9.1 C
Toronto
সোমবার, মে ৬, ২০২৪

বৃদ্ধকে ‘প্রস্রাব-থুতু চেটে খেতে’ বাধ্য করেন পুলিশ কর্মকর্তা!

বৃদ্ধকে ‘প্রস্রাব-থুতু চেটে খেতে’ বাধ্য করেন পুলিশ কর্মকর্তা!

মাদারীপুরের শিবচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে পরোয়ানাভুক্ত আসামিকে থানায় আটকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করে ভুক্তভোগী আকমান মাদবর (৬০) বাদী হয়ে মাদারীপুর আদালতে মামলা করেছেন। মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

- Advertisement -

আজ রোববার দুপুরে জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলাটি করা হয়। পরে আদালতের বিচারক অভিজিৎ চৌধুরী মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী আকমান মাদবর শিবচর উপজেলার সরকারের চর এলাকার বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন কৃষক। এই বৃদ্ধের অভিযোগ, তাকে প্রস্রাব ও থুতু চেটে খাওয়ানো, ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি, বেঞ্চের নিচে মাথা ঢুকিয়ে বাম হাত ভেঙে ফেলাসহ অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়।

তবে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, বাদী আকমান মাদরব একটি মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি ছিলেন। তাকে গ্রেপ্তার করার কারণে তিনি ক্ষুদ্ধ হয়ে পুলিশের নামে এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন।

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্র জানায়, মামলার বাদী আকমান মাদবর জমিজমা বিরোধের জেরে হওয়া মামলার ৪ নম্বর আসামি। আদালত আকমান মাদবরসহ আরও চার আসামির নামে পরোয়ানা জারি করলে গত ৯ জুলাই তাদের গ্রেপ্তার করেন শিবচর থানার উপপরিদর্শক নূর মোহাম্মদ। পরে আসামিদের শিবচর থানায় পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়।

তাদের মধ্যে আকমান মাদবরকে থানার দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে নিয়ে যান নূর মোহাম্মদ। পরে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন চালানো হয়। এতে তার বাম হাত ভেঙে যায়। পরে তাকেসহ ওই চারজনকে আদালতে হাজির করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠায়। এক দিন কারাভোগ শেষে গত ১০ জুলাই তারা জামিনে মুক্তি পান। জামিন পাওয়ার ছয়দিন পরে পুলিশ কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন আকমান মাদবর।

মামলার বাদী আকমান মাদবর বলেন, ‘পুলিশের এসআই নূর মোহাম্মদ আমাকে থানার একটি রুমে নিয়ে বেঞ্চের নিচে মাথা দিয়ে সারা শরীরে লাঠি দিয়ে পেটায়। পরে প্রস্রাব ও থুতু ফেলে আমাকে দিয়ে প্রস্রাব ও থুতু চাটাইছে। একপর্যায়ে আমাকে দিয়ে আব্বা ডাকায় ওই পুলিশ। এই ঘটনা কাউকে বললে আবারও নির্যাতন চালানোর হুমকি দেয়। ওই পুলিশ আমাগো প্রতিপক্ষের সঙ্গে হাত করে আমারে নির্মমভাবে মারছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’

বাদীপক্ষের আইনজীবী জামাল হোসেন বলেন, ‘থানায় বসে কোনো আসামিকে এভাবে নির্যাতন করার আইনগত অধিকার কারও নেই। ভুক্তভোগীর করা মামলায় আদালত আমলে নিয়ে পিবিআইর পুলিশ সুপারকে আগামী ১৬ আগস্টের মধ্যে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা ন্যায়বিচার কামনা করছি।’

শিবচর থানার এসআই নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘একটি মামলায় চারজনের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকায় আসামিদের গ্রেপ্তার করে নিয়ম অনুযায়ী আদালতে চালান করেছি। তাদের সঙ্গে নির্যাতনের কোন ঘটনা ঘটেনি। গ্রেপ্তারের তিন দিন পরে তারা একটি অভিযোগ হাজির করল। তারা পুলিশ ও আমার সুমান ক্ষুণ্ন করার জন্য এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন। জমিজমার বিরোধের জের ধরে তারা নিজেরা মারামারি করে আহত হয়েছেন। এখন সেই দোষ আমাদের দিকে দিচ্ছেন। তাদের অভিযোগের বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই।’

জানতে চাইলে শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ যে কেউ করতে পারে। তবে যেহেতু আদালতে মামলা হয়েছে, সেটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। ঘটনা সত্য নাকি মিথ্যা—সেটা আদালতেই প্রমাণ হয়ে যাবে। আদালত যেহেতু পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে, পিবিআই বিষয়টি তদন্ত করে দেখুক। তদন্তধীন বিষয়ে এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারছি না।’

সূত্র : আমাদের সময়

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles