
ছবিতে অভিনেত্রী তানভীন সুইটি ও দীপা খন্দকার ছবি সংগৃহীত
“তুমি আমার পাশে বন্ধু হে / বসিয়া থাকো / একটু বসিয়া থাকো/ আমি মেঘের দলে আছি/ ঘাসের দলে আছি/ তুমিও থাকো বন্ধু হে/ একটু বসিয়া থাকো…।”~ ধ্রুব এষ
জীবনে চলার পথে অসংখ্য মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়। কিন্তু সখ্যতা ঠিক সবার সঙ্গে হয় না। আবার যাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে, তাদের সবাই হৃদয়ের খুব কাছের হয় না। অর্থাৎ প্রিয় ও পরম বন্ধু হয় না। বন্ধুত্বের সংজ্ঞা একেকজনের কাছে একেকরকম হলেও, একটি জায়গায় ঠিক। আর তা হলো নির্ভরতা। প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে বিশ্বাস, ভরসা, স্নেহ, নির্ভরতার জায়গাগুলো থাকে একেবারে নিখাঁদ। প্রিয় বন্ধুকে চোখ বন্ধ করেও বিশ্বাস করা যায়। বন্ধুর চোখের দিকে তাকালে মনের কথাগুলোও যেন বোঝা যায় স্পষ্টভাবে। প্রিয় বন্ধুর কাঁধে মাথা রেখে যেমন নির্ভার হওয়া যায়, তেমনি তার জন্য নির্দ্বিধায় প্রাণ উৎসর্গও করা যায়। পরম কাছের বন্ধু যেমন বিপদে ফেলতে পারে, তেমনি বিপদ থেকে উদ্ধারও করতে পারে। বাস্তবতার আঘাতে বিধ্বস্ত ও ভাঙচুর হওয়া হৃদয়কে নতুন করে বাঁচিয়ে তুলতেও বন্ধুর ভূমিকা অপরিসীম। আজ ৮ জুন, বেস্ট ফ্রেন্ড ডে বা ঘনিষ্ঠ বন্ধু দিবস। প্রিয় বন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা প্রকাশের দিন আজ। ১৯৩৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস দিনটি চালু করে। এর পর থেকে সে দেশে প্রতিবছর এটি পালিত হচ্ছে।
বেস্ট ফ্রেন্ড দিবসে যেভাবে বন্ধুকে চমকে দিতে পারেন:
• আপনার বন্ধু হয়তো জানেন না আজ বেস্ট ফ্রেন্ড ডে। আপনি তার বাসা কিংবা অফিসের নিচে চলে যেতে পারেন। হাতে রাখতে পারেন বন্ধুর পছন্দের ফুল, চকোলেট কিংবা সুগন্ধি। আপনার উপহার পেয়ে চমকে যাবেন তিনি।
তারপর দুজনে মিলে খোশগল্পে মেতে উঠতে পারেন।
• কাজের চাপ ও ব্যস্ততায় প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে যদি অনেকদিন যোগাযোগ না হয়ে থাকে, তবে আজকের দিনে তাকে একটি কল করুন। এরপর গলা ছেড়ে গান ‘পুরো পৃথিবী এক দিকে আর আমি অন্য দিক / সবাই বলে করছো ভুল আর তোরা বলিস ঠিক/ তোরা ছিলি, তোরা আছিস/ জানি তোরাই থাকবি / বন্ধু বোঝে আমাকে / বন্ধু আছে, আর কী লাগে?’ দেখবেন অনেক দিন পর আপনার ফোনকল বন্ধুর নয়ন অশ্রুসিক্ত করবে।
• ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় এখন বিভিন্ন ধরনের চা পাওয়া যায়। এই ধরুন মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোড, চিলড্রেনস গার্ডেন স্কুলের পাশে গড়ে ওঠা ফুড কোর্ট, সলিমুল্লাহ রোডের চা অ্যান্ড চিল, টি-এসসিসহ বিভিন্ন এলাকায় তান্দুরি চা, মাসালা চা, মাল্টা চা পাওয়া যায়। প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে একটি বিকেল ও সন্ধ্যা কাটাতে পারেন চায়ের আড্ডায়। গল্পে গল্পে না হয় কাটুক একটি সন্ধ্যা। গানের গলা ভালো হলে বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে গাইতে পারেন জেমসের গাওয়া সেই জনপ্রিয় গান- ‘আরও কিছুক্ষণ কি রবে বন্ধু / আরও কিছু কথা কি হবে।। / বলবে কি শুধু ভালোবাসি তোমায় / বলবে কি শুধু তুমি যে আমার / মুছে ফেলে সব জড়তা।।” অথবা রবীন্দ্রনাথের সেই চিরচেনা কোমল গানটি গাইতে পারেন। কাঁধে মাথা রেখে বন্ধুর উদ্দেশে গাইতে পারেন- ‘ ওলো সই, ওলো সই,/ আমার ইচ্ছা করে তোদের মতন মনের কথা কই। / ছড়িয়ে দিয়ে পা দুখানি/ কোণে বসে কানাকানি, / কভু হেসে কভু কেঁদে চেয়ে বসে রই। / ওলো সই, ওলো সই।”
• আপনার প্রিয় বন্ধু যদি নারী হয়, তবে এক মুঠো কাঁচের চুড়ি, এক পাতা টিপ কিংবা একটি বেলিফুলের মালা উপহার দিতে পারেন তাকে। মুহূর্তেই খুশি হয়ে যাবে।
• প্রিয় বন্ধুকে তার পছন্দের বই, গাছ, কাস্টমাইজ মগ, ফটোফ্রেম উপহার দিতে পারেন। তাকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলোতে বেশি সময় কাটানো প্রিয় রেস্তোরাঁ, প্রিয় প্রাঙ্গনে চলে যেতে পারেন।
• চাইলে বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে বাইক রাইড করতে পারেন। খুব বেশি দূরে না হোক, ঢাকার কাছাকাছি কিংবা ঢাকার ভেতরের প্রিয় কোনো জায়গা থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
• যদি একান্তই কোথাও যাওয়ার সুযোগ না পান, তাহলে বন্ধুর বাসায় চলে যান। একসঙ্গে কিছু সময় কাটান। হৃদয় দিয়ে তার হৃদয়ের সুখ, ব্যথা, অনুভূতিগুলো বোঝার চেষ্টা করুন। আপনিও শেয়ার করুন আপনার মনে জমে থাকা আনন্দ-বেদনা কিংবা রোমাঞ্চকর স্মৃতি। ব্যথার জঞ্জাল প্রিয় বন্ধু ছাড়া কাকেই বা এতটা খুলে বলা যায় বলুন?