কুমিল্লার দেবিদ্বারে যৌতুকের দাবিতে জোসনা বেগম নামে এক গৃহবধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার ধামতী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে বৃহস্পতিবার ওই গৃহবধূকে নির্যাতনের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
খবর পেয়ে থানার এএসআই সারোয়ার তালুকদারসহ একদল পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্বজনরা।
গৃহবধূ জোসনা জানান, প্রায় ১৬ বছর পূর্বে ধামতী গ্রামের দুলাল মিয়ার পুত্র হেলালের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হয়। বিয়ের পরপরই বাবা মারা যান। এরই মধ্যে তাদের সংসারে ২ ছেলে ও ২ মেয়ের জন্ম হয়। প্রায় ১২ বছর পূর্বে স্বামী ওমান যাওয়ার সময় আরও ২ লাখ টাকার জন্য চাপ দিলে তার ভাইয়েরা ১ লাখ টাকা দেন। গত এক বছর পূর্বে দেশে এসে আবারও বাকি ১ লাখ টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে স্বামী এবং তার স্বজনরা। প্রতিনিয়ত টাকার জন্য নির্যাতন চালাতে থাকে।
নির্যাতিতা বলেন, স্বামী চলে যাওয়ার পর স্বামীর প্ররোচনায় আমার শ্বশুর দুলাল মিয়া, শাশুড়ি জুলেখা বেগম, দুই ননদ মৌসুমী ও পাখি আমার ওপর প্রতিনিয়তই নির্যাতন চালাতে থাকে। আমার মাথার চুলগুলো টেনে ছিঁড়ে প্রায় শেষ করে ফেলেছে। মুখে কিল-ঘুসি আর থাপ্পড়ে দাঁতগুলোও নড়ে গেছে। বুধবার বিকেলে বাবার বাড়ি থেকে ১ লাখ টাকা এনে দিতে আবারও অমানবিক নির্যাতন চালায় শ্বশুর, শাশুড়ি, ননদেরা। একপর্যায়ে আমার ২ হাত নারিকেল গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালায়। রাতে ঘরে নিয়েও একই অবস্থা করে।
নির্যাতিতার মা ফরিদা বেগম জানান, মেয়েকে বহুবার নিয়ে আসতে চেয়েছি। সে সন্তানের মায়ায় আসেনি। গত ১৫ বছরে অন্তত ১০-১২টি সালিশ হয়েছে। ছেলের পক্ষ সালিশের রায় মেনে পরে উল্টোটা করে। এখন আর কেউ সালিশ করতে আসে না। আমার আত্মীয়স্বজনও যায় না। আমরা গরিব মানুষ কত টাকা দিতে পারি। আমার চার ছেলে দিনমজুর।
দেবিদ্বার থানার ওসি কমল কৃষ্ণ ধর জানান, অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত ভিকটিমের শাশুড়ি জুলেখা বেগমকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
সূত্র : আরটিভি