পারিবারিক কলহের কারণে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া স্ত্রী হাজেরাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে হতাশায় নিজের ঘরের মেঝেতে কবর খুঁড়লেন জাফর নামে এক ব্যক্তি। গত শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে সদর উপজেলার ৫ নম্বর আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়ন ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কদমতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ সাইফুল ইসলাম জানান, ঢাকায় বিবাহের পর প্রায় এক যুগের সংসার জাফর ও হাজেরার। তাদের অভাবের সংসার জীবেনে প্রায়ই নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়া চলছিল। বনিবনা না হওয়ায় তারা এলাকায় চলে আসে কয়েক মাস আগে। এখানেও কলহের কারণে মাস খানেক ধরে তারা দুইজন আলাদা বসবাস করতে থাকে। চলতি সপ্তাহে এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদে দু’পক্ষের মধ্যে সালিস বৈঠকের কথা রয়েছে। এরমধ্যে হঠাৎ নিজ ঘরেই কবর খোঁড়ার খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে গিয়ে জাফরকে বোঝানোর চেষ্টা করি।
জাফর গাজী বলেন, ১৩ বছর আগে ঢাকায় বিয়ে হয় তার স্ত্রী হাজেরার সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই হাজেরা আমার কথার অবাধ্য ছিল। পরে আমরা বরগুনার গ্রামের বাড়িতে বসবাস শুরু করি। এখানেও কিছুদিন পরে পারিবারিক কলহ তৈরি হলে দুইজনে আলাদা থাকতে শুরু করি। এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে একাধিকবার সালিস করলেও হাজেরা তা মানতে চাইছে না। সর্বশেষ চলতি বছরের ২২ জুন বুধবার আমার সঙ্গে রাগ করে হাজের তার নিজ চায়ের দোকানে থাকতে শুরু করে। তাকে দোকান থেকে ঘরে ফেরত আনার একাধিক চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এখন নিজের কবর নিজেই খুঁড়তে শুরু করেছি।
এ বিষয় জাফরের স্ত্রী হাজেরার রয়েছে ভিন্ন অভিযোগ। তিনি বলেন, ১৩ বছর আগে বিয়ের সময় তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে জাফর। জাফরের আগের স্ত্রীকে তালাক না দিয়েই মিথ্যা তালাকনামা তৈরি করে তা দেখিয়ে বিয়ে করেন তাকে। এ সব নিয়ে ঝগড়া শুরু হলে গ্রামে চলে আসি। বর্তমানে সংসারে অমনোযোগী হওয়ায় প্রায় সময় ঝগড়া হতো। এখন আমি জাফরের সঙ্গে সংসার করতে কোনো রকমেই রাজি না।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাজি মোখলেচুর রহমান জানান, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে জাফর যাতে কোনো অঘটন না ঘটাতে পারে সেজন্য ঘর থেকে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে কদমতলা বাজারে নিয়ে আসা হয়েছে জাফরকে।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ আমাদের সময়কে বলেন, ঘটনা সাংবাদিকদের মাধ্যমে শুনেছি। কেউ কোনো অভিযোগ করেনি, লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।