লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের কাজিরদীঘিরপাড় আলিম মাদ্রাসায় দশম শ্রেণির ৬ ছাত্রের চুল কেটে দেওয়া সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুরুল কবিরকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার বামনী ইউনিয়নের কাজিরদিঘীরপাড় এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
উল্লেখ্য, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জন ছাত্রের মাথার চুল কাঁচি দিয়ে কাটার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই লক্ষ্মীপুরে আলিম মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ৬ ছাত্রের চুল কেটে দিলেন শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির।
গত বুধবার ক্লাস চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্র ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, লক্ষ্মীপুরে রায়পুরে কাজিরদিঘীরপাড় আলিম মাদরাসার শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির প্রতিদিনের মতো বুধবার শ্রেণিকক্ষে পাঠ্য কার্যক্রমে অংশ নেন। একপর্যায়ে শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির দাখিলের ৬ ছাত্রকে দাঁড় করিয়ে শ্রেণি কক্ষের সামনের বারান্দায় আসতে বলেন।
এসময় তিনি উত্তেজিত হয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে একটি কেঁচি এনে একে-একে সবার মাথার টুপি সরিয়ে সামনের অংশের চুল এলোমেলোভাবে কেটে দেন।
পরে তারা লজ্জায় ক্লাস না করেই বেরিয়ে যায়। এ ঘটনার ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে কয়েকজন ছাত্রকে কান্না করতে দেখা গেছে। ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তোলপাড় শুরু হয় জেলাজুড়ে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির মঞ্জুকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার (৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বামনী ইউনিয়নের কাজিরদিঘীরপাড় এলাকা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। আটক মঞ্জু হামছাদী কাজিরদিঘীরপাড় আলিম মাদরাসার সহকারী শিক্ষক ও বামনী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির।
মাদ্রাসা সমিতির নেতা আলমগীর হোসেন ও নিজামউদ্দিন এ ঘটনরার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে মুক্তি দিতে প্রশাসনের নিকট দাবি জানান শিক্ষক নেতারা। তারা জানান, নৈতিক শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের শাসন করতে ৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেয়া হয়েছে। কিন্তু চুল কাটা ঠিক হয়নি। এটি কোনভাবে কাম্য নয়। তারপরও শিক্ষক হিসেবে তাকে ছাড় দিতে অনুরোধ করেন তারা। পাশাপাশি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকত বিষয়টি উদঘাটন করার দাবি জানান।
অভিযুক্ত শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে থাকা ও নীতি-নৈতিকতা শিক্ষা দেয়ার জন্যই চুল কেটে দিয়েছি। তবে বিষয়টি নিয়ে আমি অনুতপ্ত।