-0.8 C
Toronto
সোমবার, মার্চ ১৮, ২০২৪

অন্টারিওর ভোটারদের চিন্তায় জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয়

অন্টারিওর ভোটারদের চিন্তায় জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় - the Bengali Times
অন্টারিও এনডিপি নেতা এ্যান্দ্রেয়া হ্যারওয়ার্থ

চাণক্য রামদেব আগে যে মুদি দোকানে কেনাকাটা করতেন সেটি বদলে ফেলেছেন। রেস্তোরাঁয় যাওয়া ছেড়ে দিয়ে সব খাবারই তিনি বাড়িতে রান্না করে খাচ্ছেন। অন্টারিওর ওয়াটারলুর এই বাসিন্দা বলছেন, তারপরও খাদ্যপণ্যের উচ্চ মূল্যের সঙ্গে তিনি পেরে উঠছেন না। জীবনযাত্রার ব্যয় বিশেষ করে খাদ্যের দাম সক্ষমতাকে ছাড়িয়ে গেছে। অন্টারিওতে বসবাস কঠিন করে তুলছে এটি।

জুনের নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসায় পণ্যের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধি নির্বাচনী প্রচারণার কেন্দ্রে থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা গত মাসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, গ্যাসোলিন, মুদিপণ্য ও অন্যান্য দ্রব্যের দাম তিন দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় মার্চে কানাডার মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

- Advertisement -

কানাডিয়ান রিয়েল এস্টেট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, অন্টারিওতে বাড়ির দাম দেশেল মধ্যে সর্বোচ্চ এবং বাড়ির গড় মূল্য ১০ লাখ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

গ্যাসের দাম মার্চে সর্বকালের সর্বোচ্চে পৌঁছানোর পর এখন লিটারপ্রতি ২ ডলারে স্পর্শ করার অপেক্ষায়। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা বলছে, নিত্যপণ্যের উচ্চ মূল্য অন্টারিওর ভোটারদের কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্য। এপ্রিলে পরিচালি অ্যাবাকাস ডেটার সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৬২ শতাংশ অন্টারিওবাসীর মতে, তাদের আয় জীবনযাত্রার ব্যয়ের চেয়ে কম। আবাসনের মূল্য হ্রাস ও প্রাপ্যতার পরই জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোই যে আসন্ন নির্বাচনের অন্টারিওর ভোটারদের কাছে প্রধান ইস্যু সে ইঙ্গিতই দিচ্ছে সমীক্ষার এ ফলাফল।
কানাডিয়ান স্টোর ফর পলিসি অল্টারনেটিভসের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ শেইলা ব্লক দ্য কানাডিয়ান প্রেসকে বলেন, মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকার আগেও অন্টারিও বিশেষ করে টরন্টোতে জীবনযাপন খুব একটা সাশ্রয়ী ছিল না। এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি একে আরও কঠিন করে তুলেছে। দাম বৃদ্ধি নিয়ে কেউই খুশি নয়। তবে মূল্যস্ফীতি সবাইকে যে সমানভাবে আক্রান্ত করেছে এমন নয়। নি¤œ আয়ের পরিবার ও ব্যক্তিরা খাদ্য, বাসস্থান ও পরিবহনের মতো অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজনে বেশি অর্থ ব্যয় করে থাকেন। দাম বাড়লে তা সামাল দেওয়া তাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

আকাশচুম্বি মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে প্রদেশের সে অর্থে কিছু করার নেই বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ, সরবরাহ ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা ও পণ্যের উচ্চ চাহিদার মতো যেসব কারণে দাম বাড়ছে তা প্রদেশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
ইউনিভার্সিটি অব অটোয়ার অর্থনীতির অধ্যাপক মারিও সেকারেসিয়া বলেন, বিষয়গুলো প্রাদেশিক সরকারের উপরের স্তরের। মোটা দাগে এগুলো আন্তর্জাতিক বিষয়।

তবে অন্টারিও সরকারকে উচ্চ মূল্যস্ফীতি থেকে কিছুটা স্বস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি প্রদান থেকে বিরত রাখতে পারছে না। নির্বাচনী প্রচারণায় দলীয় নেতারা এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন।

অন্টারিও লাইসেন্স প্লেট নবায়ন ফি মার্চ থেকে বাতিল করেছে এবং ২০২০ সালের মার্চ থেকে যেসব চালক এ বাবদ ফি জমা দিয়েছেন তাদেরকে তা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। দুটি মহাসড়কের টোল ও সাময়িকভাবে গ্যাসের ওপর কর কমিয়ে আনছে প্রোগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ সরকার। আগামী জুলাই মাস থেকে এসব উদ্যোগ কার্যকর হবে।

এ বছরের গোড়ার দিকে অন্টারিওর প্রিমিয়ার ডগ ফোর্ড বলেছিলেন, বর্ধিত মূল্য আমাদের অনেক কিছুর দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং আমরা সেটা জানি। পরিবারগুলোর জীবিকা নির্বাহকে এটা কঠিন করে তুলতে পারে।

লিবারেলরা ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সব ট্রানজিটের ভাড়া এক ডলার করার পাশপাশি প্রস্তুতকৃত খাবারের মূল্য ২০ ডলারের নিচে হলে তার ওপর থেকে প্রদেশের এইচএসটি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles