17.1 C
Toronto
রবিবার, মে ৫, ২০২৪

ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদ পেতে নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা

ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদ পেতে নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা

রাজবাড়ীতে ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদ পেতে দেখা করার কথা বলে এক নারীকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযুক্ত ৬ জনের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

- Advertisement -

আজ রোববার দুপুরে রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জি.এম. আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের বিকয়া গ্রামের মো. মাহফুজ মন্ডল (২১), পাংশা উপজেলার বিকয়া গ্রামের রবিউল খান (২১), হাকিম মন্ডল (২০), আশুরহাট গ্রামের হাসিব খান (২০)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, গত ১৭ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টার সময় কালুখালী উপজেলার পাতুরিয়া গ্রামের ফজলু মন্ডলের পাটক্ষেত থেকে একটি অজ্ঞাত মৃতদেহের মাথার খুলি, চুল ও হাড়সহ দেহের বিভিন্ন অংশ পুলিশ উদ্ধার করেন। পাশে পড়ে থাকা ভ্যানেটি ব্যাংগ, পায়ের স্যান্ডেল, পরিহিত জামা ও ওড়না দেখে পাতুরিয়া গ্রামের আবুল কাশেম ব্যাপারীর ছোট মেয়ে জান্নাতুল নেছা (১৯) বলে সনাক্ত করেন। জান্নাতুল নেছা গত ৫ জুলাই দিবাগত রাতে বাড়ির কাউকে কিছু না বলে নিখোঁজ হন। মরদেহ সনাক্ত হওয়ায় এ ব্যাপারে কালুখালী থানায় গত ১৮ জুলাই মামলা করা হয়।

মামলার প্রেক্ষিতে গত ৮ আগস্ট কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের বিকয়া গ্রামের মো. মাহফুজ মন্ডলকে (২১) গ্রেপ্তার করেন। সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে শনিবার পাংশা উপজেলার বিকয়া গ্রামের রবিউল খান (২১), হাকিম মন্ডল (২০), আশুরহাট গ্রামের হাসিব খানকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সকলেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

পুলিশ সুপার বলেন, জান্নাতুল নেছা আবুল কাশেম ব্যাপারীর ৭ মেয়ের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। তার ৪ বছর আগে বালিয়াকান্দি উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের জসিম বেপারীর ছেলে কুদ্দুস বেপারীর সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের ৩ বছর পর তাদের বিচ্ছেদ হলে সে তার সন্তানসহ বাবার বাড়িতে বসবাস করত। প্রায় ৬ মাস গার্মেন্সে চাকুরি করেছেন তিনি। গত ৩ জুলাই মাহফুজ মন্ডলের সঙ্গে জান্নাতুল নেছার ফেসবুকে পরিচয় হয় এবং ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কথোপকথনের একপর্যায়ে তাদের প্রেমের সম্পর্ক হয়। জান্নাতুল নেছাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ি থেকে বের করে এনে ধর্ষণ করার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী মাহফুজ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করার জন্য প্ররোচিত করতে থাকেন। এক পর্যায়ে জান্নাতুল বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হন। গত ৫ জুলাই রাত সাড়ে ১২টার সময় তার নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে বাড়ির সামনে রাস্তায় আসেন। মাহফুজকে দেখে জান্নাতুলের পছন্দ হয় না। কারণ সে ছিল প্রতিবন্দী। তখন রবিউল জানায় যে, ম্যাসেঞ্জারে সে নিজে কথা বলেছে। বাকি সকলে তার বন্ধু এবং তাদের বিয়েতে সহায়তা করবেন। লোকচক্ষুর অন্তরালের জন্য জান্নাতুলকে পাটক্ষেতের মধ্য দিয়ে নিয়ে যান এবং তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী দলবেধে ধর্ষণ করেন। তখন জান্নাতুল তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করার কথা বললে তারা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ফেলে যান। তার ব্যবহৃত মোবাইলটিও ফেলে দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. সালাহউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) রেজাউল করিম, সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) সুমন কুমার সাহা, কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণ বন্ধু চন্দ্র বিশ্বাসসহ জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles