10.1 C
Toronto
শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

এক নারীর খুনের তদন্তে উঠে এলো আরেক নারী খুনের চাঞ্চল্যকর তথ্য

এক নারীর খুনের তদন্তে উঠে এলো আরেক নারী খুনের চাঞ্চল্যকর তথ্য - the Bengali Times

রাজধানীর মাতুয়াইলে ময়লার ভাগাড়ে পাওয়া অজ্ঞাত এক নারীর লাশের তদন্ত করতে গিয়ে আরেক নারী খুনের চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তবে ঐ নারীর লাশের পরিচয় এখনো বের করতে পারেনি পুলিশ। লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে কয়েকদিন রাখার পর আজিমপুর কবরস্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম।

- Advertisement -

ঐ লাশের পরিচয় খুঁজতে গিয়ে পুলিশ চট্টগ্রামের রাউজান এলাকায় হত্যার শিকার আরেক নারীর সন্ধান পেয়েছে। যার নাম আমেনা খাতুন। তার স্বামী ও বন্ধু মিলে হত্যার পর লাশটি রাউজানের একটি সড়কের পাশে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে রাউজান থানা পুলিশ আমেনা খাতুনের স্বামী বাদশা ও তার বন্ধু আক্তারকে গ্রেফতার করেছে।

জানা গেছে, গত ১৬ ডিসেম্বর মধ্যরাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার মাতুয়াইলের সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ফেলার স্থান থেকে অজ্ঞাত এক নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঐ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়।

ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ডেমরা জোন) দ্বীন মোহাম্মদ জানান, যে স্থান থেকে ঐ নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে- সেটি একটি বিস্তীর্ণ এলাকা। পুরোটাই ময়লার স্তূপ। সেখানে দুটি ছোট ঘর রয়েছে। ঐ ঘরে কয়েকজন শ্রমিক থাকতেন। ঘটনার পর থেকেই তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। ঐ নারীর লাশ শনাক্ত করতে হাতের বালা কাপড় ও চুল থেকে নমুনা সংরক্ষণ করে সিআইডির ল্যাবে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের পর ঐ নারীর খোঁজে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা, নরসিংদী, কক্সবাজার ও নারায়ণগঞ্জ থেকে স্বজনরা ঢাকা মেডিকেল কলেজে আসেন। গত ২০ ডিসেম্বর কক্সবাজারের কুতুবদিয়া এলাকা থেকে নূর হোসেন ও তার স্ত্রী শফিদা বেগম আসেন তাদের নিখোঁজ মেয়ের সন্ধানে। যাত্রাবাড়ী থানায় সংরক্ষণ করা হাতের দুটি বালা দেখে শফিদা বেগম শনাক্ত করেন সেগুলো তার মেয়ে আমেনা খাতুনের। পরে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজে লাশের পায়ের আঙুল দেখে কিছুটা নিশ্চিত হন যে এটি তাদের মেয়ে আমেনা খাতুনেরই লাশ। পরবর্তীতে পুলিশ আমেনা খাতুনের বাবা ও মায়ের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার জন্য সিআইডির ডিএনএ ল্যাবে পাঠায়।

যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, কুতুবদিয়া থেকে আসা ঐ দম্পতির কাছ থেকে আমেনা খাতুনের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণ করে জানা যায়- আমেনার মোবাইলটি চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানাধীন স্টেশনে রোড এলাকায় আছে। পরে ৮ জানুয়ারি চট্টগ্রামের স্টেশন রোড এলাকা থেকে মোবাইলসহ আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরো জানান, আক্তারের দেওয়া জবানবন্দি অনুসারে দুইদিন পর মোবাইলের মালিক আমেনার স্বামী বাদশাকে গ্রেফতার করা হয়। তখন শনাক্ত হয় যে আমেনা খাতুনের লাশ রাউজান থানা পুলিশ গত ২০ নভেম্বর একটি সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। রাউজানে লাশ উদ্ধারের বিষয়টি আমরা পরে আমেনার বাবা-মাকে জানাই। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ মর্গে গিয়ে তাদের মেয়ের লাশ শনাক্ত করে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বাদশা জানান, কক্সবাজারে শুঁটকি ব্যবসায়ী নূর হোসেনের মেয়ে আমেনা খাতুনের সঙ্গে পরিচয়ের পর গত ১৫ নভেম্বর তারা বিয়ে করেন। বাদশা চট্টগ্রামে প্রাণ গ্রুপের সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করেন। বিয়ের পর তারা কোতোয়ালি থানা এলাকায় ৩ হাজার টাকায় একটি টিনশেড বাসা ভাড়া নেন। ১৯ নভেম্বর আমেনা, বাদশা ও আক্তার সিএনজিতে করে কাপ্তাই হ্রদের দিকে ঘুরতে যান। এক পর্যায়ে রাত ৯টার দিকে আক্তারের সহায়তায় আমেনার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন বাদশা। পরে লাশটি রাউজান রোডের একপাশে ফেলে পালিয়ে যান।

যাত্রাবাড়ী থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুকিত হাসান বলেন, ময়লার স্তুপ থেকে নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি তদন্ত করতে গিয়ে চট্টগ্রামের রাউজান এলাকায় আরেক নারী হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে। তবে প্রথম নারীর পরিচয় এখনো জানা যায়নি। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।

সূত্র : ডেইলি বাংলাদেশ

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles