কভিড-১৯ মহামারীতে ২০২০ সালে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে কানাডার অর্থনীতি। চতুর্থ প্রান্তিকে দৃঢ় পুনরুদ্ধার সত্ত্বেও রেকর্ড শুরু হওয়ার পর এটিই সবচেয়ে বড় সংকোচন। দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে। অক্টোবর-ডিসেম্বর সময়কালে করোনা সম্পর্কিত বিধিনিষেধ সত্ত্বেও ব্যবসার সরঞ্জাম ও আবাসন খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে বিপুল পরিমাণ ব্যয় করে সরকার। ফলে এ সময়ে অর্থনীতি ৯ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছিল। যেখানে আগের বছর ২০১৯ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ৯ শতাংশ।
কানাডিয়ান বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্যাংক অব মন্ট্রিলের (বিএমও) প্রধান অর্থনীতিবিদ ডগলাস পোরটার বলেন, কানাডার অর্থনীতি বিস্ময়কর আশাবাদের মধ্য দিয়ে ২০২০ সালের চূড়ান্ত লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়েছে। দেশটি সংক্রমণের দ্বিতীয় ঝড় এবং এ-সম্পর্কিত বিধিনিষেধ প্রত্যাশার চেয়েও অনেক ভালোভাবে মোকাবেলা করেছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে কভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বিস্তৃত হচ্ছে। ফলে চলতি বছর অর্থনীতি দৃঢ় পুনরুদ্ধারের আশা করা হচ্ছে। গত বছর গভীর পতনের পর এটি দুর্দান্ত চিত্র। অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের গ্রাফটি ভি আকারের না হলেও খুব কাছাকাছি হবে।
এমন পরিস্থিতিতে বিএমও ২০২১ সালে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে। অবশ্য এ হার ১৯৭৪ সালের পর আর দেখা যায়নি। অন্যদিকে ব্যাংক অব কানাডার পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছর ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। পরিসংখ্যান কানাডার মতে, গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে নতুন বাড়ি নির্মাণ ও সংস্কারের পাশাপাশি আবাসন খাতের বিক্রি বেড়েছে। পাশাপাশি এ সময়কালে আবাসিক বন্ধকি ঋণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা আরো বেশি যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কিনেছিল। তবে অফিস ভবন এবং শপিং মলে দুর্বল চাহিদার মধ্যে চতুর্থ প্রান্তিকে অনাবাসিক ভবনগুলোয় বিনিয়োগ কমেছে। এ সময়কালে গৃহস্থালি ব্যয় কিছুটা কমেছে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার এ সময়ে কানাডিয়ানরা নতুন যানবাহনের পরিবর্তে ব্যবহূত গাড়ি ও ট্রাক কিনতে বেশি আগ্রহী ছিলেন। পোশাক ও পাদুকা কেনা কমে গেলেও গেমস, খেলনার পাশাপাশি খেলাধুলার সরঞ্জাম, ক্যাম্পিং এবং উন্মুক্ত-বিনোদনের বিষয়গুলো বেড়ে ভারসাম্যপূর্ণ হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় ব্যবসায়িক অংশীদারদের অর্থনৈতিক মন্দার কারণে অক্টোবর-ডিসেম্বর সময়কালে কানাডার রফতানি প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়েছিল। গত বছর রফতানির পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৮ শতাংশ কমে গিয়েছিল। অন্যদিকে আগের দুই প্রান্তিকে রেকর্ড ওঠানামার পর দেশটির আমদানি কিছুটা বেড়েছে। তবুও পুরো বছরের সামগ্রিক আমদানি আগের বছরের তুলনায় ১১ দশমিক ৩ শতাংশ কম ছিল।