15.7 C
Toronto
শনিবার, মে ১৮, ২০২৪

মণিপুরে নারীকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর প্রতিবাদে উত্তাল ভারত, কী ঘটেছিল সেদিন

মণিপুরে নারীকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর প্রতিবাদে উত্তাল ভারত, কী ঘটেছিল সেদিন

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর রাজ্যে ৩ নারীকে বিবস্ত্র করে ঘোরানো এবং তাদের একজনকে গণধর্ষণের খবরে প্রতিবাদের ঢেউ বইছে। রাজ্যজুড়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছে মানুষ। তবে নারীকে হেনস্তার খবর এবং ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দুই মাস পুরনো বলে মণিপুর পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।

- Advertisement -

মূলত ৩ মে মণিপুরে উপত্যকা-সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতি এবং মণিপুরের পাহাড়-সংখ্যাগরিষ্ঠ কুকি উপজাতির মধ্যে তফসিলি উপজাতি (এসটি) মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে সহিংসতা শুরু হয়। পার্বত্য অঞ্চলে উপজাতি সংহতি সমাবেশের পরপরই এই সংঘর্ষ শুরু হয়।

পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, দুই মহিলা একটি সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের অংশ ছিল। ৪ মে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ বেড়ে গেলে তারা নিরাপত্তার জন্য রাজধানী থেকে বেশ দূরের থৌবল জেলার নংপোক সেংমাই থানার একটি গ্রামে আশ্রয় নেন। থানা থেকে ওই গ্রামটির দূরত্ব কয়েক কিলোমিটার।

কিন্তু একদল বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের একটি গ্রামে অভিযান চালিয়ে সংখ্যালঘুদের তাড়া করে। পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, জনজাতি অধ্যুষিত রাজ্য মণিপুরের সহিংসতার শিকার ওই ৩ নারী এবং তাদের ওপর হামলাকারীরা পরস্পর ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর।

কর্মকর্তারা জানান, ঘটনার আগের দিন রটানো হয় ওই নারীরা যে জনগোষ্ঠীর— সেই গোষ্ঠীর কয়েকজন পুরুষ হামলাকারীদের জনগোষ্ঠীর একাধিক নারীকে ধর্ষণ করেছেন, যা ছিল আসলে গুজব বা ভুয়া সংবাদ। তার প্রতিশোধ নিতেই ওই নারীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল দুষ্কৃতিকারীরা।

হামলার শিকার আদিবাসী সেই দলটিতে দুইজন পুরুষ ও তিনজন নারী ছিল। তিনজন একই পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এদের মধ্যে একজন পিতা যার বয়স ৫৬ বছর, তার ১৯ বছরের ছেলে এবং ২১ বছর বয়সী মেয়ে ছিল। তাদের সঙ্গে আরও দু’জন মহিলা ছিলেন, একজনের বয়স ৪২ বছর এবং অন্যজনের বয়স ৫২ বছর।

তারা যে গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিলেন দুষ্কৃতিকারীরা সেখানে ৪ মে হামলা চালায় এবং নির্বিচারে হত্যা-লুটপাট ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করতে থাকে। এ সময় তাদের অনেকের হাতেই একে ৪৭, ইনসাস ও এএলআরসহ আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ছিল। হামলা থেকে বাঁচতে ওই ৫ জন গ্রামের পাশে একটি জঙ্গলে আশ্রয় নেন। পরে নংপোক সেংমাই থানার পুলিশ সদস্যদের একটি দল উদ্ধার করে থানার পথে রওনা হন।

এফআইআর অনুসারে, দলটি বনে যাওয়ার পথে নংপোক সেকমাই থানার একটি পুলিশ তাদের খুঁজে পায়।

থানা থেকে প্রায় ২ কিমি দূরে, প্রায় ৮০০ থেকে ১০০০ লোক পুলিশ সদস্যসহ এই দলটিকে ঘিরে ধরে। বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের হেফাজত থেকে তাদেরকে ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। ১৯ বছর বয়সী ছেলেটি তার ২১ বছর বয়সী বোনকে জনতার হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।

মহিলার আত্মীয়দের দায়ের করা এফআইআর থেকে জানা যায়, ২১ বছর বয়সী মেয়েকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে, পুলিশ জানিয়েছে ১৮ মে একটি শূন্য এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছিল। ২১ মে মামলাটি নগপোক সেকমাই থানায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই আসল ঘটনাটি ঘটেছিল।

৩ মে থেকে মণিপুরে ইন্টারনেট বন্ধ করে রাখা হয়েছে। পরে ভিডিওটি বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই বিক্ষোভ প্রতিবাদ শুরু হয়। তবে ঘটনাটি ঘটেছে আরও দুই মাস আগে। ভিডিও থেকে ইমেজ শনাক্ত করে ইতো মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles