4 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

‘স্ত্রীর মর্যাদা না দিলে মরা ছাড়া কোন উপায় নেই’

‘স্ত্রীর মর্যাদা না দিলে মরা ছাড়া কোন উপায় নেই’

মেয়ে রাকিবা আক্তার ও ছেলে হিরা মুক্তা (রবি)। গার্মেন্টসে কাজ করতে গিয়ে পরিচয় চট্টগ্রামে। মৌলভী ডেকে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও পরিবারের সবার উপস্থিতিতে দুই বছর আগে ছেলের বাড়ি বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের অংসাঝিরিতে বিয়ে হয়। জন্ম নিবন্ধন না থাকায় বিবাহ রেজিস্ট্রি হয়নি। তবে স্টাম্প হয়েছিল। সেই কাগজ ছেলের পরিবারের কাছে।

- Advertisement -

রবি ও রাকিবা’র দুইবছরের সংসার, গত তিন মাস আগে তাদের মৃত এক সন্তান জন্ম হয়। সন্তান জন্মের পর রাকিবা আক্তারের কাছে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তার স্বামী রবি ও তার শাশুড়ি নুরজাহান বেগম। টাকা দিতে না পারায় দুই মাস আগে মেয়েটিকে চট্টগ্রাম বোনের বাড়িতে চিকিৎসার কথা বলে পাঠিয়ে দিয়ে আবারো বিয়ে করে রবি।

এদিকে স্বামীর ২য় বিয়ের কথা জানতে পেরে চট্টগ্রাম থেকে গত বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) অংসাঝিরিতে আসে রাকিবা। কিন্তু রাকিবা’র আশ্রয় হল না স্বামীর বাড়িতে। মেয়েটির বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ পৌরসভার আজিমনগর গ্রামে। তার বাবার নাম মোঃ মনফর আলী (৯৫) মা মৃত দিলারা বেগম। চার বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। শতবর্ষী বৃদ্ধ বাবা বেঁচে থাকলেও মা অনেক আগেই মারা গেছে। অভিভাবক বলতে কেউ নেই। অংসাঝিরিতে তার স্বামী রবির ফুফা আব্দুর শুক্কুর ফুফু রুবি আক্তার কে মা-বাবা ডাকলে, বর্তমানে তাদের বাড়িতে আশ্রিতা হিসাবে আছে রাকিবা। ছেলে হিরা মুক্তা (রবি) ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের অংসাঝিরির মৃত সাহাব উদ্দিন ও নুরজাহান বেগমের সন্তান।

রাকিবা বেগম (২১) জানান, আমাদের বিয়ে হয়েছে দুই বছর। তিন মাস আগে মরা বাচ্চা হয়েছে আমার। বাচ্চা প্রসবের ব্যথা উঠলে সেদিন আমার শাশুড়ি নুরজাহান বেগম আমাকে তিনটি করে দুইবারে ৬টি ট্যাবলেট খাওয়ায়। তার কিছুক্ষণ পরে আমার মৃত বাচ্চা হয়। বাচ্চা প্রসবের কিছুদিন আগে আলট্রাসনোগ্রাফী করেছিলাম, তখন ডাক্তার বলে বাচ্চা সুস্থ আছে। মৌলভী ডেকে বিয়ে হওয়ায় এবং কাবিননামা না থাকায় ও ৫ লাখ টাকা দিতে না পারায় তারা এখন আমাকে অস্বীকার করছে। আমার কোন অভিভাবক নেই। ‘স্ত্রীর মর্যাদা না দিলে মরা ছাড়া আমার আর কোন উপায় নেই’।

তিনি আরো বলেন, সংসারে সুখের জন্য বিয়ের পরে আমার জমানো ৯২ হাজার টাকা ও কানের আট আনা ওজনের স্বর্ণের জিনিস আমি স্বামীকে দিই। এখন টাকা দিতে পারছিনা বলে আমি খারাপ। বিয়ের সময় ছেলে ফুফা আব্দুর শুক্কুর, ফুফু রুবি আক্তার, মালুম্যা গ্রাম সর্দ্দার মোঃ শাহজাহান, স্থানীয় মৌলভী, ছেলের পরিবারের লোকজন সহ অনেকে উপস্থিত ছিল।

ছেলের ফুফা আব্দুর শুক্কুর ও ফুফু রুবি আক্তার বলেন, আমাদের উপস্থিতিতে তাদের বিয়ে হয়। দুইবছর সংসার করার পরে এখন অস্বীকার করার বিষয়টি দুঃখজনক। দুইবছর সংসার করার পর একটা মেয়েকে তাড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি মেনে নেয়া যায়না। আমরা আশ্রয় না দিলে মেয়েটির যাওয়ার কোন জায়গা নেই।

এবিষয়ে মালুম্যা গ্রামের সর্দ্দার মোঃ শাহজাহান জানান, বিয়েতে তিনি সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় মৌলভী বিয়ে পড়ায়। মেয়ের বাড়ি হবিগঞ্জ। সে সময় মেয়ের কাছে জন্ম নিবন্ধন না থাকায় বিবাহ রেজিস্ট্রি করা যায়নি। তবে স্টাম্প হয়েছিল। পরে বিবাহ রেজিস্ট্রি করার কথা ছিল।

রাকিবা আক্তারের স্বামী হিরা মুক্তা (রবি) অভিযোগ গুলো অস্বীকার করে বলেন, রাকিবা’র পূর্বে স্বামী ও সন্তান ছিল সেটা সে গোপন করেছে। সেটা জানতে পেরে আমি দুইমাস আগে আবারো বিয়ে করেছি। আমি রাকিবা কে ধর্মীয়ভাবে বিয়ে করলেও রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করিনি। এদিকে পূর্বের স্বামী ও সন্তান আছে, বিষয়টি ছেলের পরিবারের সাজানো বলে দাবি করেন মেয়ে।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোঃ হেলাল উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমরা জানি। ছেলে রবির মা নুরজাহান বেগম কারো কথা শুনেনা। খুবই খারাপ ও লোভী মহিলা। তার একটা ছেলের বউকে শান্তি দেয়নি সে। তার কারণে ঘরে কোন বউ থাকতে পারেনা। অসহায় মেয়ে রাকিবা আক্তারকে আইনী পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

সূত্র : বিডি২৪লাইভ

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles