13.6 C
Toronto
সোমবার, মে ৬, ২০২৪

চিরকুটে লেখা ছিল ‌‘আমার পাশে রোকেয়ার কবর দিও মা’

চিরকুটে লেখা ছিল ‌‘আমার পাশে রোকেয়ার কবর দিও মা’
সংগৃহীত ছবি

গাজীপুরের শ্রীপুরে এক নব দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে মাওনা চৌরাস্তার মুলাইদ বেগুনবাড়ি এলাকার একটি বহুতল ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ থেকে ওই স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় তাদের বসতঘরের টেবিলের ওপর থেকে চিরকুট (সুইসাইড নোট) উদ্ধার করা হয়। পারিবারিক কলহের জেরেই এ আত্মহত্যার ঘটনা হতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

খবর পেয়ে কালিয়াকৈর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আজমীর হোসে শ্রীপুর মডেল থানা ওসি তদন্ত সাখাওয়াৎ হাসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

- Advertisement -

নিহত স্বামী ইসরাফিল হোসেন (২০) শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার হলদি গ্রামের মফিজুল হকের ছেলে ও স্ত্রী রোকেয়া আক্তার (১৮) ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার পস্তারি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে। ইসরাফিল ওয়ার্কশপ শ্রমিক আর রোকেয়া কাজ করতেন একটি গার্মেন্টসে।

নিহত রোকেয়ার ভাই মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ৭-৮ মাস আগে পরিবারের অমতে তারা বিয়ে করে। তাদের সম্পর্ক ভালোই চলছিল। সম্প্রতি ইসরাফিল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার তাদের বুঝিয়ে বাসায় আনা হয়েছিল। সকালে তাদের মৃত্যুর খবর পাই।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনরা জানান, মা-বাবা সঙ্গে পাশাপাশি ফ্লাটে বসবাস করতেন ইসরাফিল-রোকেয়া দম্পতি। ইসরাফিলের বাসাতে রান্নাবান্না ও খাওয়া দাওয়ার কাজ করতেন সবাই। আজ শুক্রবার সকালে ইসরাফিলের ফ্লাটের (রুমের) দরজা খোলা দেখে ভিতরে গিয়ে ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান বাবা মফিজুল হক। এ সময় রোকেয়ার মরদেহ পাশেই খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। স্বজনদের দাবি, স্ত্রী আগে কোনো কারণে আত্মহত্যা করায় স্বামী তা সহ্য করতে না পেয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। বেশ কিছু দিন ধরেই তাদের মাঝে পারিবারিক কলহ চলছিল। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হলে পুলিশ দুটি মরদেহ উদ্ধার করে।

টেবিলে পাওয়া চিরকুটে লেখা ছিল, ‘মা-বাবা আমাকে মাফ করে দিও, আমি তোমাদের সাথে থাকতে পারলাম না। আমার জান আমার জন্য ফাঁসিতে ঝুলেছে। তাই আমি থাকতে পারলাম না। আমি কাউকে দোষারোপ করি না। কারও কোনো দোষ নাই। আমার জান আমার জন্য অপেক্ষা করতাছে। সবাই ভালো থাকবা। মো. ইসরাফিল।’

এতে আরও লেখা ছিল, ‘মা আমার পাশে রোকেয়ার কবর দিও মা। মা আমি জানি না আমার জান কেন ফাঁস দিল। তার জন্য সম্পন্ন আমি দায়ী। এতে কারও কোনো দোষ নাই।’

শ্রীপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ সাখাওয়াৎ হোসেন জানান, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহের জেরেই এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। তবে আগে স্ত্রী আত্মহত্যা করে বসলে স্ত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টি স্বামী সইতে না পেরে তিনিও আত্মহত্যা করেন। আরও অধিকতর তদন্ত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পরিবারের সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে মরদেহ হস্তান্তর প্রক্রিয়া চালানো হবে।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles