2.9 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

রাজকন্যা

রাজকন্যা - the Bengali Times
ছবিআন্দ্রিক ল্যান্ডফিল্ড

মা শিশুকে দোল দিতে দিতে গান করে। দোলনার দোলায় শিশুটি হাসে। কী যে ফুটফুটে একটি শিশু। মনে হয় যেন একটি ফুটন্ত ফুল ফুটে আছে। মা ভাবে কার মতো হয়েছে তার মেয়েটি? এই পরিবারে তো এমন সুন্দরী কেউ নেই। মায়ের নজর নাকি বড্ড খারাপ এই ভেবে মা থুথু ছিটিয়ে দেয় শিশুটির গায়ে। বড় করে কালো টিপ দিয়ে রাখে শিশুটির কপালে যেন কারো নজর না লাগে শিশুটির উপর। মা বাবা আদর করে শিশুটির নাম রাখে ‘রাজকন্যা’। মেয়ে যে তাদের রাজকন্যার মতোই দেখতে। রাজকন্যার দাদি বলে রাজকন্যা হয়েছে তার দাদির মতো। সে তো কতকাল আগের কথা, দাদির-দাদি? কী করে এতকাল পরে রাজকন্যা সে রূপ নিয়ে জন্মগ্রহণ করলো? শাশুড়ির কথা শুনে রাজকন্যার মা হাসে। ভেবে নেয় এটা শাশুড়ির মনগড়া কথা। রাজকন্যার দাদি চেহারা মলিন করে বলে, ‘শোন বউমা, আমাদের মতো সাধারণ পরিবারের মেয়েদের এত রূপ ভালো না। পরের ঘরে যাবার আগে পর্যন্ত মেয়েকে তোমার আগলে রাখতে হবে। দুনিয়া বড় খারাপ বুঝলা বউমা?’ রাজকন্যার মা বিরক্ত বোধ করে শাশুড়ির কথায়। রাজকন্যার মা রাজকন্যাকে সাজায়, মেয়েকে কোলে নিয়ে গান গেয়ে ঘুম পাড়ায়। বাবা নানারকম খেলনা জামা কাপড় কিনে আনে মেয়ের জন্য। রাজকন্যা যেন তাদের খেলার পুতুল। কতো স্বপ্ন দেখে বাবা-মা রাজকন্যাকে নিয়ে। বাবা-মায়ের আদর ভালোবাসায় রাজকন্যা বেড়ে উঠতে থাকে। তিন মাস, ছয় মাস, একবছর বয়েস হয়ে যায় রাজকন্যার। এর মাঝেই একপা দুপা হাঁটতে শুরু করেছে রাজকন্যা। বাবা-মা রাজকন্যার জন্মবার্ষিকী পালন করলো ঘটা করে। শাশুড়ি আবারো মুখ মলিন করে বললেন, ‘এত বাড়াবাড়ি ভালো না। মানুষের নজর লাগে।’

রাজকন্যা একবছর পেরিয়ে দেড় বছর পেরিয়ে দুবছরে পা দিল। কিন্তু রাজকন্যা কোনো কথা বলে না কেন? রাজকন্যার বাবা-মায়ের দুশ্চিন্তা বাড়তেই থাকে। মা রাজকন্যাকে বলতে থাকে, মা বলো, মা-মা। বাবা বলে, মা বলো, বাবা-বাবা। রাজকন্যা কিছুই বলে না। অদ্ভুত শব্দ করে কী যেন বলতে চায় আর বাবা-মায়ের দিকে তাকিয়ে হাসে। স্বজনরা সান্ত্বনা দিয়ে বলে চিন্তার কোনো কারণ নেই, অনেক বাচ্চাদের তারা চিনে যারা তিন বছর চার বছরে কথা বলেছে। রাজকন্যার দাদি জায়নামাজে বসে দোয়া দুরুদ পড়েন রাজকন্যাকে যেন আল্লাহ্তালাহ তাড়াতাড়ি কথা বলার ক্ষমতা দান করেন। রাজকন্যা বাবা-মায়ের সাথে খেলে, মা-বাবাকে আদর করে চুমু দেয়, বাবার চুল টেনে টেনে খেলে, মাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমায়। কি খাবে কি নিয়ে খেলবে আঙুল দিয়ে দেখায়। হাসে কাঁদে স্বাভাবিকভাবে কিন্তু একটা শব্দও ফুটে না মুখ দিয়ে। নাহ এভাবে বসে থাকা যায় না। রাজকন্যার বয়েস এখন তিন বছরের কাছাকাছি হয়ে গেছে। এখন ডাক্তার দেখাতে হবে। নানারকম ছোট খাট শারীরিক অসুস্থার জন্য কতবারই ডাক্তার দেখেছে, কই কেউ তো কখনো বলেনি রাজকন্যার কথা বলার সমস্যা হবে? রাজকন্যাকে নিয়ে বাবা-মা যায় ডক্তারের কাছে। মফস্বল শহর ফরিদপুর। এখানে বিশেষ অসুস্থতার জন্য বিশেষ কোনো বিশেষজ্ঞ নেই। তারপরও ডাক্তার নানারকম পরীক্ষা করে জানালেন, মনে হচ্ছে কণ্ঠনালীতে সমস্যা আছে আর কণ্ঠনালীতে সমস্যা মানে কানেও সমস্যা, আপনারা বরং ঢাকা নিয়ে কোনো গলা-কানের বিশেষজ্ঞ দেখান এবং তাদের পরামর্শ মতো যা করনীয় তাই করান। রাজকন্যার বাবা-মায়ের চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরতে থাকে। তাহলে কি আমাদের রাজকন্যা বোবা-কালা হবে? ডাক্তার সান্ত্বনা দেয়, এত ভাববেন না। দেখুন বড় ডাক্তার কী বলেন। আমি তো আর এই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ নই। ডাক্তার সাহেব নাম ঠিকানা সবকিছু দিয়ে দিলেন রাজকন্যার বাবা-মাকে ঢাকার ডাক্তারের। রাজকন্যা কিছুই বুঝতে পারে না সে আপন মনে তার প্রিয় খেলনাগুলো দিয়ে খেলতে থাকে। রাজকন্যার বাবা-মা রাজকন্যাকে নিয়ে বেরিয়ে যাবার পর ডাক্তার সাহেবের চোখ দিয়ে নিজের অজান্তে দুফোঁটা অশ্রু ঝরে পড়ে এই ভেবে, এমন পরীর মতো মেয়েটিকে কেন সৃষ্টিকর্তা কেন বাকশক্তি থেকে বঞ্চিত করলেন?

- Advertisement -

রাজকন্যার বাবা-মা ঢাকার পথে রওয়ানা হন। ঢাকা শহরে তাদের আত্মীয়- স্বজনের অভাব নেই। রাজকন্যার মায়ের মা বাবা সবাই তো ঢাকাতে থাকে। তারাও তো চিন্তিত রাজকন্যাকে নিয়ে। রাজকন্যাকে নিয়ে যাওয়া হয় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার নানারকম পরীক্ষা করতে দেন। পরীক্ষার ফলাফল এলো। ডাক্তার জানালেন ফলাফল যেটা এলো সেটা হলো, রাজকন্যার জন্ম থেকেই শ্রবণ এবং কথা বলার শক্তি খুবই দুর্বল। একটা শব্দ বহুবার বলতে বলতে হয়তো সেটা হালকাভাবে শুনতে পাবে এবং সেটা বলার চেষ্টা করবে কিন্তু সেটা অন্য বাচ্চাদের মতো হবে না। স্বাভাবিকভাবে সে কখনো কথা বলতে পারবে না। তারপরও বলবো সবকিছুই উপরওয়ালার ইচ্ছা। তিনি চাইলে সবকিছুই করতে পারেন। আমাদের একজন ভালো একজন স্পিচ থেরাপিস্ট আছে। আপনারা কিছুদিন থেকে তার কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে যান। তাছাড়া উনি আপনাদের শিখিয়ে দেবেন বাড়িতে কী করে স্পিচ থেরাপি করতে হবে। রাজকন্যার বাবা-মা চোখ মুছতে মুছতে ঘরে ফেরে। কিছুদিন ঢাকা থেকে নিজেরা এবং রাজকন্যাকে কিছুটা প্রশিক্ষণ নিয়ে আসে। ডাক্তার সাহেব আরো বলে দিয়েছিলেন, এখন এসব বাচ্চাদের জন্য অনেক ভালো ভালো স্কুল খোলা হয়েছে। আরেকটু বড় হলে যেন রাজকন্যাকে সে সব একটা স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়া হয় সেখানে এসব বাচ্চারা নানা বিষয়ে শিক্ষা লাভ করে।

রাজকন্যাকে নিয়ে কতো স্বপ্ন দেখেছে তার বাবা-মা। রাজকন্যাকে গান শেখাবে, নাচ শেখাবে। অনেক দূর পড়াশুনা শেখাবে। মায়ের ইচ্ছা ছিল মেয়ে বড় হয়ে ডাক্তার হবে। বাবা বলতেন রাজকন্যা যা হতে চায় তাই হবে আমরা কিন্তু কোনো চাপ দেবো না ওকে। রাজকন্যার বাবা-মায়ের সব স্বপ্ন নিমিষে ধুলিস্যাৎ হয়ে গেলো। মেয়ের ভবিষ্যৎ কী হবে চিন্তা করে রাজকন্যার বাবা-মা আড়ালে কেঁদে বুক ভাসায়। সৃষ্টিকর্তার কাছে অভিযোগ করে, কী দরকার ছিল আমার মেয়েকে এত সুন্দরী বানাবার অথচ তার কথা বলার শক্তিটা তুমি দিলে না। এই শিশু মেয়েটির কী অপরাধ যে কি-না জীবনে কথা বলতে পারবে না? এ তোমার কেমন বিচার আল্লাহ্!

ডাক্তারের পরামর্শ মতো রাজকন্যার মা তাকে নানাভাবে শিক্ষা দিতে থাকে। বড় বড় ছবির বই কিনে রাজকন্যাকে পাখির মতো ডানা মেলে বলে-এটা পাখি, আকাশ দেখিয়ে বলে-পাখি আকাশে কীভাবে উড়ে। মাছের ছবি দেখিয়ে দেখায়-মাছ কী করে পানিতে সাঁতার কাটে, বারবার কানের সামনে মুখ নিয়ে বলে-রাজকন্যা বলো মা। তিন বছর পেরিয়ে চার বছর হতে চললো। এর মাঝে কয়েকবার রাজকন্যাকে ঢাকা নিয়ে ডাক্তার দেখানো হয়েছে। স্পিচ থেরাপিষ্টের সাথে থেকে নতুন নতুন পদ্ধতি শিখে নিচ্ছে। রাজকন্যা এখন অদ্ভুত শব্দ করে বলতে পারে বাবা, মা, দাদি। পাঁচ বছর হলেই রাজকন্যাকে ভর্তি করানো হবে নানারকম প্রতবিন্ধী বাচ্চাদের স্কুলে। অন্তত রাজকন্যা কিছু বন্ধু পাবে। তাদের সাথে খেলবে। স্কুলটি তাদের বাড়ি থেকে বেশি দূর না। কতবার ওরা স্কুলের সামনে দিয়ে আসা যাওয়া করেছে। তখন কি তাদের কল্পনাতেও এসেছিল তাদের সন্তানকে এই স্কুলে ভর্তি করাতে হবে?

রাজকন্যার দাদির সকাল বিকেল একই কথা, ‘একটাই মেয়ে তাও আবার কথা বলতে পারে না।’ মেয়েটারও একটা খেলার সাথী দরকার। তোমরা কি চিরদিন বেঁচে থাকবে? তখন তো রাজকন্যাকে দেখার কেউ থাকবে না এই দুনিয়াতে। শাশুড়ির কথার সত্যতা উপলব্দি করে রাজকন্যার মা। কিন্তু ভয় অন্য সন্তানটিও যদি একই সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে? তারপরও রাজকন্যার ভবিষ্যৎ চিন্তা করে আরেকটি সন্তান নেবার সিদ্বান্ত নেয় ওর বাবা-মা।
রাজকন্যার পাঁচ বছর হয়ে গেছে, ওকে স্কুলে ভর্তি করানো হয়েছে। কয়েকদিন স্কুলে গিয়ে কান্নাকাটি করলেও কিছুদিনের মধ্যেই রাজকন্যা স্কুলের আনন্দ পেতে থাকে। কিছু বন্ধু হয়, যাদের সাথে ওরা তাদের মতো করে খেলে কথা বলে। বাবা বাড়ি ফিরলে বাবাকে বসিয়ে হাত নেড়ে নানারকম শব্দ করে কি করলো কি শিখলো বাবাকে বলে। মেয়েকে খুশি দেখে বাবা-মা কিছুতা স্বস্তি পায়। আরেকটি ছেলে শিশুর জন্ম নেয় পরিবারে। ভাইকে নিয়ে রাজকন্যার খুশির শেষ নেই। ভাইকে আদর করে, ডাকে ভাই-ভাই। স্কুল থেকে ফিরে রাজকন্যার প্রথম কাজ ভাইকে নিয়ে খেলা। বাবা-মা ছেলের কোনো গালভরা নাম রাখলো না। খোকা বলেই ডাকে শিশুটিকে। বাবা-মায়ের মনে আতঙ্ক কি জানি কি হয়। না খোকার তেমন কিছু হলো না। স্বাভাবিক সময়ে স্বাভাবিকভাবেই খোকা কথা বলতে শুরু করে। বাবা-মা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।

সময় দ্রুত পেরিয়ে যায়। রাজকন্যা তরুণ বয়েসে পা রাখে। তার স্কুল পর্ব শেষ। স্কুল থেকে অনেক কিছু শিখেছে রাজকন্যা, সাথে সাথে ঘরে মায়ের কাছ থেকে। একমাত্র কথা বলা ছাড়া রাজকন্যা সবকিছুই করতে পারে। তাছাড়া অনেকগুলো শব্দই বলতে পারে সে। অপরূপ সুন্দরী একটি মেয়ে হয়ে উঠে রাজকন্যা। এক নজরে মুগ্ধ হওয়ার মতো একটি মেয়ে। তরুণ বয়েসের আবেগ আনুভুতি ভালোবাসা প্রেম সবকিছুই জন্ম নেয় রাজকন্যার ভেতর। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে, কপালে টিপ পরে, লিপস্টিক লাগায়, হাতে চুড়ি পড়ে, দীর্ঘ কালো চুলে বেণী বাঁধে, চুলে ফুল গুজে নিজেকে দেখে নিজেই মুগ্ধ হয় রাজকন্যা। স্বপ্ন দেখে কোনো এক রাজপুত্রের, যে কি-না তাকে এসে হাত ধরে নিয়ে যাবে। বৃষ্টি নামলে খুশিতে রাজকন্যা ছুটে যায় বৃষ্টিতে ভিজতে, বসন্তের হাওয়া দেখে উদাস হয়ে উঠে, আকাশে পূর্ণ চাঁদ দেখে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে। মাকে নিয়ে শাড়ির দোকানে যায় শাড়ি কিনতে। বড্ড বুদ্ধিমতি মেয়ে রাজকন্যা বাকহীন বলে বাইরের লোকদের সামনে মুখ খুলে না, যা বলার হাতের ইশারাতে বলে। রাজকন্যা বুঝতে পারে সে কথা বলার জন্য যে শব্দ করবে এতে বাবা-মা বিব্রত বোধ করবে হয়তো। বুকের ভেতর তোলপাড় ঘটে যায় কিন্তু প্রকাশের কোনো বাক শক্তি নেই। তার অনুভূতিগুলো হৃদয়ের গহীনে জমতে থাকে। বৃদ্ধা দাদির সেবা করতে করতে দাদিকে হাতের নানারকম ভঙি করে বোঝায় ওর বিয়ে করতে ইচ্ছা করে, মাথায় টিকলি পরবে লাল শাড়ি দিয়ে ঘোমটা দেবে, বর আসবে পাগড়ি পড়ে, বিয়ে করে ফুল দিয়ে সাজানো গাড়িতে করে ওকে নিয়ে যাবে। মামাতো, ফুপাতো বোনদের বিয়েতে গিয়ে সবকিছু দেখে রাজকন্যার আবেগ আরো বেড়ে যেতে থাকে। মা বাবার চিন্তার শেষ নেই কে করবে বিয়ে তাদের বোবা মেয়েকে? এই অপরূপ সুন্দর মেয়েটির যেভাবে বিয়ের সখ, প্রেম ভালোবাসার অনুভূতি জেগে উঠেছে-কখন কী অঘটন ঘটে যায় কে জানে? রাজকন্যাকে চোখের আড়াল করে না তার মা।

রাজকন্যার জন্য বিয়ের প্রস্তাব আসে কিছু, কিন্তু ভালোবেসে কেউ আসে না। আসে করুণা করতে এবং সে করুণার বিনিময়ে প্রচুর চাহিদা। বাবা-মা বুঝতে পারে তারা চায় অর্থ সম্পদ, বোবা মেয়ে তাদের আগ্রাধিকার না। তার চাইতে তাদের মেয়ে তাদের কাছেই থাকুক। আদর আহালাদে বড় হওয়া মেয়েটিকে তারা কোনো পানিতে ভাসিয়ে দেবে? রাজকন্যার একমাত্র বন্ধু ছোট ভাই খোকা। খোকার সাথে হাত নেড়ে গল্প করে, হাসে। খোকার সাথে বসে টেলিভিশন দেখে। খোকা হাসলে রাজকন্যাও হাসে। সময় এগিয়ে চলে দ্রæত। খোকা বড় হয়ে ঢাকা চলে গেছে পড়তে। রাজকন্যার আর কোনো বন্ধু রইলো না। বৃদ্ধা দাদি সারাদিন বিছানাতে শুয়ে থাকে আর দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলেন, ‘আহা রে এমন সুন্দর গুণি মেয়েটাকে কথা বলতে পারে না বলে কেউ বিয়ে করলো না। আল্লাহ্ কী জীবন তুমি লিখে রাখলা মেয়েটার?’ রাজকন্যা বুঝতে পাড়ে দাদির কষ্ট। কথা বলতে না পারলেও রাজকন্যা তার অনুভূতি দিয়ে সবকিছুই বুঝে নেয়।

রাজকন্যা হতাশাতে ভুগতে থাকে। ও বুঝে গেছে কোনো রাজপুত্র আসবে না তাকে ঘরে তুলে নিতে। রাজকন্যা এখন আর কপালে টিপ পরে হাতে চুড়ি পরে চুলে ফুল গুজে আয়না দেখে না। বৃষ্টি ঝরা দেখে ছুটে যায় না। বসন্তের হওয়াতে খোলা চুলে বাগানে হাঁটে না। জোৎস্নার আলো দেখে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে না। বুক ভরা কষ্ট নিয়ে রাজকন্যা রাতে শুয়ে কাঁদে। সারাদিন মায়ের সাথে সংসারের কাজ করে। ভর দুপুরে সবাই যখন বিশ্রাম নেয়, রাজকন্যা তখন একরাশ ব্যথা নিয়ে উদাসভাবে জানালার গ্রিল ধরে তাকিয়ে থাকে। ও বুঝতে পারে না ওর জীবনটা কোথায় গিয়ে শেষ হবে।

ম্যাল্টন, অন্টারিও, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles