16.1 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪

রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট দীর্ঘায়িত হলে ক্ষতি হবে বাংলাদেশের

রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট দীর্ঘায়িত হলে ক্ষতি হবে বাংলাদেশের - the Bengali Times

রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছিল। দুই দেশের টানাপড়েনের মধ্যে রাশিয়া হামলা চালাবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও রাশিয়া হামলে পড়ল ইউক্রেনের ওপর। নিজেদের এবং বিভিন্ন বন্ধুরাষ্ট্র থেকে পাওয়া সামরিক অস্ত্র নিয়ে পাল্টা প্রতিরোধের চেষ্টা চালাচ্ছে ইউক্রেনও। ইউক্রেনের সেনাকে অস্ত্র ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

- Advertisement -

ইউক্রেনের দিকে রাশিয়া নজর দেওয়ার সময় থেকেই মস্কোর কড়া সমালোচনা করছে ওয়াশিংটন। তার পর বৃহস্পতিবার ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া আক্রমণ শুরু করলে এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, রাশিয়ার এই পদক্ষেপ ইউক্রেনে মৃত্যুমিছিল ডেকে আনবে।

এদিকে ইউক্রেন সংকটের প্রভাব বিশ্বব্যাপী পড়তে শুরু করেছে। তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়েছে। ইউক্রেন সংকট দীর্ঘায়িত হলে বাংলাদেশও ভুক্তভোগী হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে ইউরোপে অবস্থান করা ৫০০ বাংলাদেশি ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তাদেরকে ফিরিয়ে আনার কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ ইউক্রেন ইস্যু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছে। কোনো ধরনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ও সংঘাতের সৃষ্টি হয়, এমন কিছুকে সমর্থন করে না বাংলাদেশ। এই ইস্যুতে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব’ এই নীতির কথা জানিয়েছে। বাংলাদেশ জানিয়েছে, উভয়েই বাংলাদেশের বন্ধুদেশ। এ ইস্যুতে বাংলাদেশ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রত্যাশা করে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে বাংলাদেশ নিরপেক্ষ থাকবে।

ইউক্রেন পরিস্থিতির কারণে দেশের অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা, জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এটি এখনো মন্তব্য করার সময় আসেনি। তবে এর কারণে জ্বালানিসহ অন্য পণ্যের দাম বাড়বে। এর প্রভাব শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রায় সব দেশের ওপরই পড়বে।

সংকট দীর্ঘায়িত হলে বাংলাদেশের ওপর কী প্রভাব পড়তে পারে এমন প্রশ্নে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ইউক্রেনের আমাদের দুশর মতো শিক্ষার্থী ছাড়াও অনেক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী রয়েছেন। আমাদের রেডিমেড গার্মেন্টসের বড় ক্রেতা ইউরোপ। এতে বড় প্রভাব পড়তে পারে। কোভিড পরবর্তী সময়ে যখন অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, তখন এ যুদ্ধে সংকট আরও ঘনীভূত হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সুসম্পর্ক থাকার পাশাপাশি দেশে মেগা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে তারা। রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আসবে, তখন রাশিয়াও তাদের প্রতি একই পদক্ষেপ নেবে। এতে বাংলাদেশ বিপদে পড়বে। ইউক্রেন ইস্যু যত চরমে পৌঁছবে বিশ্বরাজনীতিও ততটা চরমে পৌঁছবে। তবে ভূরাজনীতি কোন দিকে মোড় নেয় সেটি বলার সময় এখনো আসেনি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, চলমান ইউক্রেন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। কূটনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় ঢাকা। বাংলাদেশ বিশ্বাস করে এই অঞ্চলের সংকট শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন একটি শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধান হতে পারে। তাই সংলাপ ও সহযোগিতার চেতনাকে সমুন্নত রেখে এ সংকট নিরসনে সব পক্ষকে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পক্ষেই বাংলাদেশের অবস্থান।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধ বাধলে বাংলাদেশসহ দুনিয়াব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। রাশিয়া জ্বালানি পাইপলাইন বন্ধ করলে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বিকল্প জ্বালানির উৎস বের করতে হবে। ইউরোপ যদি মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সংগ্রহ করে তাতে জ্বালানি সরবরাহের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হলে বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়বে।

এদিকে ইউক্রেনে আটকা কতজন বাংলাদেশি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে জানতে চাইলে পোল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, আমরা যে ৫০০ জন ইউক্রেনে আছেন, সবার সঙ্গেই প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছি। সবাই ভালো আছেন। ইউক্রেন থেকে বাংলাদেশিদের পোল্যান্ড আনার উদ্যোগ নিয়েছি। পোলান্ড যেন তাদের ঢুকতে দেয় সেই পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles