4.9 C
Toronto
সোমবার, মার্চ ২৪, ২০২৫

আমাদের জিরো পয়েন্ট ‘৭১

আমাদের জিরো পয়েন্ট ‘৭১ - the Bengali Times
আমাদের জিরো পয়েন্ট ৭১

যে একাত্তর চেনে না, একাত্তরকে নিয়ে এক নিঃশ্বাসে এক ঘণ্টা কথা বলতে পারে না, আপাতত তাকে বাংলাদেশী না হলেও চলবে। তিনি দেশহীন।

যদি নেতাগুলো মানুষ না হয়, আর অমানুষগুলো হয় নেতা, তাহলে  হয়তো ক্ষণিকের জন্য বদলে যাবে আমাদের চেতনা। মিনমিনে বাংলাদেশী যারা কিংবা বাংলাদেশ বিদ্বেষীদের শেষ অস্তিত্ব পালিয়ে যেতেই আবারো সূর্য উঠবে পূর্ব দিগন্তে।

- Advertisement -

কেন একাত্তরের কথা বলছি? বলছি এই জন্য যে, সব কিছুর একটা কেন্দ্রবিন্দু থাকে। যাকে জিরো পয়েন্ট বলে। যেমন বড় বড় শহরগুলোতে জিরো পয়েন্ট বলে একটি জায়গা থাকে। আমাদের শরীরেও আছে একটি জিরো পয়েন্ট। ঘরের মধ্যেও পাবেন জিরো পয়েন্ট। বাংলাদেশের জিরো পয়েন্ট হল ১৯৭১। অর্থাৎ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ।

ব্যাপারটা এভাবে ভাবুন। অনেক আগে থেকে শুরু হওয়া আমাদের শিল্প-সাহিত্য-সঙ্গীত, আমাদের অভীষ্ট, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের কিংবদন্তী সব একাত্তরের দিকে ধাবিত হচ্ছিল। বাঙালি জাতি পায়ে পায়ে এগিয়ে এসেছিল একাত্তরের দিকে। কিন্তু জানতো না কবে আসবে একাত্তর। আমাদের পূর্বপুরুষেরা একাত্তরে পৌঁছাতে পারেনি তবু তাদের যাত্রা ছিল। আমরা ভাগ্যবান, আমরা আসতে পেরেছিলাম আমদের জিরো পয়েন্টে। শিল্প, সাহিত্য, সঙ্গীত তথা বাঙ্গালির সংস্কৃতিতে যে শক্তি, সেই শক্তি দিয়েই আমরা একাত্তরে লড়াই করেছি এবং সেখান থেকে প্রাপ্য ফলাফল দিয়ে ভবিষ্যৎ গড়ে যাচ্ছি। আমাদের সব অতীত এসে একাত্তরে মিশেছে এবং একাত্তর থেকেই আমাদের ভবিষ্যৎ শুরু। ’৭১ বাঙালিদের জিরো পয়েন্ট।

যদি কেউ একাত্তরের আওয়াজ শুনতে না পান, যদি জয় জয় শব্দে ঘুম না ভাঙ্গে, যদি একাত্তরের প্রয়োজনে রাজপথে নেমে আসতে পিছুটান আসে, তাহলে মনে রাখবেন, পথে না এলে পথ যাবে না ঘরে। যে মানুষ সব কিছু পাবার আশায় হাত গুটিয়ে বসে থাকে, সে নিজের গড়া কিছুই পায় না হাতে।

আপনারা যখন চায়ের আসরে বলেন ‘ঐ সেই একাত্তরের কথা বলছেন? কিংবা বলেন ‘একই কথা আর কত শুনবো, একাত্তর একাত্তর’। মনে রাখবেন আমরা সাথে সাথেই বুঝে ফেলি আপনি কোথাকার কে? কতটুকই রঙ মাখা সামাজিক ইঁদুর আপনি। আপনার ঐ শাড়ি-চুড়ি, কোট-টাই সবই কিছু তখন দুর্গন্ধ ছড়ায়। আপনি তখন কেউ-না হয়ে পড়েন।

আপনার তলদেশ থেকে যদি বাংলাদেশ নামটি সরিয়ে নেওয়া হয় তখন আপনি কোথায় যাবেন। আপনি তখন ভাসমান। যদি বাংলাদেশী হন তবে একাত্তরের কথা বলেন। কম করে হলেও, এক নিঃশ্বাসে এক ঘণ্টা। সেটা যদি না পারেন তবে বুড়িগঙ্গায় ডুবে মরেন। হা, এই দুর্গন্ধই আপনার পুরস্কার।

স্কারবোরো, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles