15 C
Toronto
বুধবার, মে ৮, ২০২৪

‘স্যার তাড়াতাড়ি আহুন, একেবারে শেষ কইরা দিছি’

‘স্যার তাড়াতাড়ি আহুন, একেবারে শেষ কইরা দিছি’ - the Bengali Times
ছবি সংগ্রহ

শনিবার রাত সাড়ে ৮টা। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানার ওসির কক্ষে থাকা এসআই সাজ্জাদ হোসেনের মোবাইল ফোন বেজে উঠল। অপর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তির কথা শুনে ওসি আজহারুল ইসলাম সরকারের দিকে ফোন এগিয়ে দিলেন এসআই সাজ্জাদ। ফোনে লাউড স্পিকার দিয়ে ওসি হ্যালো বলতেই পুরুষ কণ্ঠে একজন বলতে লাগল, ‘স্যার, তাড়াতাড়ি আহুন, একেবারে শেষ কইরা দিছি। আমি পলামু না। বইয়া রইছি’। ফোনে ঠিকানাও বলে দিল সে।

ঠিকানা অনুযায়ী ওই স্থানের দূরত্ব ঘাটাইল সদর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার। দ্রুত পুলিশ পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন ওসি। মিনিট দশেক পর একই নম্বর থেকে আবারও ফোন। এবার ওই ব্যক্তি বলল, ‘তাড়াতাড়ি আহুন। নইলে কিন্তু নিজেই নিজেরে শেষ কইরা দিমু।’

- Advertisement -

স্ত্রী মিনারা বেগমকে গলাটিপে (২২) হত্যা করে এভাবেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের পণ্ডিতকাছড়া গ্রামের আমিনুল ইসলাম। সে ওই গ্রামের শামসুল হকের ছেলে। পরে রাতেই পুলিশ লাশ উদ্ধার এবং আমিনুলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

আমিনুলের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দেড় বছর আগে উপজেলার মমরেজ গলগন্ডা গ্রামের মুন্নাফ মিয়ার মেয়ে মিনারার সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় আমিনুলের। সে পেশায় অটোরিকশা চালক। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে কলহ লেগে থাকত মিনারার। শনিবার দুপুরে গাছের শুকনো পাতা (জ্বালানি) নিয়ে বউ-শ্বাশুড়ির মধ্যে ঝগড়া হয়। এ নিয়ে দুপুর থেকে না খেয়ে থাকেন আমিনুলের বাবা-মা। সন্ধ্যায় আমিনুল বাড়ি ফিরলে ঝগড়ার বিষয়টি মা তাকে জানান। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়।

আটকের পর আমিনুল পুলিশকে জানায়, কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমিনুলের মাকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করে মিনারা। আমিনুল তা সহ্য করতে না পেরে স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা করে থানায় ফোন দেয়। এর আগেও আমিনুল দুটি বিয়ে করেছিল। পারিবারিক কলহের কারণে সেই দুই স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়।

ওসি আজহারুল ইসলাম সরকার বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায়, বাড়ির পরিবেশ স্বাভাবিক। কেউ বুঝতেই পারেনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি। আমিনুল ঘরে দরজা দিয়ে বসে ছিল। পরে পুলিশ গিয়ে পরিচয় দিলে সে দরজা খুলে আত্মসমর্পণ করে।

ওসি জানান, এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমিনুল নম্র-ভদ্র ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মুন্নাফ মিয়া বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles