11.3 C
Toronto
সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪

রোজ সিটি গার্ডেনার্স পিকনিক ২০২২

রোজ সিটি গার্ডেনার্স পিকনিক ২০২২
অবশেষে সুন্দরভাবে শেষ হলো বাগান বিলাসী বন্ধুদের পিকনিক।
যারা সক্রিয়ভাবে বাগান করেন কিংবা বাগান পছন্দ করেন তাদের নিয়ে ছিল উচ্চাভিলাষী এই আয়োজন। উচ্চাভিলাষী বলছি এজন্য যে, অন দ্যা স্পট রান্না করে শত্তুর জন লোকের পিকনিক আয়োজন সহজ কাজ ছিল না। তার উপর প্ল্যান ছিল ছিল ছেলেরা সব করবে, মেয়েরা থাকবে শুধু সহায়ক ভূমিকায়। যদিও বাস্তবে মেয়েরা অনেক বেশীই সক্রিয় ছিলেন।
অপ্টিমিষ্ট মেমরিয়েল পার্ক ছিল আমাদের পিকনিক ভ্যানু। অদ্ভূত সুন্দর এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। ছায়া সুশীতল গাড় সবুজ বনভূমি বেষ্টিত এই পার্ক। উইন্ডসরের এই পার্কের ছায়াঢাকা উদ্যানের নতুন এই পিকনিক সেডে আমরাই হয়ত এই প্রথম্ প্রোপেন চুলার পাশাপাশি লাকড়ির চুলায় রান্নার আয়োজন করি। আমাদের রান্নায় কোন প্রফেশনাল বাবুর্চি ছিলন – আমরাই বাবুর্চি, আমরাই গেষ্ট, আমরাই হোষ্ট। এরপরও অসম্ভব গুছানো ছিল আয়োজন।এটি সম্ভব হয়েছিল পিকনিকে অংশগ্রহণকারি সব ভাই বোনদের আন্তরিক সহায়তার কারনে।
বাগানিদের পকনিক বলে কথা। পিকনিকের আগের দিন বিকেলে সবাই জড়ো হই একসাথে।
চলে পিকনিক দিনের জন্য সব্জি কাটাকটির ধামাকা আয়োজন এবং সাথে চা, নাস্তা , ছবি তোলা সবই। রুনা ভাবী এবং মিল্টন ভাই নিয়ে আসেন মিষ্টি কুড়া ফুলের ফুলনী। মিশু এবং জালাল নিয়ে আসে গরম গরম চটপটি। তার সাথে গুড়ের চা, চানাচুর মুড়ি সবই ছিল। সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এ পিকনিকের আগের দিনের আয়োজনকে করেছিল অনন্য।
এবার বলি পিকনিক দিনের কথা।কাকা ডাকা ভোরে পিকনিকের অগ্রগামী দলের সদস্যরা চলে যায় পিকনিক স্পটে। সাড়ে সাতটা নাগাদ আমি এবং শাহীন পৌঁছে যাই পিকনিক স্পটে। আমাদের সাথে যুক্ত হয় আকবর ভাই, জালাল, মন্সুর এবং রবিউল বিপ্লব। অল্পক্ষণের মধ্যেই পিকনিক ব্যানার সেটআপ, টেবিল লাগানো, চুলা সহ প্রায় সব সেট আপ শেষ হয়ে যায়।
ঠিক সকাল আটটায় শুরু হয় পরটা ভাজা।
প্রথমে শুরু করে মিশু। পরে একে একে সম্পা, লিমা, উর্মি রেবেকা সহ টিমের অন্য সদস্যরা যুক্ত হয়। অন্যদিকে ডিমের অমলেট শুরু করেন সামছুল আলম ভাই। মিশু সহ টিমের অন্য সবাই যুক্ত হয় তার সাথে।
রহমান ভাই শুরু করেন পাঁচমিশালী সব্জির ভাজি। আকবর ভাই, শাহীন এবং আমি হেল্প করি উনাকে। সব মিলিয়ে ছিল অদ্ভূত সুন্দর এক রান্নার দৃশ্য। সকালে গরম গরম তৈরী শাহী হালুয়া নিয়ে আসেন মিল্টন ভাই। একটু দেড়িতে হলেও কলিজি – চনাডাল ভূনা নয়ে আসেন রবিউল বিপ্লব। এক কথায় নাস্তার আয়োজন ছিল বিশাল এবং অভাবনীয়।
নাস্তার পাশাপাশি ছিল চায়ের আয়োজনও। ইলেক্ট্রিক কফি মেকারে তৈরী হয় চা। একটু হেটে গিয়ে পার্কিং লট থেকে চা নিয়ে আসতে হয়েছিল। তবে টিমহর্টন প্রেমীরা পিকনিক সেডেই নিয়ে আসেন টিমহর্টন চা। হাঁটাহাঁটি ঝামেলা তাদের পচন্দ না। তবে কোন কিছুরই যেন ঘাটতি ছিলনা এই পিকনিকে।
কেউ কেউ আবার লাউড স্পিকারে বসিয়েছিলেন গানের মজমা। এই মজমার অঘোষিত নেতা ছিলেন মিলন ভাই। কখনো বাজছে ‘তিন পাগলের হলো মেলা’। আবার কখনোবা বাজছে আসিফের সেই বিখ্যাত গান –
লোকে বলে তুমি আগুন ছাই বানাতে জুড়ি নাই
ভয়ে ভয়ে হাত ধরেছি আমি কিন্তু পুড়ি নাই —
তালে তালে নেচেছে সব উতাল হাওয়ার গান প্রেমীরা।
আহা! কি আনন্দের এই মিলন মেলা!!
এগারটা না বজতেই শুরু হয় দুপুরের আয়োজন। লাকড়ির চুলায় গরুর মাংস রান্না নিয়ে ব্যস্ত থাকে পান্না এবং মামুন। অন্য তিনটি চুলায় চলে বেগুন ভাজি। চুলায় সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকেন নীলা, সম্পা এবং রুনা ভাবী।
কালিজিরা চালের পলাউ এবং ভাত রান্নায় ব্যস্ত ছিলেন কান্তা ভাবি এবং মিলন ভাই। শামীম ভাই এবং জালাল ব্যস্ত ছিল সারাক্ষণ চিকেন বারবিকিউ নিয়ে। যদিও এই বারবিকিউর জন্য চিকেন কেনা এবং মেরিনেট করা সহ সবই করেছেন খোকন নাসিরুদ্দিন এবং লিমা দম্পতি।
দুপুর থেকেই গানের আসর এবং মিউজিক সেটআপ নিয়ে ব্যস্ত ছিল রনি রায়। এই আসরে গান করেছে দিপ্তী ভাবি, মিলন ভাই, রুনা ভাবি। পুঁথিতে আমার সাথে ছিলেন রনি রায়, দিপ্তী ভাবি, আলম সরকার।
খেলা ধুলার সব আয়োজনে ছিল জালাল এবং মিশু।
প্রাইজ কেনা, রেপিং করা, খেলার সরঞ্জাম তৈরী এবং খেলা পরিচালনা সবই করে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে এরা দুইজন। মেমরি গেম, সেন্ড বল থ্রো এবং পিলু পাসিং সহ অনেক মজার খেলা ছিল আয়োজনে। বিকেলে পুরস্কার বিতরণী দিয়ে শেষ হয় তাদের খেলাধুলার এই আসর।
আমার এই লেখায় আরো অনেকেই সহযোগিতা করেছেন যাদের আমি হয়ত এই মুহুর্তে স্মরণ করতে পারিনি। তবে অশেষ ধন্যবাদ সবাইকে।
শুভ রাত্রি।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles