2.9 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

শাহবাজের মন্ত্রিসভায় পাঁচ নারী, তাদের পরিচয়

শাহবাজের মন্ত্রিসভায় পাঁচ নারী, তাদের পরিচয় - the Bengali Times
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ

পাকিস্তানে শপথ নিয়েছে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) ইসলামাবাদে প্রেসিডেন্ট হাউসে শপথ নেয় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের ৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা। এদিন ৩১ জন পূর্ণ মন্ত্রী ও তিন প্রতিমন্ত্রীর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা শপথ নেন। এতে স্থান পেয়েছেন পাঁচজন নারী। এরমধ্যে তিনজন পূর্ণ মন্ত্রী এবং দুইজন প্রতিমন্ত্রী।

মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ পাঠ করান সিনেট চেয়ারম্যান সাদিক সাঞ্জরানি। মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া পাঁচজন নারী নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম ডন।

- Advertisement -

মরিয়ম আওরঙ্গজেবকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি পূর্ববর্তী পিএমএল-এন সরকারের মুখপত্র ছিলেন। যুক্তরাজ্য থেকে উন্নয়ন ও পরিবেশ নীতিতে মাস্টার্স করেছেন তিনি। এরপরই পিতামাতার রাজনীতিতে আসেন তিনি। ২০১৩ সালে দলের সংরক্ষিত মহিলা আসন থেকে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মন্ত্রিসভায় সম্প্রচার, তথ্য এবং জাতীয় ঐতিহ্যের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

নওয়াজকে অযোগ্য ঘোষণা করার পরেও এবং শাহিদ খাকান আব্বাসি নওয়াজের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার পরেও তিনি তার ভূমিকা অব্যাহত রেখেছিলেন। ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে মে পর্যন্ত পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তথ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন মরিয়ম। সেখানে তিনি বলেন, জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকারকে ক্ষুণ্ন করবে এমন কোনো আইন প্রণয়ন করা হবে না।

মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া পরবর্তী মন্ত্রী পাকিস্তানের রাজনীতিতে খুবই পরিচিত মুখ। পাকিস্তানের প্রথম মহিলা সিনেট বিরোধী নেতা, পিপিপির ভাইস-প্রেসিডেন্ট শেরি রেহমান। তাকে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাজ্য থেকে মাস্টার্স শেষ করার পর, রেহমান দ্য ডেইলি স্টারের সাংবাদিকতায় তার পেশাগত জীবন শুরু করেন এবং এরপর দ্য হেরাল্ড-এর প্রধান সম্পাদক হন। প্রায় ২০ বছর ধরে মাঠে কাজ করার পর ২০০২ সালে পিপিপি-র সংরক্ষিত মহিলা আসনে একজন আইনপ্রণেতা হিসেবে পাকিস্তানের রাজনীতিতে পা রাখেন। তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের মন্ত্রিসভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

রেহমান ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত হিসাবেও কাজ করেছিলেন। তদুপরি, একজন মন্ত্রী হিসাবে, তিনি ইলেকট্রনিক মিডিয়া রেগুলেটরি অধ্যাদেশে সামরিক আইনের নেতৃত্বাধীন মিডিয়া বিরোধী ধারাগুলো বাতিলের জন্য ২০০৮ সালে জাতীয় পরিষদে প্রথম সরকারী বিল উত্থাপন করেছিলেন।

২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো জাতীয় পরিষদে সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে রাজনীতিতে পা রাখেন পিপিপি-র শাজিয়া মারি। তার রাজনৈতিক জীবনের গুরু দাদা আলী মোহাম্মদ মারি, যিনি ভারত ভাগের আগে সিন্ধু পরিষদের এমপিএ ছিলেন। তার বাবা আতা মোহাম্মদ মারি একজন এমএনএ এবং সিন্ধু বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার ছিলেন। তার মা পারভীন আতা মারিও এমপিএ ছিলেন।

নতুন এ মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) রাজনীতিক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার। পাকিস্তানের সর্বকনিষ্ঠ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তিনি। হিনা রব্বানি ২০১১ সালের ১৯ জুলাই থেকে ২০১৩ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত পাকিস্তানের ২১তম এবং প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

খার মুজাফফরগড় জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষা লাভ করেন। তার আগে ২০১১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১১ সালের ২০ জুলাই পর্যন্ত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন ৪৪ বছর বয়সী এ রাজনীতিক। তখন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির সহসভাপতি আসিফ আলী জারদারি। পারভেজ মোশাররফের সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য থেকে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির অধীনে সবচেয়ে জনপ্রিয় মন্ত্রীদের একজন হয়ে ওঠেন তিনি। পিপিপি-র এই নেত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরতা হ্রাস করার পক্ষে কাজ করেন।

মরিয়ম নওয়াজের সুপারিশে পাঞ্জাবের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এবং পিএমএল-এন আইন প্রণেতা আয়েশা গৌস পাশাকে ২০১৮ সালে এনএ আসনের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল। আয়েশা হলেন অর্থনীতিবিদ হাফিজ পাশার স্ত্রী, যিনি অতীতে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এবং পিএমএল-এন সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। আলহামরায় ফয়েজ ফেস্টিভ্যালে একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে পিএমএল-এন এর এই নেতা বলেন, তিনি রাজনৈতিক পটভূমি থেকে আসেননি। তিনি দীর্ঘ সময় একাডেমিক এবং নীতি বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করেন। পাঞ্জাবের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শেহবাজ তাকে তার মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে বলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজের নতুন মন্ত্রিসভায় তাকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন তা এখনো জানা যায়নি।

নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে ১৪ জন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন), পিপিপি ৯, জমিয়তে উলেমায়ে ইসলাম-ফজল (জেইউআই-এফ) ৪ ও অন্য জোট শরিক দলের সাতজন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles