সন্তান নেওয়া বা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত মূলত একজন নারীর। বিবাহিত অনেক নারী বলেছেন, এ বিষয়ে পবিরার বা সমাজ তাঁদের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ তৈরি করে। অনেক সময় বিয়ে হতে না হতেই সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়ে থাকে।

বেঙ্গালুরুর ৪৬ বছর বয়সী নারী সুধা বলেন, মামলাটি ‘চমকপ্রদ’। তবে সমাজে শিশুর জন্ম দেওয়ার জন্য সূক্ষ্ম চাপ অব্যাহত রয়েছে।

ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানিও তাঁর সদ্যোবিবাহিত পুত্রবধূকে উত্তরাধিকারী তৈরি করার সময় এসেছে বলে সন্তান ধারণের জন্য ‘ইঙ্গিত’ দিয়েছিলেন।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles