8.2 C
Toronto
মঙ্গলবার, মে ৭, ২০২৪

প্রেম-বিয়ের নাটকের পর গোপন ভিডিও ফেসবুকে

প্রেম-বিয়ের নাটকের পর গোপন ভিডিও ফেসবুকে - the Bengali Times
প্রতীকী ছবি

তাজবিরুল ইসলাম সবুজ কাজ করত গাজীপুরের সালনার একটি পোশাক কারখানায়। অষ্টম শ্রেণির গণ্ডি না পেরোলেও নিজেকে পরিচয় দিত ‘গ্র্যাজুয়েট’। চাকরির পাশাপাশি সে ‘দৈনিক আজকের আলোকিত সকাল’ নামে স্থানীয় সংবাদপত্রের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে করছিল প্রতারণা। মানুষকে হুমকি ও ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করত। সেই সঙ্গে ভুয়া পরিচয়ে ও প্রেমের ফাঁদে ফেলে সে একাধিক বিয়েও করে। পরে বনিবনা না হলে নিজেদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের গোপন ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়।

অবশেষে সাংবাদিক পরিচয়ে এমন নানা অপকর্ম করে আসা সবুজকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন বলেন, ভুক্তভোগী একজন র‌্যাব-১ কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করেন, তিন বছর আগে সবুজ নামে এক ব্যক্তি সাংবাদিক পরিচয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাকে ভুয়া কাজির মাধ্যমে সাজানো বিয়ে করে। পরে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য ভিডিও করে রাখে। বনিবনা না হওয়ায় সম্প্রতি তাকে বিয়ে বিচ্ছেদের চিঠি দেন ওই নারী। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওইসব ভিডিও ভুয়া ফেসবুক আইডি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় সবুজ। এ ছাড়া সে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ ছায়াতদন্ত শুরু করে। গত সোমবার রাতে গাজীপুরের গাছা এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে দুটি ভুয়া সাংবাদিকের পরিচয়পত্র, দুটি ভুয়া টিন সনদ, ১১টি ভুয়া প্রাতিষ্ঠানিক আইডি কার্ড, তিন ধরনের ভিজিটিং কার্ড, একটি স্পাই ক্যামেরা, সাতটি এটিএম কার্ড, ছয়টি চেক বই, একটি পে-অর্ডার, একটি বিবাহের হলফনামা, একটি ভুয়া জীবনবৃত্তান্ত ফরম, একটি সেনাবাহিনীর ব্যবহূত বেল্ট, চারটি পেনড্রাইভ, দুটি মেমোরি কার্ড, ছয়টি মোবাইল ফোনসেট ও ৪১টি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়।

- Advertisement -

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, বিবদমান দু’পক্ষের সমস্যা সমাধানের মধ্যস্থতা করার জন্য টাকা দাবি করত সবুজ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে দাবি করে আইনি সমস্যা সমাধানের নামেও টাকা নিত। পাশাপাশি আইনি জটিলতা আছে বা আদালতে বিচারাধীন জমি উদ্ধারের নাম করে বিবদমান পক্ষের কাছ থেকেও সে টাকা আদায় করত। তার প্রতারণার কাজে ফজল, তোফাজ্জল, মাসুম, আলতাফসহ আরও কয়েকজন তাকে সহযোগিতা করত। সে শেখ শিমুল নামে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে এবং তার বিভিন্ন ব্যাংকে পাঁচটি হিসাব রয়েছে। ভিন্ন নামে সে দুটি টিন সনদ ব্যবহার করে আসছিল।

র‌্যাব জানায়, সবুজের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট। ২০০৫ সালে সে তার এলাকায় প্রথম এবং ২০১২ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করে। দুই স্ত্রীই এক বছর সংসার করে তাকে ডিভোর্স দেন। এরপর সে গাজীপুরে চলে আসে এবং একটি পোশাক কারখানায় কাজ নেয়। ২০১৪ সালে সে এক পোশাককর্মীকে বিয়ে করে। ২০১৮ সালে উত্তরখান মাজার তালতলা এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরির সময় তৃতীয় স্ত্রী থাকা অবস্থাতেই অবিবাহিত পরিচয়ে আরেক পোশাককর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। তাকে বিয়ের কথা বলে শারীরিক সম্পর্কের দৃশ্য গোপনে ভিডিও করে রাখে। একপর্যায়ে সে স্থানীয় মৌলভিকে বাসায় ডেকে এনে মৌখিকভাবে বিয়ে করে। বিয়ের কাবিননামার জন্য চাপ দিলে সে ভুক্তভোগীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles