8.2 C
Toronto
শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

নিজ হাতে ‘ইউটিউবার’ মেয়েকে খুন করে যা বললেন বাবা

নিজ হাতে ‘ইউটিউবার’ মেয়েকে খুন করে যা বললেন বাবা
ছবি সংগৃহীত

নিজ হাতে প্রথমে শ্বাসরোধ, তারপর গুলি করে ‘ইউটিউবার’ মেয়েকে খুন করেন বাবা। ২২ বছর বয়সী ইউটিউবার টিবা আলি খানকে ইরাকে নিজ বাড়িতেই খুন করেন তার বাবা। মেয়েকে খুন করার পর তার বাবা বলেন- ‘লজ্জা ধুয়ে ফেললাম।’

ইরাকের মেয়ে টিবা রক্ষণশীল সমাজে বড় হয়েছেন। রক্ষণশীল পরিবার থেকে বেরিয়ে ইউটিউবার তারকা হওয়ার জন্য অনেক লড়াই করতে হয়েছিল তাকে। নিজের বাড়ি এমনকি নিজের দেশও ছাড়তে হয়েছিল টিবাকে। ইরাক থেকে বের হয়ে সিরিয় বংশোদ্ভূত প্রেমিকের সঙ্গে থাকতেন তুরস্কে। ইউটিউবেই নিজেদের বাগদানের কথা ঘোষণা করেছিলেন টিবা।

- Advertisement -

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর তুরস্ক থেকে ইরাকে নিজের বাড়ি ও বাবা-মায়ের কাছে ফিরেছিলেন। তবে টিবা বাড়িতে আসার পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়। এ জন্য পুলিশকেও আসতে হয়েছিল বাড়িতে। ইরাকের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী সাদ মানও সে কথা জানিয়েছেন। একটি বিবৃতি দিয়ে সাদ বলেছেন, ‘টিবা আলি এবং তার আত্মীয়দের সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান করার চেষ্টা করেছিল পুলিশ।’

কিন্তু সেই সমাধান যে কোনো কাজেই দেয়নি তা স্পষ্ট হয়ে যায় গত ১ ফেব্রুয়ারি সকালে টিবার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হওয়ার পর।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ৩১ জানুয়ারি রাতে মেয়েকে ঘুমের মধ্যেই শ্বাসরোধ করে খুন করেন তার বাবা। তারপর গুলিও করেন। তবে খুন করার পর তা গোপন করেননি টিবার বাবা।

পুলিশ জানিয়েছে, টিবার বাবা নিজেই এসে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, খুন তিনিই করেছেন। কেন খুন করেছেন, তার কারণও জানান। ইউটিউবার টিবার বাবা প্রকাশ্যেই খুনের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘লজ্জা ধুয়ে ফেললাম।’

টিবার বাবা তার স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন, তিনি পরিবারের সম্মানরক্ষায় হত্যা করেছেন মেয়েকে। ইউটিউবারকে হত্যার অপরাধে যদি বা তিনি শাস্তি পান, তবে সেই শাস্তিও কম হবে। কারণ ইরাকে সম্মানরক্ষায় কোনো অপরাধ করলে অপরাধীকে কম সাজা দেওয়া হয়!

নিজের দৈনন্দিন জীবনের নানা মুহূর্ত তিনি ইউটিউবে ভিডিও পোস্ট করে জানাতেন টিবা। ইদানীং ভক্তসংখ্যাও বাড়তে শুরু করেছিল তার। হাত নেড়েচেড়ে তাড়াহুড়ো করে নিজের ভাল থাকার কথা বলেন। হাজার হাজার অনুরাগী, অনুগামীকেও নিত্য ভাল থাকার রসদ জোগান, সেই মেয়ে না কি তার পরিবারের ‘লজ্জার কারণ’ হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন!

সম্প্রতি সেই মেয়েকেই নিজে হাতে খুন করলেন তার বাবা! ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে গেছে ওই ইউটিউবারের ভক্তদের মধ্যে। টিবার নৃশংস হত্যার প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীজুড়ে। টিবার মৃত্যুর খবর এবং মৃত্যুর ধরনে চমকে যান ইরাকের মানুষ। মেয়েরা প্রতিবাদে প্ল্যাকার্ড হাতে পথে নামেন। বিক্ষোভের তীব্রতা ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।

ইরাকের মানবাধিকার কর্মী হানা এদোয়ার একটি ভয়েস রেকর্ডিং দিয়ে জানান, টিবাকে শুধু ইউটিউবার হওয়ার জন্যই দেশ ছাড়তে হয়নি। নিজের বাড়িতেই যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন ২২ বছরের এই তরুণী।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles