2.4 C
Toronto
শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

‘রাজাকারের বাড়ি’ লিখে সাকা চৌধুরীর বাড়ি ঘেরাও

‘রাজাকারের বাড়ি’ লিখে সাকা চৌধুরীর বাড়ি ঘেরাও

মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি হওয়া সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর চট্টগ্রামের বাসভবন গুডস হিলকে ‘রাজাকার হিল’ এবং বাড়িটিকে ‘রাজাকারের বাড়ি’ ঘোষণা দিয়ে গতকাল ব্যানার টাঙিয়ে দেয় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড। পরে সমাবেশ থেকে সাকার ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে চট্টগ্রামে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। ছবি : কালের কণ্ঠ

- Advertisement -

মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি কার্যকর হওয়া বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বাসভবন গুডস হিল ঘেরাও করে গতকাল শনিবার সেখানে ‘রাজাকারে বাড়ি’ ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড।

বেঁধে দেওয়া সাত দিনেও সাকা চৌধুরীর ছেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী নিজের বক্তব্যের জন্য ক্ষমা না চাওয়ায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল সকালে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড নগরীর চকবাজার থানার গনি বেকারির মোড়ে গুডস হিল ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে।

সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলা এ কর্মসূচিতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সঙ্গে সংহতি জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতারা। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলা সমাবেশ থেকে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

কর্মসূচি পালনকারীরা গুডস হিলের প্রবেশপথে প্রতিবাদী ব্যানার আর প্ল্যাকার্ডে ভরিয়ে দেয়। দেয়ালে তাঁরা লিখেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর নির্যাতন কেন্দ্র-রাজাকারের বাড়ি’। এ সময় তাঁরা সেখানে প্রতীকী তালা ঝুলিয়ে দেন।

কর্মসূচি চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ বলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকারদের সন্তানদের রাজনীতিতে দেখতে চাই না, রাজাকারের সন্তানদের নির্বাচনে দেখতে চাই না। রাজাকারের বাড়িঘর, সম্পত্তি অবিলম্বে বাজেয়াপ্ত করা হোক। এ জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করতে আমরা সরকারকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। আগেভাগে বলে দিচ্ছি, সরকার যদি আমাদের দাবির প্রতি কর্ণপাত না করে তাহলে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামব। আবার বলছি, সময় ডিসেম্বর পর্যন্ত, এরপর আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সরকারের বিরুদ্ধে চলে যাব। ’

মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের চট্টগ্রাম জেলা সদস্যসচিব কামরুল হুদা পাভেল বলেন, ‘১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের নিজের বাবাকে শহীদ উল্লেখ করে স্লোগান দেন। আমরা মনে করি, এটা শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অপমান। ’ তিনি বলেন, ‘হুম্মাম কাদেরকে তাঁর বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে সাত দিনের সময় দেওয়া হয়েছিল। তিনি ক্ষমা চাননি, তাই আমরা তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে প্রতিবাদ জানিয়েছি। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে গুডস হিলকে আমরা রাজাকার হিল ঘোষণা করেছি। এটা একটা মুক্তিযোদ্ধা নির্যাতন কেন্দ্র, আমরা চাই এটাকে জাদুঘরে রূপান্তর করা হোক। সেই দাবিতে আমরা বাড়ির গেটে বড় একটা প্রতীকী তালাও ঝুলিয়ে দিয়েছি। ’

বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক রাসেল এবং সংগঠনের জেলা সদস্যসচিব কামরুল হুদা পাবেলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার সৈয়দুল হক সৈয়দ, আওয়ামী লীগ নেতা জামশেদুল আলম চৌধুরী, মশিউর রহমান চৌধুরী, নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল হক সুমন প্রমুখ।

গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, ‘ক্ষমতা ছাড়ার পর একা বাড়ি ফিরতে পারবেন না। সব শহীদের কবরে গিয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হবে। ’ হুম্মাম কাদেরের দেওয়া এই বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘এটা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত বক্তব্য। এর সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বিএনপি এর দায়ভার নেবে না। ’

পরে ১৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে সমাবেশ করে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সাত দিনের সময় বেঁধে দেয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। অন্যথায় গুডস হিল ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছিল তারা।

সূত্র : নতুন সময়

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles