14.8 C
Toronto
বুধবার, মে ১, ২০২৪

মাদক কারবারি রুনার ডজনখানেক বাড়ি, থাকেন বস্তিতে

মাদক কারবারি রুনার ডজনখানেক বাড়ি, থাকেন বস্তিতে
রুনা বেগম

রুনা বেগম চিহ্নিত মাদক কারবারি। বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ১৬টি মাদক মামলা রয়েছে। এ কাজে তাঁর সঙ্গী স্বামী সুমন মিয়া। তাঁর বিরুদ্ধেও রয়েছে সাত মামলা। গাজীপুরের টঙ্গীর কেরানীর টেক বস্তির বাসিন্দা রুনা মাদক বিক্রির টাকায় গড়ে তুলেছেন অন্তত ডজনখানেক বাড়ি। কিন্তু বসবাস করেন বস্তিতে।

বৈধ আয়ের কোনো উৎস দেখাতে না পারায় কয়েকদিন আগে ৯৩ লাখ টাকাসহ রুনার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। সম্প্রতি গ্রেপ্তারের পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য গাজীপুরের পূবাইল থানা পুলিশ ৪ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃতীয় পক্ষের ঘুষ নেওয়ার সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে। তবে পূবাইল থানা পুলিশের দাবি, ঘুষ লেনদেনের সঙ্গে পুলিশের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

- Advertisement -

জানা যায়, কেরানীর টেক বস্তিতে গত ১ অক্টোবর মাদক মামলার আসামি রুনাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালায় পূবাইল থানা পুলিশ। এসআই হুমায়ূন কবিরের নেতৃত্বে ওই অভিযানে গ্রেপ্তার হন রুনা ও তাঁর স্বামী সুমন। কিন্তু সহযোগীদের বাধায় পুলিশ তাদের থানায় নিতে পারছিল না। এরই মধ্যে ওই এলাকার আব্দুর কাদিরের মেয়ে রুনা তাঁর ব্যক্তিগত মুহুরি আলা উদ্দিন ও স্থানীয় ইয়াসিন সরকার হৃদয়ের সহযোগিতা চান। পরে তারা রুনাকে ছাড়িয়ে নিতে তাঁর বাড়িতে যান। এ সময় পুলিশকে দেওয়ার কথা বলে আলা উদ্দিন ও হৃদয় ৪ লাখ টাকা নেন। সেই টাকা নেওয়ার ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, হৃদয় মোবাইল ফোনে বলছেন– ‘স্যার পুরাটাই পাইছি।’ এর পর অপর প্রান্ত থেকে বলতে শোনা যায়, ‘চলে এসো, চলে এসো।’ অভিযোগ উঠেছে, অন্য প্রান্ত থেকে কথা বলছিলেন পূবাইল থানার ওসি শফিকুল ইসলাম। জানতে চাইলে ওসি সমকালকে বলেন, অন্য প্রান্তে কথা বলা ব্যক্তি আমি নই। হৃদয় কার সঙ্গে কথা বলেছে সেটা আমি কীভাবে বলব? হৃদয় ও আলা উদ্দিন নামে দুই ব্যক্তি রুনাকে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি। রুনাকে থানায় নিয়ে আসার সময় তাঁর লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করেছিল। এতে চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তারের পর তাদের পূবাইলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

ইয়াসিন সরকার হৃদয় বলেন, পুলিশ আমাদের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার পর রুনার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি। আইনজীবী টেলিফোনে বলেছিলেন, যদি এতে রাজি না হয় তাহলে চলে এসো। ৪ লাখ নয়, ২ লাখ টাকা দিয়েছিল রুনার পরিবার। কিন্তু পুলিশ রাজি না হওয়ায় সেই টাকা ফেরতও দেওয়া হয়েছে।

রুনার ছোট বোন কারিমা আক্তার বলেন, আমার বোন ও বোন জামাইকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে ৪ লাখ টাকা দাবি করেন হৃদয়। পরে তাঁকে ৪ লাখ টাকাই দেওয়া হয়। তিনি আমাদের কোনো টাকা ফেরত দেননি।

সেই টাকা পুলিশের হাতে দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে কারিমা বলেন– না, পুলিশ সদস্যের হাতে টাকা দেওয়া হয়নি। ওসি আমাদের কাছে কোনো টাকা দাবি করেননি। তবে এসআই হুমায়ূন কবির টাকা চেয়েছিলেন।

ওসি শফিকুল বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই রুনা ও তাঁর স্বামী সুমন মাদকের ব্যবসা করে বিশাল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে মাদকের অন্তত ২৩টি মামলা রয়েছে। আয়ের বৈধ উৎস দেখাতে না পারায় সম্প্রতি ৯৩ লাখ টাকাসহ তাঁর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। পুলিশের কাজে বাধা ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় ওই দিনই তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন। সূত্র: সমকাল

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles