নিহত ইমরান হোসেন।
সোনাগাজীতে টিকটক ভিডিও সংক্রান্ত ঘটনায় নির্যাতনের শিকার এক তরুণ আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাতে উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের পশ্চিম চরদরবেশ গ্রামে নিজ ঘরে ফাঁস লাগানো অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার সকালে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। নিহতের নাম ইমরান হোসেন। সে ওই এলাকার মো. মাঈন উদ্দিনের ছেলে। ইমরান পেশায় নির্মাণ শ্রমিক (রাজমিস্ত্রি) ছিল।
নিহতের পরিবার জানায়, ইমরানের বিছানার নিচ থেকে তার লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করেছেন তারা। যেখানে মৃত্যুর কারণ ও নির্যাতনকারী আটজনের নাম লিখে গেছে সে।
চিরকুটের বরাতে ইমরানের পরিবার আরও জানায়, কয়েকদিন আগে উপজেলার পশ্চিম চরদরবেশ ও আদর্শগ্রাম এলাকার মুছাপুর সড়কে গিয়ে ইমরান একটি টিকটক ভিডিও তৈরি করে। ভিডিও করার সময় ভুলবশত স্থানীয় এক তরুণীর ছবি উঠে যায়। সেই ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে তরুণীর পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় কয়েকজন যুবক তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এতে ইমরান ভুল স্বীকার করে তাদের কাছে ক্ষমা চান। এরপরও ওই যুবকরা তাকে শারীরিক নির্যাতন করেন।
স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে চরদরবেশ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য পলান উদ্দিন বলেন, ‘কয়েকদিন আগে টিকটক ভিডিও করার সময় স্থানীয় এক মেয়ের ছবি ভিডিওতে থাকা নিয়ে ওই মেয়ের ভাইসহ সাত-আটজন ইমরানকে মারধর করেছেন। ইমরান তাদের কাছে বিষয়টির জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন। এরপরও গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় মসজিদে নামাজ আদায় করতে গেলে আবারও ইমরানকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়। তাদের নির্যাতন ও অপমান সইতে না পেরে ইমরান আত্মহত্যা করেছেন।’
ইমরানের বাবা মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে শ্রমিক। অপমান ও নির্যাতন সইতে না পেরেই সে আত্মহত্যা করেছে। এ ব্যাপারে আমি শিগগির মামলা করব। ইমরান চিরকুটে যেসব ছেলেদের নাম লিখে গেছে, তাদের আমরা চিনি। চিরকুটটি আমরা পুলিশকে দিয়েছি।’
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘১৮ বছরের ওই ছেলের মৃত্যু নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়ায় মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর পর তার বিছানার নিচ থেকে উদ্ধার হওয়া “সুইসাইড নোটে” উল্লেখ করা ঘটনাটি পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছে। যাদের নাম উল্লেখ আছে, তাদের বিষয়েও পুলিশ খোঁজখবর নিচ্ছে।’