7.7 C
Toronto
শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

জয়তু বাংলা রক ফেস্ট ২০২২

জয়তু বাংলা রক ফেস্ট ২০২২
ফাইল ছবি

সেই আশির দশকে ফিরে গেলাম গত সন্ধ্যায়। যাওয়া হতো না যদি না রিংকো, সৌজন্য ভিআইপি টিকেটটা না দিত। ধন্যবাদ রিংকো যাকে প্রথমে মঞ্চে ডেকে আনি কোন এক ফোবানার মঞ্চে। সে অনেক অনেকদিন আগের কথা। সেদিনের রিংকো( আমাদের দেশেবিদেশে গ্রুপের কর্নধার নজরুল মিন্টো ভাইয়ের অনুজ) এলো, দেখলো এবং জয় করলো!
হল ভর্তি মানুষ নিয়ে মানুষ ব্যান্ড প্রথম মঞ্চে আসে।

ড্রামের নান্দনিক ঝংকার তোলে প্রিয় রাজিব। শাশ্বত লালন, আউল বাউল মাটির গানের লাইন আপ এই দলের। সামী সাত্তার, পল, রাগিব, টুনটুন। দুর্দান্ত উপস্থাপনা।
এরপর এলো ঝড় ব্যান্ড। গাইলো আইয়ুব বাচ্চু, জেমস এর গান। বিজু,তপু,রানা, মুকিত এবং মৃদঙ্গ এর দল ঝড়।

- Advertisement -

মিলনায়তনে যখন ঢুকে ছিলাম তখন শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ছিল বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা। ঝড়ের বেগে উষ্ণতা বাড়তে লাগলো। শত শত তারুণ্যের উত্তাপে সেলসিয়াস ফারেনহাইট বাড়ছে তখন।
আহা যান্ত্রিক! মেহরাব ভাই আর চিনু ভাবীর একমাত্র পুত্র অভীক যেভাবে বাজালো মন ভরে গেল। রিংকো গাইলো লেইসফিতাসহ নিজেদের কম্পোজিশনের একটি গান। রিংকো অনেকবেশি জেমস এর গান কাভার করে। ওদের লাইন আপ আরোও ছিলো জারিফ, বাপ্পী, আরিফ।

ব্যান্ড ফোর হলো ওরা চারজন রিয়াদ, বেলাল, সোহেল আর সৌরভ। রিয়াদ এর গায়কী আমার খুব ভালো লাগে। আর মানুষ হিসেবে সে অমায়িক। খুব ভালো লাগলো শুরুতে প্রজন্ম এর প্রতিনিধির সঙ্গীত পরিবেশনায়। দ্রুত শেষ হলো ব্যান্ড ফোর এর আয়োজন। ভাবলাম ওরা কি কম গাইলো। শুনেছিলাম ৬টি দল ৬টি করে গান করতে পারে। ভাল লাগা তো দ্রুত শেষ হয়। সেটাই হয়েছে।
শূন্য ব্যান্ড এর গানে তারুণ্যের উচ্ছ্বাস চোখে পড়ার মতো। শচীন দেব বর্মন এর লাইনগুলো শুধু জানি, চেনা। বাকি সব অচেনা আমার কাছে। আমরা বন্ধুরা যেমন আযম খানের সাথে চিৎকার দিয়ে গাইতাম অভিমানী, রেললাইনের কিংবা সোলস এর তপন এর সাথে গাইতাম মন শুধু মন ছুঁয়েছে। তেমনি আমার সামনের পেছনের সারি সারি ছেলেমেয়েরা পুরো গান গাইছে শূন্য ব্যান্ডের প্রতিটি গানে। তারুণ্যের এই উত্তাপ, উচ্ছ্বাস দেখে বারংবার ফিরে ফিরে যাচ্ছি ছিলাম আশিদশকে। জানলাম ফুয়াদ আল মুক্তাদির একজন এসময়ের বিশাল তারকা শিল্পী।

সুর ব্যান্ড একটু অন্যরকম। মা মেয়ে গান করেন। তনুকা আর ময়ূখ। ওরা বাংলা ইংরেজি হিন্দি সব ভাষাতেই গান করে । আগে এই ব্যান্ডের আরোও পরিবেশনা শুনেছি। মাহবুব গুণি ছেলে। সব ধরনের গান করে। লাইন আপে ছিলো সামস, নওশাদ, আরসালান। ওরা যখন ধরলো মহীনের ঘোড়াগুলির সেই পুলক জাগা শত শত বার শ্রুত “…… তুমি আমি যাই সরে সরে …. ” তখন আর আমাদের পায় কে। সকলেই আ, আ, আহা করতে থাকি। কবীর সুমন, নচিকেতা যতটা পেয়েছেন রঞ্জন / গৌতম সেই অর্থে তেমনটা পাননি। দিয়ে গেছেন অনেক নিজের ভাষায় বিদেশী ঢংয়ে। তাদের গানে কথা আর সুর, গায়কীতে পেতাম মুগ্ধতা।

বাংলা রক ফেস্ট ২০২২ অনুষ্ঠানে আমার জানামতে দুজনের টরন্টোতে অনুষ্ঠান করার অভিষেক হয়েছে।
এক. জারিফ চৌধুরী ( কবি আসাদ চৌধুরী ও সাহানা চৌধুরীর পুত্র), দুই. মুনমুন ( অনেক ভাল করে মেয়েটি – হতেই হবে আমার দোস্ত মিজানের প্রিয় শালী বলে কথা!)। টরন্টোর সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সুস্বাগত দুজনকেই!

যাযাবর তো সেইকবে বলে গেছেন বিজ্ঞান আনবে বেগ। আমরা হারাবো আবেগ।

পুরোটা সত্যি নয়। আবেগ হারায় না। তাইতো অন্য সকলের মতো এত আবেগতাড়িত হই অসম্ভব সুন্দর, সার্থক এবং সাফল্যজনক বাংলা রক ফেস্ট ২০২২ দেখতে পেরে।
জয়তু বাংলাদেশী ব্যান্ডস্ এসোসিয়েশন অব কানাডা (বিবিএসি)।
জয়তু পৃষ্ঠপোষক, বিজ্ঞাপনদাতা, মিডিয়া পার্টনার, সেচ্ছাসেবক, মিলনায়তন ব্যবস্থাপক, আলো – শব্দ নিয়ন্ত্রক।
জয়তু দর্শকশ্রোতা, তারুণ্যের জয় হোক।
একদা আমিও তরুণ ছিলাম।

পুনশ্চ : অনেকের নাম মনে নেই, জানি না বলে তথ্যের অনেক কমতি। তবে ভালবাসা তাদের প্রতি অফুরন্ত।

ইস্টইয়র্ক, অন্টারিও, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles