আমাজনের জঙ্গলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাপের সন্ধান মিলেছে। লম্বায় ২৬ ফুট। নাম নর্দার্ন গ্রিন অ্যানাকোন্ডা। এটি নিঃশ্বাসেই গিলে ফেলতে পারে আস্ত মানুষ।
সাপটির ওজন গড় মানুষের থেকে তিনগুণ, প্রায় ২০০ কেজি। এটি এতটাই বড় যে, অন্য কোনো বড় প্রাণীকে সরাসরি গিলে ফেলতে পারে।
বন্যপ্রাণী উপস্থাপক অধ্যাপক ফ্রিক ভঙ্ক এটি ব্রাজিলের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে খুঁজে পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
এই সবুজ অ্যানাকোন্ডার একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে এরইমধ্যে। গ্রিন অ্যানাকোন্ডার সম্পর্কিত একটি গবেষণা বৈজ্ঞানিক জার্নাল ডাইভারসিটিতে ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয়েছিল।
এরপরেই ৪০ বছর বয়সী ডাচ জীববিজ্ঞানী অধ্যাপক ভঙ্ককে বিশালাকার অ্যানাকোন্ডার সঙ্গে ঐ ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। এটি দেখলে ভয়ে আঁতকে উঠবেন।
The world’s largest snake has been discovered in the Amazon Rainforest: The Northern Green Anaconda measures 26 feet long and weighs 440 lbs – and its head is the same size as a human’s. pic.twitter.com/XlaDk0qVYt
— Denn Dunham (@DennD68) February 21, 2024
ঐ ভিডিওটিতে অ্যানাকোন্ডার পাশে সাঁতার কাটতে দেখা গিয়েছিল ভঙ্ককে। ভিডিওটি শেয়ার করে তিনি বলেছেন, এটি ২৬ ফুট লম্বা এবং প্রায় ২০০ কেজি ওজনের। ‘নয়টি দেশের আরো ১৪ জন বিজ্ঞানীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমরা বিশ্বের বৃহত্তম সাপের প্রজাতি সবুজ অ্যানাকোন্ডা আবিষ্কার করেছি।’
অধ্যাপক ভঙ্ক বলেন, আমরা নতুন প্রজাতির ল্যাটিন নাম দিয়েছি ইউনেক্টেস আকায়ামা, নর্দার্ন গ্রিন অ্যানাকোন্ডা।
আকায়ামা শব্দটি এসেছে উত্তর দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন আদিবাসী ভাষা থেকে। এর অর্থ মহান সাপ।
প্রফেসর ভঙ্ক বলেন, আপনি ভিডিওটিতে দেখতে পাচ্ছেন আমার দেখা সবচেয়ে বড় অ্যানাকোন্ডা। এটি গাড়ির টায়ারের মতো মোটা ছিল। ২৬ ফুট লম্বা এবং ২০০ কেজিরও বেশি ওজনের, আমার মাথার আকারের মতো এর বিশাল মাথা।
এরপর তিনি সাপটির বসবাসকারী অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, আমাজন অঞ্চল জলবায়ু পরিবর্তন এবং ক্রমাগত বন উজাড়ের কারণে তীব্র চাপের মধ্যে রয়েছে।
এর আগে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিচিত প্রজাতির সাপ ছিল জালিকার অজগর, এটি গড়ে ২০ ফুট ৫ ইঞ্চি লম্বা ছিল। এতদিন পর্যন্ত অ্যামাজনে সবুজ অ্যানাকোন্ডার একটি মাত্র প্রজাতি ছিল, যাকে বলা হয় দৈত্যাকার অ্যানাকোন্ডা। আমরা সিনেমা থেকে দৈত্যাকার সাপের গল্প জেনেছি, তারা আসলে দুটি ভিন্ন প্রজাতি। ভেনিজুয়েলা, সুরিনাম এবং ফ্রেঞ্চ গায়ানাসহ দক্ষিণ আমেরিকায় সবুজ অ্যানাকোন্ডাগুলো সম্পূর্ণ আলাদা প্রজাতি বলে মনে হয়।
এ প্রসঙ্গে ভঙ্ক বলেছেন, প্রথমবার দেখে প্রায় একই রকম মনে হলেও তাদের মধ্যে জিনগত পার্থক্য ৫ দশমিক ৫ শতাংশ, যা অনেকটাই বেশি। কারণ একজন মানুষ এবং শিম্পাঞ্জির মধ্যে জিনগত পার্থক্য মাত্র ২ শতাংশ। সেখানে দাঁড়িয়ে এই দুই প্রজাতির ৫.৫ শতাংশ জিনগত পার্থক্য যথেষ্ট বেশি।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস