10.5 C
Toronto
শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

‘ঢুকছিলাম সাংবাদিকদের পকেট মারতে, ম্যানেজারের ফোন চুরির কোনো পরিকল্পনা ছিল না’

‘ঢুকছিলাম সাংবাদিকদের পকেট মারতে, ম্যানেজারের ফোন চুরির কোনো পরিকল্পনা ছিল না’ - the Bengali Times
আলামতসহ আটককৃত চোরচক্র

কমলাপুর রেলস্টেশন ম্যানেজারের ফোন চুরির আলোচিত ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে দুর্ধর্ষ এক চোর চক্রের সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তে জানা গেছে, সেদিন সাংবাদিকদের পকেট মারতেই ম্যানেজারের রুমে ঢুকেছিল চোর। ম্যানেজারের ফোন চুরির কোনো পরিকল্পনা আগে ছিল না চোর চক্রের।

একজন চোর যিনি কি না সৌদি আরবের সম্ভ্রান্ত ইমাম পরিবারের ছেলে। সেখানেই শুরু করেন গাড়ি চুরি। পরে জেল খেটে, দেশে ফিরে মাদকের ছোবলে আবারও বাঁকা পথে পা বাড়ান। মাদকের টাকা যোগাড় করতেই জড়িয়ে পড়েন চোর চক্রের সাথে। এই চক্রের ৩ সদস্যকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

- Advertisement -

এর আগে, গত ২৩ এপ্রিল বেলা ১২টায় ইদের আগাম টিকেট ইস্যুতে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে ব্রিফ করছিলেন কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার। অন্তত ১৫ টিভি ক্যামেরার সামনেই টেবিলের উপরে থাকা তার ফোন-মানিব্যাগ নিয়ে চম্পট দেয় এক চোর। স্টেশনে থাকা সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে সটকে পড়ার দৃশ্য। দেশব্যাপী তখন তুমুল আলোচনা হয় এটা নিয়ে। চুরি ও ফোন জব্দের ঘটনায় কমলাপুর রেলওয়ে থানা ও রাজধানীর বংশাল থানায় দুটি মামলাও হয়েছে।

পাজামা-পান্জাবি ও টুপি পরা অভিযুক্ত যাকে সেদিনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তিনি আজিজ মোহাম্মদ। আজিজের পরিবার সৌদিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত একটি সম্ভ্রান্ত পরিবার। তার বাবা মক্কার একটি এতিহ্যবাহী মসজিদের ইমাম ও খতিব।

জানা গেছে, পড়াশোনা শেষে চাকরি করতে করতে আজিজ জড়িয়ে পড়েন খারাপ সঙ্গে। শুরু করেন গাড়ি চুরি। সৌদিতে বিএমডাব্লিউ, মার্সিডিজসহ অন্তত ৮টি দামি গাড়ি চুরি করেছেন তিনি।

স্টেশন ম্যানেজারের ফোন চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত আজিজ মোহাম্মদ বলেন, সৌদি আরবে খারাপ বন্ধু-বান্ধবের সাথে মিশে গাড়ি চুরি করা শুরু করি। বিভিন্ন ধরনের গাড়ি এক্সিস বা মার্সিডিজ ইত্যাদি। সর্বশেষ একটা হ্যামার গাড়ি চুরি করি যার পার্টস খুলে খুলে বিক্রি করেছি।

জানা গেছে, সৌদিতে তিন বছর জেল খেটে পরিবারচ্যুত হন আজিজ। পরে দেশে ফিরে কক্সবাজারের একটি মাদ্রাসায় ভাল চাকরি করতেন। সেটা করতে করতেই ইয়াবায় আসক্ত হন। হারান চাকরি, শুরু করেন চুরি। মানুষের ফোন, মানিব্যাগ যেখান থেকে যেভাবে পেরেছেন চুরি করে নামমাত্র দামে বিক্রি করে দিতেন মাদকের খরচ যোগাতে।

২৩ এপ্রিলের ঘটনার দিনের কথাও আজীজ স্বীকার করেন নিজের মুখে। তিনি বলেন, আমি ঢুকেছিলাম পকেটমারার জন্য। মূলত সাংবাদিকদের পকেট মারার জন্যই ঢুকেছিলাম। ম্যানেজারের মোবাইলটা আমার পরিকল্পনাতেই ছিল না। দেখলাম যে ম্যানেজার তার দুইটা মোবাইল বের করে সামনে টেবিলের ওপরে রেখে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছিলেন, তখনই চুরির সুযোগ পেয়ে যাই।

আজিজের সাথে রনি ও জাকির হোসেন নামে তার ২ সহযোগীকেও আটক করেছে ডিবির গুলশান বিভাগ। যারা কমদামে চোরাই ফোন কিনে পার্টস আলাদা করে বাইরে বিক্রি করতো। পুলিশ বলছে, মাদকের ছোবলে একজন প্রতিষ্ঠিত আলেম হয়ে পরে, চোর বনে যাওয়া বেশ উদ্বেগের।

এ প্রসঙ্গে ডিএমপি ডিবি’র উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, তার মতো একজন দ্বিনদার মানুষ, সে মাদকাসক্তির কারণে রাস্তায় পকেট মারবে, এটা আমাদের কাছে খুবই আনকমন মনে হয়েছে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগের।

 

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles