9 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪

জালিয়াতির অর্থে প্রভাবশালীদের তুষ্ট করেছেন সাহেদ

জালিয়াতির অর্থে প্রভাবশালীদের তুষ্ট করেছেন সাহেদ

উত্তরা রিজেন্ট হাসপাতালের মোহাম্মদ সাহেদের বিরুদ্ধে ১১ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থের মাত্র ২ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা আছে তার। বাকি টাকা প্রভাবশালী ও কর্মকর্তাদের তুষ্ট করতে ব্যয় করেছেন। চলতি সপ্তাহে তার বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর আদালতে চার্জশিট দাখিল করবে সিআইডি। এতে সাহেদের দুই সহযোগী ও তিনটি প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। তবে মামলার আসামি সাহেদের পিতা সিরাজুল করিম করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।

- Advertisement -

সাহেদ ছাড়াও মানিলন্ডারিং মামলার চার্জশিটে অভিযুক্ত হচ্ছেন রিজেন্ট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজ ও প্রতারণার সহযোগী কাজী রবিউল ইসলাম। এ ছাড়া সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেড, রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেড ও রিজেন্ট ডিসকভারি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস লিমিটেড নামে ৩ প্রতিষ্ঠানকেও অভিযুক্ত করা হচ্ছে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে আয় করা অর্থের মধ্যে সাহেদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ১১ কোটি ২ লাখ টাকা মানিলন্ডারিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়া কোভিড-১৯ এর জাল সার্টিফিকেট বিক্রির মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে ৩ কোটি ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

সিআইডির পরিদর্শক মনিরুজ্জামান বলেন, ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানায় সাহেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটির তদন্ত শেষ পর্যায়ে। শিগগিরই মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সাহেদ ও তার সহযোগীদের মাধ্যমে প্রতারণার যে টাকা আয় করতেন তার বড় অংশই গডফাদার, প্রভাবশালী ও কিছু কর্মকর্তাদের দিয়ে তুষ্ট রাখতেন। তারা সাহেদকে এই অবস্থানে পৌঁছাতে সহায়তা করেছেন। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ম্যানেজ করে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। বিভিন্ন জনকে অর্থ দেওয়ার পাশপাশি ভোগবিলাসেও সাহেদ প্রচুর অর্থ খরচ করেছেন।

জানা গেছে, সাহেদ ও তার সহযোগিরা অস্তিত্ববিহীন ১২ প্রতিষ্ঠানের নামে ৪৩টি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করছিলেন। ব্যাংক হিসাবগুলো খোলার সময় তিনি কেওয়াইসি (গ্রাহকের তথ্যসংবলিত ফরম) ফরমে প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান বা স্বত্বাধিকারী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। ৪৩টি ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল ৯১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর মধ্যে তিনি তুলে নেন ৯০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা আছে মাত্র ২ কোটি ৩ লাখ টাকা। আদালতের আদেশে এসব টাকা ফ্রিজ করা হয়েছে।

সিআইডি জানায়, ব্যাংক হিসাবগুলো পরিচালনা করতেন রিজেন্ট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজ। মাসুদ পারভেজের ১৫টি ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ছিল। মানিলন্ডারিং মামলায় মাসুদ পারভেজকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। সাহেদের অপকর্মের সহযোগী কাজী রবিউল ইসলামকেও মানিলন্ডারিং মামলায় আসামি করবে সিআইডি।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৬ জুলাই উত্তরায় সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ভুয়া করোনা রিপোর্ট জব্দ করে র‌্যাব। একই বছরের ১৫ জুলাই তাকে সাতক্ষীরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, অনিয়মের নানা অভিযোগ সামনে আসতে থাকে। পরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাহেদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের হয়।

সূত্র : আমাদের সময়

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles