21.9 C
Toronto
রবিবার, মে ১৯, ২০২৪

অপ্রয়োজনীয় হালনাগাদ

অপ্রয়োজনীয় হালনাগাদ

গত ৩ রা মে টরেন্টোর স্হানীয় সময় রাত ৯টায় কানাডার রাইটার্স ইউনিয়ন অব কানাডা, কানাডা আর্টস কাউন্সিলের উদ্যোগে এবং সাহিত্যিক, লেখক, গবেষক, সমালোচক, উপস্থাপক সুব্রত কুমার দাসের আয়োজনে ফেসবুক লাইভে “কানাডার বাঙালি লেখকদের নতুন গ্রন্থ” অনুষ্ঠিত হল। এতে অংশগ্রহণকারী লেখকদের সংখ্যা ছিল তেরোজন।

- Advertisement -

তারা হলেন – রাকীব হাসান, আমি (অতনু দাশ গুপ্ত), সুশীল কুমার পোদ্দার, কাজী হেলাল, রোকসানা পারভীন, মম কাজী, তাসমিনা খান, জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীনউদ্দিন, ভ্যালেন্তিনা অপর্ণা গোমেজ, মোস্তফা আকন্দ, ড. ইসমেত আরা মুন, মোস্তফা হক এবং ড. জান্নাতুল নাইম।
শুরুতে তিনজন বয়সে প্রবীণ কিন্তু কর্মে নবীন লেখকদের বইয়ের কথা সবাইকে অবহিত করেন সম্মানিত উপস্থাপক সুব্রত কুমার দাস। তারা হলেন – ঝর্ণা চ্যাটার্জী, ড. দিলীপ চক্রবর্তী এবং সুজিত কুসুম পাল।
এনাদের কাউকেই ব্যক্তিগতভাবে আমার প্রবীণ মনে হয় না! এনারা চির নবীন এবং সবসময়ই অতীব আর্কষণীয়।
প্রথমেই উপস্থাপক মহাশয় আমাদের তিনজন লেখকের বইয়ের কথা দিয়ে অনুষ্ঠানের যাত্রা শুরু করেন।

ঝর্ণা চ্যাটার্জী (একটি বাঙালি মেয়ের কানাডার জীবন কাহিনি) রচিত বইগুলোর কথা একে একে আমাদের সামনে নিয়ে আসেন সঞ্চালক সুব্রত কুমার দাস। এতে তার জীবনের গতিপথ তিনি তুলে ধরেছেন। তখনকার সময়েও তিনি শতভাগ বাঙালীয়ানা বজায় রেখে শাড়ি পরে চাকরিতে যোগ দিতেন। প্রবাসে থেকেও তার নাড়ির প্রতি অমোঘ টান সত্যিই অসাধারণ!

তার আরও রচনার মধ্যে রয়েছে – তুলনা তার নাই,
Earth – from North to South, It’s a wonderful world, ভালোবাসার গল্প, সন্ধ্যার আগে।
তিনি এতদিন ধরে লিখে চলেছেন তা নিজের অগোচরে থেকে যাওয়ায় কিছুটা দুঃখ এবং উচ্ছ্বাস প্রকাশও করেন উপস্হাপক কারণ তার সাহিত্যিক পদচারণা অবশেষে আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।

ড. দিলীপ চক্রবর্তীর বইয়ের কথা বলতে গিয়ে সঞ্চালক তার জিন নামের পেছনের কিছু মজার তথ্য জানালেন। “Jin – Memoir of an Octogenarian Canadian Bengali” এটি তার লিখিত সাম্প্রতিক সময়ের রচনা। শ্রদ্ধেয় দিলীপ চক্রবর্তীর ডাক নাম আমি দিয়েছি – ‘হাসির জাদুকর’। গত বছর নতুন লেখকদের বই নিয়ে অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে তার সরব উপস্থিতি এবং অনুষ্ঠান শেষে কবিতা পাঠ উপস্থিত সবাইকে হাসিমুখে বাড়িতে পাঠিয়েছে। আমি নিজে অত্যন্ত খুশি মনে বাড়ি ফিরে গেছি। সাতাশি বছরের এই যুবকের সাথে টিফাতেও আমার সাক্ষাৎ করার সৌভাগ্য হয়েছিল। সেখানেও তিনি হাস্যরসে মঞ্চ আমোদিত করেছিলেন।

উল্লেখ্য, আলোচ্য বইটির ভূমিকা লিখেছেন ২০২৩ সালের টিফার (TIFA- Toronto International Festival of Authors) সম্মানিত মডারেটর সুব্রত কুমার দাস।

তিনজনের অন্যতম আরেকজন গবেষক সুজিত কুসুম পাল। তার বই “ইয়েটসের কবিতায় নারী ও নিকুঞ্জ” এর কথা উল্লেখ করেন উপস্থাপক। এটির বর্তমানে তৃতীয় সংস্করণ চলছে। টরেন্টো থেকে এর প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৬ সালে। বাংলাদেশে তার রচিত এই বই অনার্স-মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের অন্যতম শীর্ষ বাছাই করা একটি বই।

সুব্রত কুমার দাসের এ বছরে প্রকাশিত দুইটি বই – “হীরক জয়ন্তী – সুব্রত কুমার দাস” এবং “A Wonder Boy of Intellect” এর সম্পাদনার গুরু দায়িত্ব পালন করেছেন সুজিত কুসুম পাল। এছাড়াও দীর্ঘ মেয়াদী সময়কাল ধরে তিনি টরেন্টোর বাঙালি ভাষাভাষীদের মধ্যে তার গবেষণাধর্মী লেখালেখির জন্য খুব পরিচিত একটি মুখ।
এরপর উপস্থাপক সুব্রত কুমার দাস লেখকদেরকে একে একে লাইভে আমন্ত্রণ জানান এবং আলোচনার মধ্যবর্তী সময়ের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিসরে অনুষ্ঠানের দর্শকদের মন্তব্যগুলো পড়ে সকলকে একতাবদ্ধ করেন। ঝর্ণা চ্যাটার্জী, দিলীপ চক্রবর্তী এবং সুজিত কুসুম পাল – সকলেই ফেসবুক লাইভে অন্যান্য দর্শক শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাথে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

আজকের মূল অনুষ্ঠানের লেখকবৃন্দ –
রাকীব হাসান – কয়েকটি অক্ষর শব্দ করে

শিল্পী, কবি রাকীব হাসান দীর্ঘ সময়কাল ধরে লিখেন কিন্তু এবারই প্রথম তার বই প্রকাশিত হয়েছে। চল্লিশ বছর ধরে লিখে চলেছেন তিনি। মূলত আলোচ্য বইয়ে গত চার- পাঁচ বছরের লেখা এসেছে। ভবিষ্যতে আরও কাব্যগ্রন্হ প্রকাশ করবেন। ১৯৯০-৯১ সালে তিনি আঁকাআঁকি শুরু করেন। ছবি থেকে কবিতা লেখার অনুপ্রেরণা পান এবং পরে কবিতা থেকেও ছবি আঁকার চিন্তা তার মাথায় আসে। শব্দ এবং চিত্রকল্পের এই অবাধ সম্মিলনীর আন্দোলন তিনি উপভোগ করেন বলেই সবার সাথে তার কবিতা এবং চিত্রপটে ফুটিয়ে তোলা সকল ছবি ভাগাভাগি করার কাজটি পরম আনন্দে করে চলেছেন। কবি হলেও ছবি আঁকা তার পেশা। এ পর্যন্ত বিভিন্ন গ্যালারীতে তার ছবি প্রদর্শিত হয়েছে। ছবি নিয়ে এবং কবি হয়েই আমাদের রাকিব হাসান। তিনি আরও বলেন,শিল্পের জগতে যারা বিচরণ করেন,তাদের সৌন্দর্য সবার সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়া গুরুদায়িত্ব।

সুশীল কুমার পোদ্দার – অবলাচরণ
এটি তার প্রথম উপন্যাস। প্রাথমিকভাবে এটি লেখার তার কোন পরিকল্পনা ছিল না। মননের মাঝে আবছা আলোয় একটি চরিত্র অংকিত হয়েছিল তার। এক ব্যক্তিকে লেখক প্রত্যক্ষ করেন যিনি শীতকালীন সময়ে বিষণ্ণ হয়ে পড়তেন। এই রোগের নাম SAD – Seasonal Affected Disorder.

একইভাবে বর্তমান সময়ের প্রজন্ম FAD এ আক্রান্ত, যাকে বলা হয় Facebook Addicted Disorder.

আমরা ফেসবুকে কোন স্ট্যাটাস দিয়ে প্রত্যাশা করতে থাকি কতজন লাইক দিয়েছেন বা কয়টা কমেন্ট পড়লো এসব নিয়ে ক্রমশ আশাহত হতে থাকি! আরও মুষড়ে পড়ি যখন দেখি আমাদের অধিকাংশ পরিচিতজনেরা কোন মন্তব্যই করেননি বা লাইক বা কোন ধরনের অনুভূতি প্রকাশ করেননি। এতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা দিনের পর দিন আরও চূড়ান্তভাবে অসামাজিক হয়ে পড়তে থাকি এবং পরিচিতজনদের কাছে আসার পরিবর্তে ক্রমশ দূরে সরে যাই।

অতিরিক্ত প্রত্যাশার পারদে চাপার কারণে তখন পরিস্থিতি হিতে বিপরীত হয়ে পড়ে। মূলত অবলাচরণ এই চরিত্র অংকনের মাধ্যমে লেখক এই FAD কে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন।
দ্বিতীয় পর্বের লেখা প্রথম কমেন্টে রয়েছে।
মূল লাইভ অনুষ্ঠানের লিংক –
https://www.facebook.com/share/p/U6GxMqznuXMWTDrS/?mibextid=qi2Omg

- Advertisement -
পূর্ববর্তী খবর
পরবর্তী খবর

Related Articles

Latest Articles