12.8 C
Toronto
রবিবার, মে ১৯, ২০২৪

যে কারণে উদ্ধার করা যাচ্ছেনা ডাচ্-বাংলার ৩ কোটি টাকা

যে কারণে উদ্ধার করা যাচ্ছেনা ডাচ্-বাংলার ৩ কোটি টাকা

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ছিনতাই হওয়া ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকার পুরোটা এখনো উদ্ধার হয়নি। ছিনতাইয়ের পর ডিবি’র কয়েকটি অভিযানে উদ্ধার হয়েছে ৮ কোটি ১৯ লাখ ৫ হাজার ৫০০ টাকা। এই টাকার মধ্যে ২০ লাখ টাকা দামের একটি নোহা গাড়ি আছে। ছিনতাই করা টাকা দিয়ে একজন আসামি গাড়িটি কিনেছিল। এই হিসাবে এখনো উদ্ধারের বাকি আছে ৩ কোটি ৫ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ টাকা।

- Advertisement -

কিন্তু বাকি টাকা উদ্ধার হবে কি হবে না এ নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। কারণ ছিনতাই করার পর ভাগ-বাটোয়ারা করে আসামিরা অনেক টাকাই রাতারাতি খরচ করেছে। এ ছাড়া কিছু টাকা গ্রেপ্তার আসামি ও ছিনতাইয়ের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আকাশ আহমেদ বাবুল তার নিজের কাছে রেখে দিয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাকে কয়েকবার রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেও সেই টাকার সন্ধান বের করতে পারেনি। এ ছাড়া আরও দুজন আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি।

তাদেরকে গ্রেপ্তার করলে বাকি টাকার সন্ধান পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা করছে ডিবি’র তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী তৃতীয় পক্ষ মানিপ্ল্যান্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন, আমি ৭ কোটি ৯৯ লাখ ৫০০ টাকা বুঝে পেয়েছি। বাকি টাকার জন্য ডিবি’র সঙ্গে যোগাযোগ করছি। কারণ আমি ডিবি’র উপরই নির্ভরশীল। তারা চেষ্টা করলে বাকি টাকা উদ্ধার হবে। কয়েকদিন আগেও তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা বলেছেন টাকা উদ্ধার ও দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।

ডিবি’র মিরপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ১২ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। ৮ কোটি টাকার উপরে উদ্ধার হয়েছে। বাকি টাকার মধ্যে বেশকিছু টাকা তারা খরচ করেছে। আকাশের কাছে বড় অংকের টাকা আছে। কিন্তু আকাশ সেটি স্বীকার করছে না। আর দুইজন আসামি পলাতক আছে। ডিবি মিরপুর ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মানস কুমার পোদ্দার বলেন, নতুন করে আর কোনো টাকা উদ্ধার বা আসামি গ্রেপ্তার করা হয়নি। দুজন আসামিকে আমরা শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

ডিবি’র তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, গ্রেপ্তার আকাশ আহমেদ বাবুল টাকা ভাগের সময় মানিপ্লান্টের এক প্রকৌশলীর কথা বলে দেড় কোটি টাকা বেশি নিয়েছে। সেই টাকার হদিস মিলছে না। রিমান্ডে আসা আসামিদের অনেকেই জানিয়েছে সেই টাকা আকাশ নিয়েছে। কিন্তু ডিবি কর্মকর্তাদের কাছে আকাশ টাকার বিষয়টি স্বীকার করছে না। আকাশ পেশাদার অপরাধী। এর আগেও টাকা ছিনতাইয়ের একাধিক ঘটনার সঙ্গে সে জড়িত ছিল। ধরা পড়ার ভয়ে আগে থেকেই ওই টাকা গোপন কোনো স্থানে লুকিয়ে রেখেছে। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত জনি ও মোস্তফাকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। তাদেরকে শনাক্তও করা যাচ্ছে না। তাদের কাছে বড় অংকের টাকা রয়েছে।

ছিনতাইয়ের ঘটনায় হওয়া মামলার তদন্ত তদারকি করেন এমন এক কর্মকর্তা বলেন, টাকা ভাগ-বাটোয়ারার পর তারা ভেবেছিল রাতারাতি ধনী হয়েছে। হাতে অনেক টাকা। তাই তারা নিজের ইচ্ছেমতো খরচ করেছে। যে যেভাবে পারে খরচ করেছে। এমন কিছু কিছু খাতে খরচ করেছে যেখান থেকে টাকা রিকোভারি করা যাবে না। তাই এসব টাকা উদ্ধার হওয়ার সম্ভাবনা নাই।

ডিবি’র তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গ্রেপ্তার ১২ জনের মধ্যে ৭ জনের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তারা ছিনতাই হওয়া টাকার ভাগ-বাটোয়ারার সঙ্গে জড়িত ছিল। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার সানোয়ার হাসানের কাছ থেকে ১ কোটি ১৪ লাখ ৫১ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ইমন ওরফে মিলনের কাছ থেকে ৩২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০, সাগর মাদবরের কাছ থেকে ১ কোটি ৭ লাখ, হৃদয়ের কাছ থেকে ৪৮ লাখ ৭ হাজার, মিলন মিয়ার কাছ থেকে ১০ লাখ ও আকাশ আহমেদ বাবুলের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা মূল্যের নোহা গাড়ি ও সোহেল রানার কাছ থেকে ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া গ্রেপ্তারদের তথ্যমতে আরও ৯ লাখ ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার হয়। এর বাইরে ঘটনার দিন অভিযান চালিয়ে ৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

তুরাগ থানার মামলায় ডিবি’র কাছে গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. সানোয়ার হাসান (২৮), মো. ইমন ওরফে মিলন (৩৩), মো. আকাশ মাদবর (২৫), সাগর মাদবর (২২), মো. বদরুল আলম (৩৩), মো. মিজানুর রহমান (২০), মো. সোনাই মিয়া (২৮), মো. এনামুল হক বাদশা (২৬), মো. হ্নদয় (২১), মো. মিলন মিয়া (২৯), মো. আকাশ আহম্মেদ বাবুল (৪২), সোহেল রানা শিশির (৩৪)।

সূত্র : মানবজমিন

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles