4.8 C
Toronto
বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪

স্ট্রোকের লক্ষণে তাৎক্ষণিক করণীয়

স্ট্রোকের লক্ষণে তাৎক্ষণিক করণীয় - the Bengali Times
ছবি সংগৃহীত

অনেকেই স্ট্রোকের সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের বিষয়টি গুলিয়ে ফেলে। চিকিৎসাশাস্ত্রে এই দুটি বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা। সঠিক সময়ে এই সমস্যা চিহ্নিত করতে না পারলে অসময়েই রোগীর জীবনপ্রদীপ নিভে যেতে পারে।

স্ট্রোক মূলত মানুষের মস্তিষ্কে আঘাত হানে। ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে মস্তিষ্কের কোষগুলো মরে গেলে তাকে বলা হচ্ছে স্ট্রোক। কোনো কারণে মস্তিষ্কের কোষে যদি রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়, রক্তনালি বন্ধ হয়ে যায় বা ছিঁড়ে যায় তখনই স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকির সৃষ্টি হয়। হার্ট বা বুকের সঙ্গে এই রোগের কোনো সম্পর্ক নেই।

- Advertisement -

স্ট্রোক তিন ধরনের হয়ে থাকে। মাইল্ড স্ট্রোক, ইসকেমিক স্ট্রোক ও হেমোরেজিক স্ট্রোক। মাইল্ড স্ট্রোকে রোগীর মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ সাময়িক বন্ধ হয়ে আবারও চালু হয়। এটি মূলত বড় ধরনের স্ট্রোকের পূর্বলক্ষণ। ইসকেমিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কের ও শরীরের অন্যান্য স্থানের রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধে। আর হেমোরেজিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কের রক্তনালি ছিঁড়ে রক্তপাত হয়।

স্ট্রোক মস্তিষ্কে কতটা ক্ষতি করে তা নির্ভর করে এটি মস্তিষ্কের কোথায় ঘটেছে এবং কতটা জায়গাজুড়ে হয়েছে তার ওপর। তাই সঠিক সময়ে স্ট্রোকের লক্ষণগুলো চিনে নিতে ব্যর্থ হলে দায় চিকিৎসকের নয়, বরং আপনার।

পরিবারের কোনো সদস্য বা আশপাশের কারোর মধ্যে শরীরে স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিতে পারে যে কোনো সময়েই। তাই আগে থেকে এই কঠিন পরিস্থিতি সামলানোর জন্য তৈরি হতে হবে আপনাকে।

সঠিক সময়ে রোগীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে আপনার জানতে হবে স্ট্রোকের কিছু সাধারণ লক্ষণ সম্পর্কে। যদি কোনো ব্যক্তি শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে না পারে, মুখ বা চোখ বাঁকা হযে যায়, কথা আটকে বা জড়িয়ে যায়, হাত নাড়তে সমস্যা হয়, বমি হওয়া, শরীর অবশ বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দেরি না করে রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

সাধারণত যাদের হাইপ্রেসার, ডায়াবেটিস, পূর্বে স্ট্রোকের ইতিহাস, হাই কোলেস্টেরল, মদ বা ধূমপান করার অভ্যাস রয়েছে তারা এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।

এই ধরনের রোগীকে বেশি নড়াচড়া না করে কাত হয়ে একপাশে শুইয়ে দিন। রোগীকে বাতাস করতে হবে, অথবা আলো বাতাস চলাচল করে এমন স্থানে রাখতে হবে। রোগীর আশপাশে ভিড় করে কান্নাকাটি করা যাবে না। এ সময় যতটা সম্ভব ভরসা দিতে হবে।

রোগী জ্ঞান হারালে তার মুখ খুলে দেখতে হবে কিছু আটকে আছে কি না। ভেজা কাপড় দিয়ে মুখে জমে থাকা লালা, খাবারের অংশ বা বমি পরিষ্কার করে দিতে হবে। এ সময় রোগীকে পানি, খাবার বা কোনো ওষুধ খাওয়ানো যাবে না। কারণ একেক ধরনের স্ট্রোকের ওষুধ একেক রকম।

স্ট্রোকের রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া প্রসঙ্গে আপনার জেনে রাখা ভালো, বর্তমানে নেট দুনিয়ায় স্ট্রোকের ক্ষেত্রে হাতে, কানে, লতিতে বা হাতের আঙ্গুলে সুচ ফুটিয়ে রক্ত বের করার যে ভাইরাল উপায় রয়েছে সেটার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তাই রোগীর ওপর এ ধরনের ভ্রান্ত প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকুন।

সূত্র: বিবিসি নিউজ, এই সময়

 

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles