11.1 C
Toronto
শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪

বিখ্যাত চার বিজ্ঞানীর ‘লাভ স্টোরি’

বিখ্যাত চার বিজ্ঞানীর ‘লাভ স্টোরি’ - the Bengali Times
ছবি সংগৃহীত

আমরা অনেকেই মনে করি বিজ্ঞানীরা নিরস প্রকৃতির হয়ে থাকে। তারা প্রেম ভালোবাসার কোনো মানেই বোঝেনা। কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন তারাই বরং প্রেম ভালোবাসার প্রকৃত মানে জানে কিন্তু তেমনভাবে তারা মনের অভিব্যক্তি বা আবেগকে প্রকাশ করেন না।

আজ আপনাদের জানাবো এমনই কিছু বিজ্ঞানীর কথা। যারা ভালোবেসে বিয়ে করেছিল এবং তাদের সম্পর্ক ছিল খুবই দৃঢ়। এরা হলেন- পিয়েরে এবং মেরি কুরি, জেরম এবং ইসাবেলা, থেরেসা এবং কার্ল ফারিনান্ড কোরি, এনটোনি এবং মেরি অ্যানি লাভোইসার।

- Advertisement -

পিয়েরে এবং মেরি কুরি: পিয়েরে কুরি বিশ্বাস করতেন যে নারীরা বৈজ্ঞানিক কাজের প্রতি বিভ্রান্তি ছাড়া কিছুই নয়। কিন্তু তারপরে তিনি মেরি স্কলোডোস্কার সঙ্গে দেখা করেছিলেন এবং তিনি এর বিপরীতে শিখতে এসেছিলেন। ১৮৯৪ সালে ম্যারি প্যারিসে কাজ শুরু করছিলেন বিভিন্ন ইস্পাতের চৌম্বকীয় বৈশিষ্ট্যগুলো তদন্ত করে। বিজ্ঞানের প্রতি তাদের পারস্পরিক আবেগের মাধ্যমে তারা দুজন ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। প্রথমদিকে পিয়েরের প্রস্তাব মেরি প্রত্যাখান করেন। এর বেশ কিছু দিন পরে পিয়ের মেরিকে চিঠি লিখেছিলেন নতুন চুম্বকত্ব গবেষণায় কাজ করতে ফিরে আসার জন্য। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মেরি প্যারিসে ফিরে আসলে তাদের দুজনের বিয়ে হয়। ১৯০৩ সালে এই দম্পতি তাদের পোলোনিয়াম এবং রেডিয়াম আবিষ্কারের জন্য পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন।

জেরম এবং ইসাবেলা: জেরোম এবং ইসাবেলা কার্লের প্রেমের গল্প সেই সময় একটি রোমান্টিক কমেডি তৈরি করেছিলো। দুই ছাত্র ছাত্রীর একটি প্রকল্পের অংশীদার হতে বাধ্য হওয়া এবং একে অপরের জন্য কাজ করার কাহিনিটি আমরা প্রায় টিভি সিরিয়ালের পর্দায় প্রায়ই দেখে থাকি। ঠিক এই কাহিনিটিই বাস্তবে ঘটেছিলো জেরম এবং ইসাবেলার জীবনে।

১৯৪০ সালের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। জেরোম তার পিএইচডির প্রথম বর্ষে ছিল যখন ইসাবেলা স্নাতক হিসেবে শেষ বছর শেষ করছিলেন। একটি নির্ধারিত আসন ব্যবস্থার কারণে দুজনেই ক্লাসের অংশীদার ছিলেন। তবে দুজনের প্রথম দেখা মোটেও মধুর ছিল না। কারণ তারা একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন। কিন্তু রসায়নের প্রতি তাদের ভালোবাসার জন্যও তারা ধীরে ধীরে একজন আরেক জনের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন।

থেরেসা এবং কার্ল ফারিনান্ড কোরি: গার্টি থেরেসা র‌্যাডনিৎজ এমন এক সময়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন যে সময়ে নারী বিজ্ঞানীদের স্বাগত জানায়নি পৃথিবী। কিন্তু তবুও তিনি ১৯১৪ সালে প্রাগের চার্লস বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল স্কুলে ভর্তি হন। এটি সেসময়ে ছিলো একটি বিরল ঘটনা। সঙ্গে সঙ্গে এক মহান কৃতিত্বও বটে। কার্ল কোরিও তখন সেখানে পড়াশোনা করছিলেন। দুজনের দেখা হওয়ার পর কার্ল এবং গার্টি ধীরে ধীরে একজন আরেক জনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে এমন সখ্যতা গড়ে ওঠে যে একসঙ্গে গবেষণার পাশাপাশি দুজনে গবেষণার বাইরেরও তারা একে অপরকে সময় দিতে শুরু করেন। ১৯২০সালে একসঙ্গে স্নাতক করার পর তারা বিয়ে করেন। তাদের ভালোবাসা এতোটাই গভীর ছিলো যে গার্টি থেরেসা ইহুদি ধর্ম থেকে ক্যাথলিক ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। এই প্রেমিক বিজ্ঞানী দম্পতি ১৯৪৭ সালে চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার জিতেছিল।

অ্যানটোনি এবং মেরি অ্যানি লাভোইসার: এই বিজ্ঞানী দম্পতি বিয়েতে যৌতুককে কাজে লাগিয়েছিলো পড়াশোনার কাজে একটি সুসজ্জিত পরীক্ষাগার নির্মাণের জন্য। মেরি-অ্যানের নবনির্মিত ল্যাবে তারা একসঙ্গে কাজ করে উদ্ভিদ ও প্রাণীর দহন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসে অক্সিজেনের ভূমিকাসহ বিজ্ঞানের নানা বিষয় আবিষ্কার করেছেন।

বিজ্ঞানীরা কেবল গবেষণায় নয়, প্রেমের ক্ষেত্রেও সফল বলা যায়। ভালোবাসার বিষয়ে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার একটি বিখ্যাত একটি তত্ত্ব রয়েছে আর তাহলো ‘আপনি যখন একটি সুন্দর মেয়ের সঙ্গে প্রেম করছেন তখন এক ঘন্টাকে সেকেন্ডের মতো মনে হয়। আপনি যখন লাল গরম সিন্ডারে বসেন তখন এক সেকেন্ডকে এক ঘন্টার মতো মনে হয়।’

 

 

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles