18.4 C
Toronto
রবিবার, মে ১৯, ২০২৪

১৯ বছর পর মা-মেয়ের মিলন

১৯ বছর পর মা-মেয়ের মিলন

২০০৩ সালের ১ জুন। ঢাকার সদরঘাটে খালা ফিরোজা বেগমের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন লাকী। খালা তার কর্মস্থলে গেলে চার বছরের শিশু লাকী খেলাধুলা করতে বাইরে যান। সদরঘাটে থাকা লঞ্চে উঠে খেলাধুলার একপর্যায়ে লঞ্চটি খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ছোট্ট লাকী হারিয়ে যায়। দীর্ঘ ১৯ বছর অনেক ঘাত-প্রতিঘাত আর সংগ্রাম করে বেঁচে থাকার পর অবশেষে পুলিশের সহায়তায় পরিবার খুঁজে পান লাকী। আশ্রয় পান মায়ের কোলে।

- Advertisement -

পুলিশ জানিয়েছে, লাকী যে লঞ্চে খুলনায় চলে যায়, সেই লঞ্চের সিকিউরিটি গার্ড তাকে আশ্রয় দেন। তিনি লাকীকে ইউনিসেফ স্কুলে ভর্তি করে দেন। স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি সিকিউরিটি গার্ড লাকীকে দিয়ে বিভিন্ন বাসায় কাজও করাতেন। এভাবে দুই বছরের মাথায় খুলনায় শিহাব নামে এক লোকের বাসায় কাজে দেন। লাকীকে সিকিউরিটি গার্ড তার মেয়ে বলে পরিচয় দেন। কিন্তু শিহাব লাকীর কাছে জানতে পারেন যে, সিকিউরিটি গার্ড লাকীর পিতা নন।

এর পর শিহাব পুলিশি সহায়তায় লাকীকে নিজ জিম্মায় নিয়ে তার বাসায় ৫ বছর রাখেন। সেখান থেকে লাকী তার হারানো বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যেতে চাইলে শিহাব কোর্টের সহযোগিতায় লাকীকে সেইফ কাস্টোডিতে (বাগেরহাট) হস্তান্তর করেন। লাকী সেখানে অবস্থানকালে পূর্ণবয়স্ক হলে আদালত তাকে নিজ জিম্মায় প্রদান করেন। এর পর ফিরোজ নামের এক লোকের বাসায় প্রায় ২ বছর কাজ করেন। পরে পূর্ব পরিচিত শিহাবের স্ত্রী খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি স্কুলের শিক্ষিকা হওয়ায় এবং তার বাচ্চা লালন-পালনের জন্য লাকী মহালছড়িতে শিহাবের স্ত্রীর কাছে চলে যান। সেখানে শিহাবের স্ত্রীর বাসায় কাজ করার পাশাপাশি লাকী আরও একাধিক বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেন।

সর্বশেষ গত ১১ আগস্ট ইকবাল নামের এক ব্যক্তির বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেন। পরে সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ডিভিশন, ডিএমপি ঢাকার তথ্যমতে মহালছড়ি থানাপুলিশ ইকবাল সাহেবের বাসা থেকে ১৮-১৯ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া লাকীকে উদ্ধারের সব প্রক্রিয়া গ্রহণ করে তার মা হামিদা খাতুনের কাছে গত বৃহস্পতিবার বুঝিয়ে দেন।

ডিএমপির ডিবিপ্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ১৯ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে উদ্ধারের জন্য গত ৮ ফেব্রুয়ারি লাকীর মা হামিদা খাতুন লিখিত আবেদনে সাহায্য চান। তিনি তার আবেদনের সঙ্গে ২০০৩ সালে হারিয়ে যাওয়া অষ্টগ্রাম থানায় হারানো জিডি ও চেয়ারম্যান বরাবর করা নিখোঁজ আবেদন সংযুক্ত করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডিবি নিখোঁজ লাকীকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরেছে। তাদের পাশে থাকবে ডিবি।

সূত্র : আমাদের সময়

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles