16.2 C
Toronto
রবিবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৪

জন্মের পর থেকে ভাত খান না কুড়িগ্রামের হুমাইরা ও হাসিব

জন্মের পর থেকে ভাত খান না কুড়িগ্রামের হুমাইরা ও হাসিব

মাছে ভাতে বাঙালি হলেও ব্যতিক্রম হুমাইরা (১৩) ও সাকিব (১৮)। শুধু ভাত খাওয়াই নয় ভাতের গন্ধ পেলেই বমি আসে তাদের।

- Advertisement -

ভাত খাওয়াতে গেলে তাদের দু’জনের অজ্ঞান হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন পরিবারের লোকজন। তবে ভাতের পরিবর্তে রুটি,পরোটা,ডিম ডাল খেয়ে সুস্থ আছেন তারা।

সন্তানদের অজানা এ সমস্যার সমাধানে চিকিৎসার পেছনে টাকা-পয়সা খরচ করে কোন লাভ হয় নাই তাদের। শেষে সন্তানদের ভাত খাওয়ানোর চেষ্টা বাদ দিয়েছেন দুই পরিবার।

৫ম শ্রেণির ছাত্রী হুমাইরা পারভীনের বাড়ি কুড়িগ্রাম পৌর শহরের হাসপাতাল পাড়া গ্রামে। তার বাবা হাসান আলী একজন এনজিও কর্মী। দুই বোনের মধ্যে হুমাইরা বড়।

অন্যদিকে হাসিবুর রহমান রাহি কুড়িগ্রাম পৌর শহরের পুরাতন স্টেশন পাড়ার মুদির দোকানদার আনোয়ারুল ইসলাম আকাশ ও হাবিবা পারভীন দম্পতির বড় ছেলে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হুমাইরার পড়াশোনা,চলাফেরা অন্যদের মত স্বাভাবিক হলেও হাসিবের ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। শত চেষ্টা করেও ছেলেকে পড়াশোনা করাতে পারেন নাই তার বাবা মা। হাসিবের বয়স ১৮ বছর হলেও তার চলাফেরা এখনো শিশুদের মত। সমবয়সীদের সাথে ঘুরতে যাওয়া ও খেলাধুলা করা অপছন্দ করেন তিনি। সব সময় শিশুদের খেলনা নিয়ে সময় কাটাতে ভালো লাগে হাসিবের।

তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন পরিবার দুটি। অবাক করার বিষয় হচ্ছে, ভাত না খেলেও চালের গুঁড়া,চালের পিঠা-পুলি খেতে পারেন তারা। এ ছাড়া মাছ,মাংস দুধ ডিম কলাসহ অন্যান্য খাবারে আপত্তি নেই তাদের।

হাসিবের বাবা আনোয়ারুল ইসলাম আকাশ বলেন,আমি গরিব।তারপরও আল্লাহ পাকের কাছে আশা করছি কোথাও কোন ডাক্তার যদি সঠিক চিকিৎসা দিতে পারতো তাহলে ঋণ করে হলেও ছেলের চিকিৎসা করাতাম।ছেলের চিকিৎসার পেছনে এখন পর্যন্ত অনেক টাকা খরচ করেও কোন লাভ হয় নাই।

সুমাইয়ার বাবা হাসান আলী বলেন,আমার মেয়ের জন্মের দেড় বছর পর থেকে ওর মুখে ভাত তুলে দেয়ার চেষ্টা করে আসছি। কিন্ত কোনক্রমেই তাকে ভাত খাওয়ানো সম্ভব হয় নাই। অনেক ডাক্তারের কাছে গিয়েছি চিকিৎসা করাতে অনেক খরচ করেছি।কোন ডাক্তারই ওর আসল সমস্যার কথা বলতে পারে নাই।

তিনি বলেন, মেয়েটা যদি বর্তমান বাজারে সবচেয়ে দামি চালের ভাতও খেত।গায়ের রক্ত বেঁচে হলেও সারা জীবন ওই চালের ভাত খাওয়াতাম। খুবই কষ্ট লাগে আমরা পরিবারের সবাই ভাত খাই, মেয়েটা ভাত না খেয়ে থাকে।কেউ যদি আমার মেয়েকে ভাত খাওয়াতে পারতো আমি একটি খাসি জবাই করে খাওয়াতাম।

হাসিবের সাথে কথা বললে সে জানায়,আমি ভাত খাই না,ভাত খেতে ইচ্ছে করে না। কেক রুটি খাই।

তবে হুমাইরা বলেন, আমি সব খাবার কম বেশি খেতে পারি। কিন্তু ভাত দেখলেই আমার দমবন্ধ হয়ে আসে।ভাতের গন্ধ পেলে বমি চলে আসে।কিন্তু ভাত না খেয়ে থাকলেও আমার কোন সমস্যা মনে হয় না।

কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুর-এ মোর্শেদ বলেন, এ বিষয় পরিবারের লোকজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অথবা শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন। তবে ভাতের পরিপূরক অন্য খাবার খেয়ে শরীরে পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারলে কোন সমস্যা নেই।

সূত্র : দেশ রূপান্তর

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles