
ব্রিটিশ সমাজপতি ঘিষলাইন ম্যাক্সওয়েলকে যৌন নির্যাতন মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি যৌন নিপীড়নের উদ্দেশ্যে কিশোরী মেয়েদের নিয়োগ করে প্রয়াত আমেরিকান অর্থদাতা জেফ্রি এপস্টেইনের কাছে পাচার করতেন।
বুধবার ৬০ বছর বয়সী এই নারীর বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অভিযোগ ছিল, তিনি ১৪ বছরের চেয়ে কম বয়সী মেয়েকে পাচার করেছিলেন। খবর বিবিসি অনলাইনের।
নিউইয়র্কের একটি আদালতের ১২ জন বিচারক টানা পাঁচদিন তর্ক-বিতর্কের পর রায় ঘোষণা করেন। আর এই রায়ের ফলে ব্রিটিশ এই উচ্চ শ্রেণির নারীকে বাকি জীবন কারাগারে কাটাতে হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি ড্যামিয়ান উইলিয়ামস এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন এবং ভুক্তভোগী- যারা বিচারের জন্য এগিয়ে এসেছেন তাদেরকে সাহসী আখ্যা দিয়েছেন।
বুধবার রায় ঘোষণার সময় ম্যাক্সওয়েল দৃশ্যত কোনো রকম প্রতিক্রিয়া দেখাননি। কেবল একগ্লাস পানি থেকে তাকে দুই চুমুক পান করতে দেখা গেছে। রায় ঘোষণার পর পরই তার আইনজীবীরা বলেছেন, তারা আপিলের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জেফ্রি এপস্টেইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা টেরেসা হেল্ম নামে এক নারী বিচার চলাকালে যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন তাদের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, ন্যায়বিচার আজ সবার শীর্ষে। এই বিচার পেতে বিচারকাজ পরিচালনাকারী বিচারক এবং প্রতিটি সাহসী মানুষ যারা লড়াই করেছেন তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।
তিনি বলেন, ঘিসলাইন ম্যাক্সওয়েল আর কখনো কারও কাছ থেকে কিছু নেওয়ার সুযোগ পাবে না। তিনি স্বাধীনতার বিপরীতে থাকবেন।
ম্যাক্সওয়েল দোষী সাব্যস্ত হলেও তার বিরুদ্ধে এখনো সাজা ঘোষণা করা হয়নি। তবে কিশোরীদের যৌন নির্যাতনের উদ্দেশ্যে পাচারের অপরাধে ৪০ বছরের জেল, অপরাধমূলক যৌন কার্যকলাপের উদ্দেশ্যে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে পাচারে ১০ বছরের জেল এবং অপরাধমূলক যৌন কার্যকলাপের উদ্দেশ্যে অপ্রাপ্তবয়স্ককে পাচারের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জেলের বিধান রয়েছে।
ম্যাক্সওয়েল শিশু যৌন নির্যাতনকারী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত হওয়া জেফ্রি এপস্টেইনের দীর্ঘদিনের বান্ধবী ও সহযোগী ছিলেন। তিনি গত জুলাইয়ে গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাগারে আছেন। আর ২০১৯ সালে যৌন পাচারের মামলার বিচারের অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় এপস্টেইন আত্মহত্যা করেন।