10.2 C
Toronto
মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪

পানির কষ্টে জিম্মি নাবিকরা, সপ্তাহে দুবার করেন গোসল

MV পানির কষ্টে জিম্মি নাবিকরা, সপ্তাহে দুবার করেন গোসল

‘ছেলে জানিয়েছে, তারা খুবই পানির কষ্টে রয়েছে। এখন পর্যন্ত সপ্তাহে কেবল দুবার গোসলের সুযোগ পাচ্ছেন। সামনে হয়তো সপ্তাহে একবারের বেশি সুযোগ নাও পেতে পারে। আমার ছেলে তো ইঞ্জিন রুমে কাজ করে তাই তার কষ্ট অনেক বেশি’ কথাগুলো বলছিলেন এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি নাবিক আইনুলের মা লুৎফা আরা।

- Advertisement -

জলদস্যুরা গত শুক্রবার নাবিকদের বেশ কয়েকজনকে তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেয়। ওই দিন ইফতারের পর ছেলে আইনুল তার মায়ের সঙ্গে কথা বলে এসব জানান।

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) নাবিক আইনুল হকের মা লুৎফা আরা এসব তথ্য জানান।

জাহাজ মালিক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নাবিকদের দ্রুত মুক্তির ব্যাপারে আশ্বাস পেয়ে পরিবারগুলোর আশা ছিল, তাদের প্রিয়জনেরা হয়তো ঈদের আগেই দেশে ফিরবেন, অন্তত জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পাবেন। তবে তাদের অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়নি।

লুৎফা আরা জানান, ঈদের যে আনন্দ, সেই আনন্দের মন মানসিকতা আমাদের এখন নেই। দুইটা ছেলে ছাড়া আমার আর কেউ নেই।

২০২১ সালে কোভিড মহামারিতে স্বামীকে হারানোর পর দুই ছেলেই তার সবকিছু। বড় ছেলে আইনুল জাহাজের চাকরিতে যোগ দেন ২০১৫ সালে। বাবার মৃত্যুর পর তিনি একাই ধরেন সংসারের হাল। জলদস্যুদের কবলে জাহাজ এ খবর জানার পর থেকে চোখে ঘুম নেই এই মায়ের। এর মাঝে দুই বার বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।

তিনি বলেন, ডাক্তার ঘুমের ওষুধ দিয়েছেন, তারপরও ঘুম আসে না। কেবল দুশ্চিন্তা এসে ভর করে। ছোট ছেলেকেও সারাক্ষণ বাসায় থাকতে বলেছি ,একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বেশিক্ষণ বাইরে থেকো না।

দুই সপ্তাহ আগে জাহাজের মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রুপের শীর্ষ কর্মকর্তারা নাবিকদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ইফতারের আয়োজন করেন। সেখানে তারা পরিবারগুলোকে আশ্বস্ত করেন যে যত দ্রুত সম্ভব জিম্মি নাবিকদের ফিরিয়ে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা তারা করছেন।

লুৎফা আরা জানান, ওই আশ্বাসের পর আমাদের মনে হয়েছিল হয়তো ঈদের আগেই নাবিকেরা মুক্তি পাবেন। কিন্তু এখন তো মনে হচ্ছে আরও সময় লাগবে।

একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের মুক্তির বিষয়ে জলদস্যুদের সঙ্গে সমঝোতা প্রায় শেষ। জাহাজের মালিক পক্ষ এখন আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিপণ দেওয়ার বিষয়টি সুরাহা করার প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত। অবশ্য জাহাজের মালিক প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে এখনো চূড়ান্তভাবে কিছু জানায়নি।

কেএসআরএম গ্রুপের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, জলদস্যুদের সাথে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। তবে নাবিকদের মুক্তির বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো দিনক্ষণ বলা সম্ভব নয়। তবে তিনি জানান, ঈদের পর দ্রুততম সময়ে জাহাজ ও নাবিকদের মুক্তি এবং ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে মালিক কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরের উদ্দেশ্যে কয়লা নিয়ে যাওয়ার পথে ওই দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ (বাংলাদেশ সময়) সোমালিয়ার উপকূল থেকে প্রায় ৬০ নটিক্যাল মাইল দূরে বাংলাদেশি জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ে। জাহাজটি বর্তমানে সোমালি উপকূলের কাছে নোঙর করা।

 

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles